রাহুল দ্রাবিড়ের উত্তরসূরি হিসেবে ভারতীয় দলের কোচের দায়িত্ব নিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। ইনিংস শুরু করেছিলেন গত বছরের জুলাই মাসে। নাইট রাইডার্সের মেন্টর হিসেবে যে সাফল্য তিনি অর্জন করেছিলেন, তার পর স্বাভাবিক কারণেই গম্ভীরকে নিয়ে আকাশছোঁয়া প্রত্যাশা ছিলো ক্রিকেটজনতার। প্রথম কয়েকটা মাস সেই প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থই হয়েছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ২৭ বছর পর দ্বিপাক্ষিক ওয়ান ডে সিরিজ হেরেছিলো গম্ভীরের প্রশিক্ষণাধীন ‘মেন ইন ব্লু।’ টেস্টের আঙিনাতেও মুখ থুবড়ে পড়েছিলো তাঁর স্ট্র্যাটেজি। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশ হয়েছিলো ভারত। ব্যর্থতা সঙ্গী হয় অস্ট্রেলিয়া সফরেও। এরপর সমালোচনার ঝড় উঠেছিলো তাঁকে নিয়ে। উঠেছিলো সরিয়ে দেওয়ার দাবী। কটাক্ষ, কটূক্তির জবাবটা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দিয়েছেন ‘গুরু’ গম্ভীর (Gautam Gambhir)। মগজাস্ত্রের জোরে খেতাব জিতিয়েছেন দেশকে।
Read More: স্টেডিয়ামে প্রকাশ্যে বান্ধবীকে চুম্বন চাহালের, ভিডিও ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায় !!
ভারত-এ দলের সঙ্গী হচ্ছেন গম্ভীর-

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভারতীয় দলের পাশাপাশি নজর কেড়েছেন কোচ গম্ভীর’ও (Gautam Gambhir)। অক্ষর প্যাটেলকে ব্যাটিং অর্ডারের উপরের দিকে তুলে আনা, চার স্পিনার খেলানো বা কে এল রাহুলকে ছয় নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানোর মত যে ক’টি ছকভাঙা সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন, সোনা ফলিয়েছে প্রত্যেকটাই। এই সাফল্য তাই অনেক বেশী করে তৃপ্তি দিচ্ছে তাঁকে। দুবাইতে দেশের জার্সিতে খেতাব জয়ের পর ভারতীয় ক্রিকেটাররা প্রবেশ করবেন আইপিএলের বৃত্তে। মাসখানেকের অবসর পাচ্ছেন কোচ। এই সময়টাকে তিনি আগামীর পরিকল্পনা সাজানোর কাজে ব্যবহার করতে চান বলে খবর মিলেছে সূত্র মারফত। আগামী জুন থেকে শুরু হচ্ছে ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট সিরিজ। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির মত অসহায় আত্মসমর্পণের দৃশ্য যাতে ইংল্যান্ডের মাঠেও না দেখা যায় তা নিশ্চিত করতে এখন থেকেই উঠেপড়ে লেগেছেন গম্ভীর (Gautam Gambhir)।
কোহলি-রোহিত’রা ইংল্যান্ডে পা দেওয়ার অনেক আগেই সেখানে পৌঁছে যাওয়ার পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন গম্ভীর (Gautam Gambhir)। টাইমস অফ ইন্ডিয়া সূত্রে খবর যে ভারত-এ দলের সঙ্গে যেতে চান তিনি। টিম ইন্ডিয়ার যুব দলের কোনো নির্দিষ্ট কোচ নেই। বিদেশ সফরে সাধারণ তাঁদের সঙ্গে যান ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির প্রধান ভিভিএস লক্ষ্মণ। গম্ভীর (Gautam Gambhir) ভারত-এ দলের কোচ হিসেবে যাবেন নাকি পরিবেশ-পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেবল ‘দর্শক’ হিসেবে দলের সঙ্গী হবেন সে সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত কোনো রকম তথ্য মেলে নি বিসিসিআই সূত্রে। তবে ইংল্যান্ডের পিচ, আবহাওয়ার পাশাপাশি তরুণ তুর্কিদের দিকেও যে তাঁর নজর থাকবে তা নিশ্চিত। অস্ট্রেলিয়া সফরের পর থেকেই ২০২৭ বিশ্বকাপের জন্য রোডম্যাপ তৈরি শুরু করেছেন কোচ। ‘এ’ দলের সফরসঙ্গী হওয়া প্রতিভা তুলে আনার ক্ষেত্রেও কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছে ক্রিকেটমহল।
সৌরভের পন্থা নিচ্ছেন গম্ভীর-

বিদেশের পরিবেশ, পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেওয়ার জন্য গম্ভীরের (Gautam Gambhir) এই বিশেষ পরিকল্পনা ক্রিকেটমহলকে মনে করিয়ে দিচ্ছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা। ২০০৩-এর বর্ডার-গাকস্কর ট্রফির আগে তৎকালীন ভারত অধিনায়ক সৌরভ’ও অস্ট্রেলিয়া উড়ে গিয়েছিলেন প্রস্তুতি সারতে। অজি প্রাক্তনী গ্রেগ চ্যাপেলের সাথে ছয় দিন সময় কাটিয়েছিলেন তিনি। গতিশীল পিচের পেস ও বাউন্স সামলানোর জন্য পরিশ্রম করেছিলেন নেটে। ফলাফল’ও মিলেছিলো হাতেনাতে। টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্রিসবেনের গাব্বায় সৌরভের (Sourav Ganguly) ব্যাট থেকে এসেছিলো ১৪৪ রানের চোখধাঁধানো ইনিংস। সেই গোটা সিরিজেই স্টিভ ওয়ার অস্ট্রেলিয়ার চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছিলো ‘মেন ইন ব্লু,’ সৌরভের পাশাপাশি রান পেয়েছিলেন শচীন, দ্রাবিড়, লক্ষ্মণ, শেহবাগরা। বল হাতে নজর কাড়েন কুম্বলেও। গম্ভীরের পরিকল্পনাও সৌরভের মতই ফলপ্রসূ হয় কিনা সেদিকে নজর থাকবে সকলের।