গত বছরের ৯ জুলাই ভারতীয় দলের (Team India) কোচ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তরুণদের নিয়মিত সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই সাদা বলের ফর্ম্যাটে জাতীয় দলে নিয়মিত হয়ে উঠেছেন সঞ্জু স্যামসন, তিলক বর্মা, হর্ষিত রাণা’রা (Harshit Rana)। রিঙ্কু সিং, আর্শদীপ সিং-দের উপরেই আস্থা রেখেছন তিনি। লাল বলের ফর্ম্যাটে এখনও কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পায় নি গম্ভীরের প্রশিক্ষণাধীন ভারতীয় দল। কিন্তু তা সত্ত্বেও নতুনদের জায়গা দেওয়ার প্রশ্নে কোনো রকম আপস করেন নি তিনি। নীতিশ কুমার রেড্ডি, হর্ষিত রাণা, সাই সুদর্শন, অংশুল কম্বোজদের টেস্ট অভিষেক হয়েছে তাঁর সময়ে। করুণ নায়ারকে দ্বিতীয় সুযোগও দিয়েছেন তিনি। অলরাউন্ডার ওয়াশিংটন সুন্দরকেও (Washington Sundar) গড়ে তুলেছিলেন ম্যাচ উইনার হিসেবে।
Read More: “তুমি ইঞ্জেকশন নিয়েছ?” ‘আহত’ আকাশ দীপ’কে প্রশ্ন শুভমানের, দলের স্বার্থে শরীর বাজি রাখলেন বাংলার পেসার !!
গম্ভীরের সৌজন্যে নিয়মিত সুন্দর-

২০২১ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিলো ওয়াশিংটন সুন্দরের (Washington Sundar)। প্রথম সুযোগেই বাজিমাত করেছিলেন তিনি। গাব্বার ঐতিহাসিক জয়ে ঋষভ পন্থের পাশাপাশি বড় অবদান ছিলো তাঁরও। ঐ বছর ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আরও তিনটি টেস্টে সুযোগ পান তিনি। পারফর্ম্যান্সে কোনো রকম খামতি ছিলো না তাঁর। চেন্নাইতে তাঁর ব্যাট থেকে আসে অপরাজিত ৮৫। এছাড়া আহমেদাবাদে ৯৬ করে অপরাজিত থাকেন তিনি। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাদ পড়তে হয় তাঁকে। অধিনায়ক থাকাকালীন বিরাট কোহলি বা রোহিত শর্মা বিশেষ গুরুত্বই দেন নি তাঁকে। টানা তিন বছর কোনো সুযোগই পান নি লাল বলের ক্রিকেটে। পরিস্থিতি বদলায় গম্ভীর কোচের দায়িত্ব নেওয়ার পর। নিউজিল্যান্ড সিরিজের মাঝপথে ওয়াশিংটনকে স্কোয়াডে (Team India) যুক্ত করেন তিনি। হাতেনাতে মেলে ফলাফলও। পুনেতে ১১ উইকেট নেন তরুণ অলরাউন্ডার।
গম্ভীরের হাত ধরেই স্বপ্নের উড়ান অব্যাহত ওয়াশিংটনের (Washington Sundar)। অস্ট্রেলিয়াতে পার্থ, মেলবোর্ন ও সিডনিতে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। পেস সহায়ক পিচে বল হাতে বিশেষ দাগ কাটতে না পারলেও নজর কাড়েন ব্যাট হাতে। কোহলি-রোহিতের মত প্রথম সারির ব্যাটাররা যখন রান খরাতে ভুগছিলেন, তখন মেলবোর্নে চমৎকার অর্ধশতক করেন তিনি। ইংল্যান্ডেও ওয়াশিংটনের উপর ভরসা রেখেছেন গম্ভীর। প্রতিদানও দিয়েছেন বছর ২৫-এর তরুণ। বার্মিংহ্যামে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ৪২। ম্যাঞ্চেস্টারে ধুঁকতে থাকা ভারতকে উদ্ধার করে তাঁর অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংস। ম্যাচ ড্র রাখতে সক্ষম হয় ‘মেন ইন ব্লু।’ ওভালেও ৪৬ বলে তাঁর ধুন্ধুমার ৫৩ লড়াতে টিকিয়ে রেখেছে ভারতকে (Team India) । লর্ডসে ৪ উইকেটও নিয়েছেন তিনি। ধীরে ধীরে ওয়াশিংটন যে গম্ভীরের দলের অপরিহার্য্য অঙ্গ হয়ে উঠছেন তা পরিষ্কার।
সূক্ষ্ম সুতোয় ঝুলছে ওভাল টেস্টের ভবিষ্যত-

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে আপাতত ১-২ ফলে পিছিয়ে রয়েছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। সমতা ফেরানোর জন্য ওভালে শেষ ম্যাচটিতে জিততেই হবে তাদের। চতুর্থ ইনিংসে যশস্বী জয়সওয়ালের শতরান ও আকাশ দীপ, রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দরের অর্ধশতকের সৌজন্যে ৩৭৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা জো রুটদের জন্য রাখতে পেরেছে ভারত। চতুর্থ দিনে একটা সময় মনে হয়েছিলো যে সহজেই ম্যাচ জিতে যাবে ইংল্যান্ড। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে তিন উইকেট তুলে নিয়ে দলকে লড়াইতে ফেরান আকাশ দীপ, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণারা। বৃষ্টিতে যখন খেলা বন্ধ হয় তখন ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ৩৩৯ রান। পঞ্চম দিনের সকালে ৩৫ রানের প্রয়োজন তাদের। ভারতের (Team India) জয়ের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না বিশেষজ্ঞমহল। সকালের সেশনে ৪ উইকেট তুলতে পারলেন মিলবে সাফল্য।