গত জুনে ভারতকে টি-২০ বিশ্বকাপ জিতিয়ে সরে দাঁড়িয়েছিলেন রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে কোচের হটসিটে বসেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। আইপিএলে নাইট রাইডার্সের মেন্টর হিসেবে তাঁর নজরকাড়া পারফর্ম্যান্স বোর্ড কর্তাদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষস্থানে জায়গা করে দিয়েছিলো বাম হাতি প্রাক্তনীকে। ২০২৭-এর ডিসেম্বর অবধি দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি করা হয় তাঁর সাথে। দেখতে দেখতে কোচ হিসেবে প্রায় এক বছর কাটিয়ে ফেলেছেন গম্ভীর (Gautam Gambhir)। তাঁর হাত ধরে ওয়ান ডে ও টি-২০তে চমকপ্রদ পারফর্ম্যান্স করেছে ‘মেন ইন ব্লু।’ বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে। ঘরে তুলেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। কিন্তু টেস্টে বেশ ম্রিয়মান দেখিয়েছে গম্ভীরের গেমপ্ল্যান। একের পর এক ম্যাচ হেরে রীতিমত বিপর্যস্ত ভারতীয় দল।
Read More: ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টের আগেই ছিটকে গেলেন এই তারকা পেসার, চাপের মুখে ভারতীয় শিবির !!
টেস্ট ক্রিকেটে নড়বড়ে গম্ভীরের ভারত-
কোচ হিসেবে টেস্ট কেরিয়ারের শুরুটা জয় দিয়েই করেছিলেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। ঘরের মাঠে বাংলাদেশকে ০-২ ফলে হারিয়েছিলো ভারত। বিশেষ করে কানপুরে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে যেভাবে মাত্র আড়াই দিনের মধ্যে প্রতিপক্ষকে রীতিমত গুঁড়িয়ে দিয়েছিলেন ঋষভ পন্থ-জসপ্রীত বুমরাহ’রা, তা নিয়ে রীতিমত হইচই হয়েছিলো বিশেষজ্ঞমহলে। “প্রয়োজনে এক দিনে চারশ তোলার পথে হাঁটতে পারি আবার প্রয়োজনে দীর্ঘ সময় রক্ষণাত্মক ক্রিকেটও আমরা খেলতে পারি,” সেই সময় জানিয়েছিলেন কোচ গম্ভীর (Gautam Gambhir)। তবে তাঁর মুখের চওড়া হাসি অবশ্য দীর্ঘস্থায়ী হয় নি। অক্টোবর-নভেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হোমগ্রাউন্ডে পরপর তিনটি টেস্টে মুখ থুবড়ে পড়ে ‘মেন ইন ব্লু।’ ১২ বছর পর ঘরের মাঠে কোনো টেস্ট সিরিজ হাতছাড়া হয় ভারতের। ২৪ বছর পর হতে হয় হোয়াইটওয়াশ।
নিউজিল্যান্ড সিরিজের ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই অস্ট্রেলিয়াতে বড়সড় চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছিলো টিম ইন্ডিয়াকে। ফের একবার প্রকাশিত হয়ে পড়ে গম্ভীরের (Gautam Gambhir) গেমপ্ল্যানের দুর্বলতা। পার্থ-এ সিরিজের প্রথম টেস্টটি জিতলেও অ্যাডিলেড, মেলবোর্ন ও সিডনিতে লজ্জার হারের সম্মুখীন হয় ভারতীয় দল। এক দশক পর খোয়াতে হয় বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি। বাংলাদেশ সিরিজের পর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষস্থানে ছিলো ভারত। কিন্তু একটানা দুই সিরিজ হেরে ফাইনালের দৌড় থেকেই ছিটকে যায় তারা। এরপর কেটে গিয়েছে বেশ কয়েক মাস। টেস্টে গম্ভীরের (Gautam Gambhir) নড়বড়ে স্ট্র্যাটেজিতে বিশেষ উন্নতি যে হয় নি তা চোখে পড়লো হেডিংলেতে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজের প্রথম টেস্টেই ৫ উইকেটে হেরে পিছিয়ে পড়লো ভারত। এভাবে আর কত দিন? উঠছে প্রশ্ন।
গম্ভীরকে নিয়ে দ্বিধায় বিসিসিআই-
এখনও অবধি ১১টি টেস্ট ম্যাচে দায়িত্ব সামলেছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। এর মধ্যে সাতটিতে হেরেছে ভারত। জয় মাত্র ৩টি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্রিসবেনে ম্যাচটি ড্র হয়েছিলো বৃষ্টির কারণে। আবহাওয়া সাহায্যের হাত সেদিন না বাড়ালে হয়ত সেই ম্যাচটিও হারতেই হত ‘মেন ইন ব্লু’কে।’ এমতাবস্থায় লাল বলের ক্রিকেটে তাঁর ভবিষ্যত কি তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। অস্ট্রেলিয়া সিরিজে হারের পর দেশে ফিরে রীতিমত বোর্ডকে জবাবদিহি করতে হয়েছিলো গম্ভীরকে। আলোচনা শুরু হয়েছিলো টেস্ট দলের কোচের পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে ভিভিএস লক্ষ্মণকে দায়িত্ব দেওয়ার। কিন্তু মার্চে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয় সাময়িক স্বস্তি যুগিয়েছিলো গম্ভীরকে (Gautam Gambhir)। কুরসী রক্ষা করতে পেরেছিলেন তিনি। তবে হেডিংলের হারের পর ফের বাজতে শুরু করেছে অ্যালার্ম বেল। সূত্রের খবর আগামী বৈঠকে গম্ভীরের ‘রেড বল’ ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারেন বোর্ড কর্তারা।