টেস্টে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া’র বিরুদ্ধে ধরাশায়ী হলেও কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটে ছুটছে গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) প্রশিক্ষণাধীন টিম ইন্ডিয়ার অশ্বমেধের ঘোড়া। জুলাই মাসে দায়িত্ব নিয়েছিলেন নয়া কোচ। তারপর শ্রীলঙ্কাকে ৩-০ হারিয়েছিলো ভারত। ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও স্ট্র্যাটেজি নির্মাণে নিখুঁত ছিলেন গম্ভীর (Gautam Gambhir)। টাইগার্সদেরও ‘মেন ইন ব্লু’ উড়িয়ে দিয়েছিলো ৩-০ ফলেই। নয়া বছরের গোড়ায় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেও জারি থাকলো তাদের দাদাগিরি। বাটলারদের ৪-১ হারালো ভারত। মুম্বইতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের তোপের মুখে পড়ে খড়কুটোর মত উড়ে গেলো ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাটিং করে ২৪৭ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করে স্বাগতিক দেশ। ওপেনার অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma) করেন ১৩৫ আর জবাবে ইংল্যান্ড গুটিয়ে গিয়েছিলো ৯৭ রানেই। ১৫০ রানের ব্যবধানে এই জয় স্বস্তি যুগিয়েছে টিম ইন্ডিয়াকে।
Read More: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতা হচ্ছে না টিম ইন্ডিয়ার, চোটের কারণে দল থেকে আউট ‘X-ফ্যাক্টর’ !!
ব্যর্থ সঞ্জুকে খেলিয়ে চলেছেন গম্ভীর-
অভিষেক শর্মাকে লাগাতার সুযোগ দেওয়া, বরুণ চক্রবর্তীকে (Varun Chakravarthy) টি-২০তে ফেরানো হোক বা পুনে ম্যাচে শিবম দুবের কনকাশন সাবস্টিটিউট হিসেবে হর্ষিত রাণা’কে ব্যবহার-ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সদ্যসমাপ্ত টি-২০ সিরিজে বারবার মগজাস্ত্রের দুর্দান্ত প্রয়োগ করেছেন কোচ গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। কেবলমাত্র একটিক্ষেত্রে তাঁর পরিকল্পনায় গলদ খুঁজে পাচ্ছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। লাগাতার ব্যর্থতা সত্ত্বেও উইকেটরক্ষক-ব্যাটার সঞ্জু স্যামসনকে (Sanju Samson) পাঁচটি ম্যাচেই সুযোগ দিয়ে গিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার পরেও শর্ট বলের বিরুদ্ধে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেন নি কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। কখনও জোফ্রা আর্চার, কখনও মার্ক উড আবার কখনও শাকিব মাহমুদ শর্ট পিচ লেন্থে তাঁর শরীর লক্ষ্য করে বোলিং করে সাজঘরে ফিরিয়েছেন সঞ্জুকে। প্রতিটি ম্যাচেই পাওয়ার প্লে’তে আউট হয়ে ভারতের উপর চাপ বাড়িয়েছেন তিনি।
ইডেনে প্রথম টি-২০ ম্যাচটিতে ২৬ রান করে আউট হয়েছিলেন সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে করেন ৫ রান। রাজকোটে তৃতীয় টি-২০তে তিনি আউট হন মাত্র ৩ রান করে। এরপর চতুর্থ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো ১। মুম্বইতে সিরিজের অন্তিম ম্যাচে ইনিংসের প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ফর্মে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন সঞ্জু। কিন্তু বিধি বাম। মার্ক উডের দ্রুতগতির ডেলিভারি পুল করতে গিয়েই ভুল করে বসেন তিনি। ১৬ রান করে স্কোয়্যার লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাজঘরে। গোটা সিরিজে ১০.২০ গড়ে ৫১ করেছেন সঞ্জু। এরপরও কেরলের ক্রিকেটারের উপর এতটা আস্থা রেখে আদৌ সঠিক সিদ্ধান্ত নেন নি কোচ গম্ভীর (Gautam Gambhir), মনে করছেন অনেকেই। দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সঞ্জু নয়, বরং অপেক্ষাকৃত তরুণ কাউকে টি-২০ দলের ওপেনার হিসেবে খেলানো হোক, উঠছে দাবী।
চোটের কবলে সঞ্জু স্যামসন-
দুর্ভাগ্যের শিকার সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। ব্যাট হাতে ফর্ম খুইয়েছেন। এবার চোট-আঘাত’ও ‘পথের কাঁটা’ হয়ে দাঁড়ালো তাঁর জন্য। মুম্বইতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পঞ্চম টি-২০ ম্যাচটি খেলার সময় ডান হাতের তর্জনী ভেঙেছে তাঁর। সিরিজ শেষে সরাসরি তিরুঅনন্তপুরমে নিজের বাড়ি ফিরে গিয়েছেন তিনি। দিনকয়েকের মধ্যেই বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে তাঁর চোট পরীক্ষা করে দেখবেন বিশেষজ্ঞরা। তবে প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে যে অন্তত এক মাস মাঠের বাইরে থাকতে হবে সঞ্জু’কে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের ওডিআই সিরিজ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) স্কোয়াডে এমনিতেই নেই তিনি। তবে রঞ্জি কোয়ার্টার ফাইনালে কেরলের জার্সিতে মাঠে নামতে পারতেন জম্মু-কাশ্মীরের বিরুদ্ধে। আঙুল ভাঙায় সেই সুযোগ হারালেন সঞ্জু। “সম্ভবত আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে কামব্যাক করবে ও,” PTI-কে জানিয়েছে এক বিসিসিআই সূত্র।