কোচ হিসেবে গম্ভীর (Gautam Gambhir) দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বেশ কিছু রদবদল চোখে পড়েছে টিম ইন্ডিয়াতে। স্বেচ্ছায় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে দল। পরীক্ষানিরীক্ষা চলেছে ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে। একইসাথে গেমপ্ল্যানে অলরাউন্ডারদের ভূমিকা বেড়েছে অনেকটাই। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সূর্যকুমার (Suryakumar Yadav), রিঙ্কু সিং-দের মত খেলোয়াড়কেও দেখা গিয়েছে ব্যাটিং-এর পাশাপাশি হাতও ঘোরাতে। একইসাথে দলের গঠনতন্ত্রেও বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন ‘গুরু’ গম্ভীর। তারকা ইমেজের মোহের পিছনে না ছুটে তিনি চেয়েছেন দলীয় সংহতি গড়ে তুলতে। সেই কারণেই গুরুত্ব কমেছে হার্দিক পান্ডিয়ার (Hardik Pandya)। গম্ভীর যতদিন কোচ থাকবেন, ততদিন হার্দিকের ভাগ্যে যে কোনো রকম ‘স্পেশ্যাল ট্রিটমেন্ট’ জুটবে না তা বোঝা গিয়েছে তাঁর কোচিং কেরিয়ারের শুরুর দিকেই।
২০২২ থেকে হার্দিককে (Hardik Pandya) সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে গড়ে তোলার কথা ভেবেছিলো বিসিসিআই। সাদা বলের দুই ফর্ম্যাট থেকেই কে এল রাহুলকে সরিয়ে হার্দিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিলো সহ-অধিনায়কত্ব। রোহিত শর্মা’র অবর্তমানে প্রথমে টি-২০ ও পরে ওয়ান ডে’তেও নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। টি-২০ বিশ্বকাপেও তিনিই ছিলেন হিটম্যানের ডেপুটি। খেতাব জয়ের পর রোহিত যখন সরে দাঁড়ান কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাট থেকে তখন অধিকাংশ ক্রিকেটবোদ্ধাই ভেবেছিলেন যে পূর্ণ সময়ের দায়িত্ব পাচ্ছেন হার্দিকই। কিন্তু সকলকে চমকে দিয়ে সূর্যকুমার যাদবকে বেছে নেওয়া হয় অধিনায়ক হিসেবে। যুক্তি হিসেবে হার্দিকের চোটপ্রবণতার কথা বলা হলে আদতে যে গম্ভীরের (Gautam Gambhir) ব্যক্তিগত পছন্দই এখানে অনুঘটকের কাজ করেছে সে বিষয়ে একমত সকলে।
Read More: বৃষ্টির কারণে ভেস্তে গেল ভারত-বাংলাদেশের দ্বিতীয় টেস্ট, WTC ফাইনালে পৌঁছানো হয়ে উঠলো কঠিন !!
রিঙ্কু সিং-কে পরবর্তী অধিনায়ক করা হতে পারে-
শ্রীলঙ্কা সফরের আগে সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav) নাম ঘোষণা করা হয়েছিলো পূর্ণ সময়ের অধিনায়ক হিসেবে। হতাশ হয়েছিলেন হার্দিক অনুরাগীরা। নেতৃত্বস্থানীয় কোনো ভূমিকাতেই যে তারকা অলরাউন্ডারকে ভাবা হচ্ছে তার আভাস প্রথম মিলেছিলো তাঁর সহ-অধিনায়ক পদ’ও হাতছাড়া হওয়ায়। শুভমান গিল’কে নতুন সহ-অধিনায়ক ঘোষণা করা হয়েছিলো। অনেকেই ভেবেছিলেন যে পেকিং অর্ডারে এক নম্বর থেকে সরে গেলেও হয়ত পুরোপুরি ছিটকে যান নি হার্দিক। বড়জোর মেনে গিয়েছেন এক ধাপ। কিন্তু তা যে সত্যি নয়, তা বোঝা গেলো গতকাল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিন টি-২০’র সিরিজের জন্য ভারতীয় স্কোয়াড ঘোষণা হতেই। প্রত্যাশামতই নেতৃত্বে রয়েছেন সূর্যকুমার। সহ-অধিনায়ক শুভমান রয়েছেন বিশ্রামে। তাঁর অনুপস্থিতিতেও সহ-অধিনায়ক পদ ফিরে পান নি হার্দিক (Hardik Pandya)। সাধারণ খেলোয়াড় হিসেবেই মাঠে নামতে হবে তাঁকে।
সূর্যকুমার যাদবের বর্তমান বয়স ৩২। হয়ত আরও ৫-৬ বছর তাঁকে দেখা যাবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আঙিনায়। তারপর কে বসবেন মসনদে? আপাতত সেই চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে সমর্থকদের মাথায়। যুতসই উত্তর খুঁজছেন তাঁরা। গম্ভীরের সাথে ভারতীয় দলের চুক্তি রয়েছে তিন বছরের। যদি সেই চুক্তি নবীকরণ না হয় তাহলে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর মাসেই সরে দাঁড়াতে হবে তাঁকে। তবে অনেকেই মনে করছেন সেই সময়কালের মধ্যে পরবর্তী টি-২০ অধিনায়ককে তৈরি করে রেখে যেতে চান তিনি। ভবিষ্যতের অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে শুভমান বা যশস্বীর সঙ্গেই রয়েছেন রিঙ্কু সিং (Rinku Singh)। উত্তরপ্রদেশের ক্রিকেটার ইতিমধ্যে মীরাট ম্যাভেরিকস’কে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইউ পি টি-২০ লীগে। গম্ভীরের (Gautam Gambhir) সাথে তাঁর সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর। কলকাতা নাইট রাইডার্সে একইসাথে কাজও করেছেন তাঁরা। সেই সম্পর্কের সুবাদেই নেতৃত্বের দাবীদারদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন বছর ২৬-এর ক্রিকেটার।