আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের (KKR) মেন্টর হিসেবে নজর কেড়েছিলেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। মগজাস্ত্রের ব্যবহারে প্রতিপক্ষকে নাজেহাল করে ক্রিকেটজনতার কুর্নিশ আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। টি-২০ বিশ্বকাপের পর রাহুল দ্রাবিড় ভারতীয় দলের হেড কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ান। ‘দ্য ওয়াল’-এর উত্তরসূরি হিসেবে অনেকেই চেয়েছিলেন গম্ভীরকে। উদ্যোগ নেয় বিসিসিআই’ও। শেষমেশ ৯ জুলাই সরকারী ভাবে ঘোষিত হয় প্রাক্তন ওপেনারের নাম। আইপিএলে যেভাবে সুনীল নারাইন, আন্দ্রে রাসেলদের থেকে সেরাটা বের করে এনেছিলেন গম্ভীর (Gautam Gambhir), জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েও ঠিক তেমন ভাবেই রোহিত-কোহলিদের ফর্মের শিখরে নিয়ে যাবেন তিনি, আশায় ছিলেন সমর্থকেরা। ভয়ডরহীন, আগ্রাসী ক্রিকেটের প্রত্যাশায় দিন গুণছিলেন অনেকেই। কিন্তু গত কয়েক মাসে বারবারই ধাক্কা খেয়েছে সেই স্বপ্ন।
Read More: IND vs NZ 2nd Test: পুণেতে দ্বিতীয় দিনেই বেকায়দায় ভারত, কেরিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন অশ্বিন !!
নড়বড়ে লেগেছে গম্ভীরের টিম ইন্ডিয়া’কে-
![চুপসে গিয়েছে প্রত্যাশার ফানুস, পিঠ বাঁচাতে কোচ গম্ভীরকে ছাঁটাই করবে বিসিসিআই !! 2 IND vs NZ | Gautam Gambhir | Image: Getty Images](https://bengali.sportzwiki.com/wp-content/uploads/2024/10/IND-vs-NZ-2.jpg)
কোচ হিসেবে শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথমবার টিম ইন্ডিয়ার দায়িত্ব সামলান গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। টি-২০তে শুরুটা ভালোই করেছিলেন। সূর্যকুমারের যাদবের (Suryakumar Yadav) নেতৃত্বাধীন তরুণ ভারতীয় শিবির পাল্লেকেলে স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের তিনটিতেই দাপুটে জয় ছিনিয়ে নেয় লঙ্কানদের বিপক্ষে। বিশেষ করে তৃতীয় ম্যাচটি যেভাবে প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচ প্রথমে টাই ও পরে সুপার ওভারে জিতে নেয় ‘মেন ইন ব্লু’, তার তারিফ করতে ভোলে নি ক্রিকেটমহল। সেদিন রিঙ্কু সিং (Rinku Singh) ও সূর্যকুমার যাদব’কে দিয়ে শেষ দুই ওভারে বোলিং করানোর সিদ্ধান্তকে মাস্টারস্ট্রোক বলে মনে করেছিলেন অধিকাংশ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ। টি-২০’র সাফল্যের রেশ অবশ্য ওডিআইতে বজায় রাখতে পারে নি ভারত। প্রথম ম্যাচটি টাই হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে শ্রীলঙ্কার স্পিন শক্তির সামনে নতজানু হায় টিম ইন্ডিয়া। হারে ০-২ ফলে।
২৭ বছরের ব্যবধানে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক ওডিআই সিরিজে হারের সম্মুখীন হতে হয়ে ভারতীয় দল’কে। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে গম্ভীরের (Gautam Gambhir) পরীক্ষানিরীক্ষা সমালোচিত হয়েছিলো। তবে এরপর সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-২০ সিরিজে টানা জয়ের পর তাঁকে ‘বেনিফিট অফ ডাউট’ দিচ্ছিলেন অনেকে। বিশেষ করে কানপুরে টাইগারদের বিরুদ্ধে যেভাবে বৃষ্টিবিঘ্নিত টেস্ট আড়াই দিনে জিতে নেয় রোহিত শর্মা’র (Rohit Sharma) দল, তাকে ক্রিকেটদুনিয়ায় এক নতুন ধারা হিসেবেই দেখছিলেন বোদ্ধারা। এরপর গম্ভীর নিজেও সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “আমরা এমন দল হতে চাই যারা প্রয়োজনে এক দিনে ৪০০ যেমন তুলতে পারে তেমন দরকার ম্যাচ ড্র করতে দুই দিন টানা ব্যাট’ও করতে পারে।” সেই আত্মপ্রত্যয়ের ফানুস অবশ্য চুপসে গিয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেই।
প্রশ্ন উঠছে গম্ভীরকে নিয়ে-
![চুপসে গিয়েছে প্রত্যাশার ফানুস, পিঠ বাঁচাতে কোচ গম্ভীরকে ছাঁটাই করবে বিসিসিআই !! 3 Gautam Gambhir and Rohit Sharma | Image: Getty Images](https://bengali.sportzwiki.com/wp-content/uploads/2024/08/gg-hit.jpg)
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে কোচ গম্ভীরের (Gautam Gambhir) গেমপ্ল্যান বারবার পড়েছে প্রশ্নের মুখে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে টসে জেতার পর বৃষ্টি ভেজা পরিবেশে কেন ব্যাটিং বেছে নেওয়া গেলো সেই রহস্যের সমাধান করে উঠতে পারেন নি কেউই। কিউই পেসারদের বিরুদ্ধে কেঁপে গিয়ে মাত্র ৪৬-এ অল-আউট হয়ে গিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া। ফলস্বরূপ হারতে হয় ৮ উইকেটে। ৩৬ বছর পর ভারতের মাঠে টেস্ট জেতে নিউজিল্যান্ড। পুণেতে দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচেও আপাতত বেশ চাপে তারকাখচিত ভারতীয় দল। ২৫৯-এ প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে পারলেও, নিজেরা অল-আউট হয়ে গিয়েছে ১৫৬ তে। প্রতিপক্ষ স্পিনারদের বিরুদ্ধে ভারতের হোমওয়ার্কে বিস্তর গলদ চোখে পরেছে। বিশেষত ঋষভ পন্থ, বিরাট কোহলিরা (Virat Kohli) যে শট খেলতে গিয়ে আউট হয়েছেন তা চোখ কপালে তুলে দিয়েছে ক্রিকেটজনতার।
পুণেতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হারলে বড়সড় লজ্জার সম্মুখীন হতে হবে ভারতকে। ২০১২-র ইংল্যান্ড সিরিজের পর ঘরের মাঠে একটিও টেস্ট সিরিজ হারে নি দল। ১২ বছর পর ‘মেন ইন ব্লু’র সেই গর্বের মিনার ধূলিসাৎ হতে পারে পুণের মাঠে। সেক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে চাপ বাড়বে কোচ গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) উপর। ২০২৭ সালের ডিসেম্বর অবধি চুক্তি হয়েছে তাঁর সাথে। নিউজিল্যান্ড সিরিজ হারলে চুক্তির মেয়াদ ফুরানোর আগেই তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। ২০২৭-এর মধ্যে পড়ছে আসন্ন বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি, আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, টি-২০ বিশ্বকাপ, ওডিআই বিশ্বকাপের মত ইভেন্ট। সেখানে আন্তর্জাতিক আঙিনায় পরীক্ষিত কোনো কোচকে ভারতীয় দলের হটসিটে বসানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিসিসিআই।