গত ৯ জুলাই যখন ভারতীয় দলের কোচ হিসেবে গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) নাম ঘোষিত হয়েছিলো, তখন থেকেই আতসকাঁচের নীচে বিরাট কোহলির (Virat Kohli) সাথে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক। দু’জনেই দিল্লীর হয়ে ক্রিকেট শুরু করেছিলেন। পরে তিন ফর্ম্যাটেই প্রতিনিধিত্ব করেছেন টিম ইন্ডিয়ার। কিন্তু তাও বিগত বছরগুলিতে দুজনের ব্যবধান প্রায়শই প্রকাশ্যে এসেছে। গত বছরের আইপিএলেও কোহলি-গম্ভীর দ্বন্দ্ব জায়গা করে নিয়েছিলো সংবাদপত্রের পাতায়, নিউজ চ্যানেলের হেডলাইনে। লক্ষ্ণৌ দলের মেন্টর ছিলেন গম্ভীর। খেলা শেষে বেঙ্গালুরুর বিরাটের (Viart Kohli) সাথে তীব্র বচসায় জড়ান তিনি। মাঠ পেরিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ছড়িয়েছিলো সেই যুদ্ধ। নাম জড়িয়ে গিয়েছিলো আফগানিস্তানের পেসার নবীন উল হকেরও। তাঁর সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলিও ছিলো নেটিজেনদের রেডারে।
এর প্রায় এক দশক আগেও কোহলি-গম্ভীর (Gautam Gambhir) দ্বন্দ্ব স্পষ্ট হয়েছিলো আইপিএলে। তখন কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক ছিলেন গৌতি। কেকেআর-আরসিবি ম্যাচ উত্তপ্ত হয়েছিলো তাঁদের বাদানুবাদে। পূর্বের জটিলতা ভোলার চেষ্টা অবশ্য দুজনকেই করতে দেখা গিয়েছে। অন্তত ক্যামেরার সামনে তাঁদের দেখে এমনটাই মনে হওয়া স্বাভাবিক। এই বছরের আইপিএলে (IPL) আলাদা করে কথা বলেছেন দুজনে। গম্ভীরের নাম কোচ হিসেবে ঘোষণা করার আগে বিসিসিআই নাকি কথা বলেছিলো বিরাটের (Virat Kohli) কাছে। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে জাতীয় দলের স্বার্থে একসাথে কাজ করতে অসুবিধা নেই তাঁর। গম্ভীরের ডাকে ছুটিতে কাটছাঁট করে এসে খেলেছেন শ্রীলঙ্কা সিরিজ। যদিও সাফল্য পান নি। আপাতত ‘ফিল গুড’ পরিস্থিতি হলেও, সেই সমঝোতা কতদিন থাকবে তা নিয়ে সন্দিহান সকলে।
Read More: ৬, ৬, ৬, ৪, ৪, ৪…শুভমানের ব্যাটে ধুন্ধুমার ‘ডাবল সেঞ্চুরি’, ৪ ছক্কা ও ২৯টি বাউন্ডারিতে সাজালেন ইনিংস !!
ঘুরপথে কোহলিকে ‘শাস্তি’ দেবেন গম্ভীর?
রান, শতরান, ব্যাটিং সাফল্যের নিরিখে গম্ভীরের (Gautam Gambhir) চেয়ে অনেক উন্নত কোহলির পরিসংখ্যান। ওয়ান ডে’তে প্রায় ১৪০০০ রান রয়েছে বিরাটের (Virat Kohli)। টেস্টেও রান দশ হাজার ছুঁইছুঁই। টি-২০ থেকে অবসর নিয়েছেন ৪০০০-এর বেশী রান করে। শতরানের সংখ্যা আপাতত ৮০। পক্ষান্তরে তিন ফর্ম্যাট মিলিয়েও গম্ভীরের রান সংখ্যা পেরোয় নি ১১০০০-এর গণ্ডী। ব্যক্তিগত পরিসংখ্যানের হিসেবে পিছিয়ে থাকলেও বিশ্বজয়ের ক্ষেত্রে কিন্তু একই বিন্দুতে রয়েছেন দিল্লীর দুই ক্রিকেট তারকা। ২০১১ সালে যখন ভারত ওডিআই বিশ্বকাপ জেতে, তখন দু’জনেই ছিলেন সেই স্কোয়াডে। তার আগে ২০০৭-এ টি-২০ বিশ্বকাপ জিতেছিলেন গম্ভীর (Gautam Gambhir) । বিরাটের আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় আরও এক বছর পর, অর্থাৎ ২০০৮-এ। দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর ২০২৪-এ কুড়ি-বিশের খেলায় ট্রফি জয়ের স্বপ্ন সফল হয়েছে তাঁর।
কোচের পদে বসার আগে বিশ্লেষক বা ধারাভাষ্যকার হিসেবে দীর্ঘ সময় কাজ করেছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir) । কোহলি সম্পর্কে তাঁর একাধিক মন্তব্যে ঈর্ষার সুর খুঁজে পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিরাটের জনপ্রিয়তা, মহাতারকাসুলভ অবস্থান পছন্দ ছিলো না গম্ভীরের। কোচ হওয়ার পর আচমকা সেই মনোভাবে বদল আসবে না বলেই ধারণা অনেকের। তাঁদের ধারণা কোহলির (Gautam Gambhir) জন্য গম্ভীরের সময়কাল হয়ে উঠতে পারে বেশ কঠিন। নতুন প্রজন্মকে সুযোগ দেওয়ার অছিলায় বিরাটকে তিনি বাদ দিলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অনুরাগীদের একাংশের আশঙ্কা যে বিশ্বকাপ জয়ের সংখ্যার নিরিখে গম্ভীরকে যাতে ছাপিয়ে না যেতে পারেন কোহলি, তা নিশ্চিত করতে তাঁকে বাদ দেওয়া হতে পারে ২০২৭-এর টুর্নামেন্টের দল থেকে।