চলতি বছরের ৯ জুলাই ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছিলো গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir)। সেই সময় রাহুল দ্রাবিড়ের উত্তরসূরি হিসেবে তাঁকে সাদরেই গ্রহণ করেছিলো ক্রিকেটজনতা। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর হিসেবে যে সাফল্য তিনি পেয়েছেন, জাতীয় দলের হয়েও তার পুনরাবৃত্তি ঘটাবেন গম্ভীর (Gautam Gambhir), আশায় ছিলেন সকলে। কিন্তু মাস পাঁচেক কাটতে না কাটতেই সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে ছবিটা। একের পর এক সিরিজে হতাশাজনক পারফর্ম্যান্স, দিশাহীন ক্রিকেট দেখে বীতশ্রদ্ধ সমর্থকেরা। আইপিএলের (IPL) মত স্বল্প সময়ের টি-২০ টুর্নামেন্টে কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে আন্তর্জাতিক আঙিনায় তিন ফর্ম্যাট আদৌ সামলানো সম্ভব কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই। সাম্প্রতিক কালে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হারের পর তাঁকে ‘অপয়া’ ট্যাগ’ও উপহার দিয়েছেন কেউ কেউ।
Read More: নেতৃত্বে জসপ্রীত বুমরাহ, ঠাঁই হলো না রোহিত-বিরাটের, সিডনি টেস্টের চার দিন আগেই প্রকাশ্যে একাদশ !!
আদৌ ‘অপয়া’ গম্ভীর? বিপক্ষেও থাকছে যুক্তি-
২০২৪-এর জুলাই থেকে ২০২৭-এর ডিসেম্বর অবধি গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) সাথে চুক্তি রয়েছে বিসিসিআই-এর। কিন্তু তাঁর অধীনে দল যেমন খেলছে, তাতে সম্পূর্ণ মেয়াদকাল তিনি সম্পূর্ণ করতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধায় ক্রিকেটমহল। ঘরের মাঠে কিউইদের বিরুদ্ধে হোয়াইটওয়াশ হয়ে পায়ের তলার জমি অনেকটাই খুইয়েছিলেন তিনি। অ্যাডিলেড ও মেলবোর্নে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জোড়া হার তাঁকে পৌঁছে দিয়েছে খাদের কিনারে। ‘অপয়া’ গম্ভীরকে (Gautam Gambhir) সরিয়ে নতুন কোচের হাতে দলের দায়িত্ব দিক বোর্ড, সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হয়েছেন অনেকেই। গতকালের পর থেকে ক্রমাগত তাঁদের নিশানায় টিম ইন্ডিয়ার প্রশিক্ষক। উলটো যুক্তিও অবশ্য তুলে ধরছেন অনেকে। কোচ মাঠে নেমে খেলেন না। খেলতে হয় ক্রিকেটারদের, বলছেন তাঁরা। অনেকে আবার দোষ চাপাচ্ছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা’র কাঁধেও।
গম্ভীরের (Gautam Gambhir) পাশাপাশি ক্ষোভ জমেছে রোহিতের (Rohit Sharma) বিরুদ্ধেও। সাম্প্রতিক ব্যর্থতায় কোচ নয় বরং ‘কমন ফ্যাক্টর’ অধিনায়কই, মনে করছেন ক্রিকেটমহলের একটা বড় অংশ। চমকপ্রদ তথ্য তুলে ধরেছেন তাঁরা। কোচ হিসেবে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজ জিতেছেন গম্ভীর। এমনকি অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও পার্থ টেস্টটিতে ভারত জিতেছিলো দাপটের সঙ্গেই। প্রত্যেক ক্ষেত্রেই দলে অনুপস্থিত ছিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। টি-২০ সিরিজ দুটিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সূর্যকুমার যাদব। পার্থ টেস্টে দায়িত্ব সামলেছিলেন জসপ্রীত বুমরাহ। আবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজ, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টে হোয়াইটওয়াশ অথবা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাডিলেড ও মেলবোর্নের হার-সব ক্ষেত্রেই অধিনায়ক হিসেবে টস করতে নেমেছেন হিটম্যান। দলের রোগ সারাতে কোচ নয়, আদতে অধিনায়ক’কে সরানো জরুরী, সওয়াল করেছেন সমালোচকরা।
রোহিতের অবসর সময়ের অপেক্ষা ?
চলতি বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে ৫টি ইনিংসে মাত্র ৩১ রান করেছেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। তাঁর ব্যাটিং গড় ৬.২০। ভারত-অস্ট্রেলিয়া টেস্ট দ্বৈরথে কোনো বিশেষজ্ঞ ব্যাটারের গড় এত নীচে নামে নি কখনও। এই হতশ্রী পারফর্ম্যান্সের পরেও কতদিন লাল বলের ফর্ম্যাটে কেরিয়ারকে দীর্ঘায়িত করবেন তিনি? উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর যে রোহিতকে (Rohit Sharma) লাল সতর্কতা জানিয়ে দিয়েছে খোদ বিসিসিআই’ই। তবে নির্বাচকদের অধিনায়ক অনুরোধ করেছেন যাতে আগামী বছরের টেস্ট বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনাল অবধি তাঁকে খেলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। তবে সিডনিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট ম্যাচটি না জিতলে লর্ডসের দৌড় থেকে এমনিতেই ছিটকে যাবে ভারত। সেক্ষেত্রে ব্যাগি গ্রিনের দেশেই টেস্ট ক্রিকেটের সাদা পোশাক খুলে রাখতে পারেন রোহিত।