১৮ বছরের অপেক্ষার পর গত ৩ জুন অবশেষে আইপিএল জিতেছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। আহমেদাবাদে রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে পাঞ্জাব কিংস-কে হারিয়ে খেতাব জেতে তারা। সাফল্য সমর্থকদের সাথে ভাগ করে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্মকর্তারা। খেতাব জয়ের পরের দিন অর্থাৎ ৪ বেঙ্গালুরুতে ক্রিকেটারদের উপস্থিতিতেই ট্রফি উদ্যাপন করা হবে, জানানো হয় সোশ্যাল মিডিয়া মারফত। ঠিক হয় বিধান সৌধ অঞ্চল থেকে একটি শোভাযাত্রা আসবে চিন্নাস্বামী স্টেডিয়াম অবধি। তারপর সেখানে হবে ট্রফি সেলিব্রেশন। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব মেটে নির্বিঘ্নেই। কিন্তু তারপরেই দেখা দেয় বিশৃঙ্খলা। ৩৫০০০ আসনবিশিষ্ট চিন্নাস্বামীতে প্রবেশের চেষ্টা করতে থাকেন কয়েক লক্ষ ক্রিকেট অনুরাগী। ভিড় সামলাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। পরিস্থিতি জটিলতর হয় তাতে। পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ১১ জন। আহত’ও হন অনেকে।
Read More: “ও নিশ্চয়ই উন্নতি করবে…” শুভমানের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন সৌরভ গাঙ্গুলি, হতাশ লর্ডসের হারে !!
RCB-র ঘাড়ে দায় চাপালো সরকার-

ঐ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কাবন পার্ক থানায় অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট সংস্থা ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ফ্র্যাঞ্চাইজির (RCB) বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিলো। সরিয়ে দেওয়া হয়েছিলো একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিককে। ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে নিহতদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও আহতদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার নির্দেশ দেয় কর্ণাটক সরকার। এছাড়া ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করে আরসিবি ফ্র্যাঞ্চাইজি ও কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন’ও (KSCA)। সরকারী নির্দেশে তদন্তে নামে কাবন পার্ক থানা ও সেন্ট্রাল ক্রাইম ব্রাঞ্চ (সিসিবি)’র যৌথ বাহিনী। ৬ তারিখ ভোরবেলা বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার হন আরসিবি’র মার্কেটিং সোসালে। এছাড়া ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্টের তিন কর্মীকেও নেওয়া হয় হেফাজতে। পুলিশের রেডারে ছিলেন ফ্র্যাঞ্চাইজির কর্তা রাজেশ মেনন, কিরণ কুমাররাও।
পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছিলো কর্ণাটক হাইকোর্ট। তার একটি স্টেটাস রিপোর্ট বৃহস্পতিবার দাখিল করেছে কর্ণাটক সরকার। সেখানে ফ্র্যাঞ্চাইজির (RCB) দিকেই আঙুল তুলেছে তারা। “আরসিবি ম্যানেজমেন্ট তাদের ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট সহযোগী ডিএনএ এন্টারটেইনমেন্ট ও কর্ণাটক স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের সাথে একতরফা ভাবে জয়োৎসবের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো। পুলিশের সাথে তারা কোনো রকম আলোচনা করে নি। এমনকি প্রয়োজনীয় কোনো অনুমতিও নেয় নি,” দাবী করা হয়েছে ঐ স্টেটাস রিপ্ররটে। কর্ণাটক সরকারের তরফে ঐ রিপোর্টটি গোপন রাখার আবেদন জানানো হয়েছিলো। কিন্তু খারিজ হয়েছে সেই আবেদন। “(রিপোর্ট) গোপন রাখার কোনো প্রয়োজন নেই কারণ সরকার যে সত্য উপলব্ধি করেছে তাই এখানে রয়েছে,” জানিয়েছে আদালত।
জড়ালো কোহলির নাম’ও-

৪ঠা জুনের দুর্ঘটনার পরেই বিরাট কোহলির (Virat Kohli) নামেও একআইআর দায়ের করেছিলেন এক সমাজকর্মী। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেয় নি পুলিশ। তবে সরকারের দাখিল করা স্টেটাস রিপোর্টে কিন্তু রয়েছে তারকা ক্রিকেটারের নাম। “৪ঠা জুন সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে আরসিবি’র অফিসিয়ার হ্যান্ডেল @RCBtweets -এর তরফ থেকে এক্স (ট্যুইটার)-এ প্রতিথযশা ক্রিকেটার বিরাট কোহলির একটি ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করা হয়। সেখানে তিনি জানান যে গোটা দল বেঙ্গালুরুর জনসাধারণের সাথে বেঙ্গালুরু শহরেই ৪ তারিখ তাঁরা জয় উদ্যাপন করতে চান,” উল্লেখ রয়েছে রিপোর্টে। এছাড়া সেদিনের বিশৃঙ্খলার জন্যও আরসিবি’র (RCB) সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলিকেই কার্যত দায়ী করা হয়েছে। তাদের চারটি পোস্ট যথাক্রমে ১৬ লক্ষ, ৪.২৬ লক্ষ, ৭.৬ লক্ষ ও ১৭ লক্ষ মানুষ দেখেছিলেন, জানিয়েছে সরকার।
দেখুন সেই বিতর্কিতি ভিডিও’টি-
“I’m going to feel the real side of it when we get to Bengaluru tomorrow and celebrate this with the city” – Virat Kohli ❤️🙌
King Kohli walks into the dressing room with ABD, talks about Rajat’s leadership, Jitesh’s smartness, and the team coming together to achieve this… pic.twitter.com/aqLY7LHvvE
— Royal Challengers Bengaluru (@RCBTweets) June 4, 2025
Also Read: “ছুটি কাটাতে আসো নি…” বুমরাহ’কে তোপ গাওস্করের, শেষ দুই টেস্টে পেস তারকাকে চান প্রাক্তনী !!