গত নভেম্বর আয়োজিত আইপিএল মেগা নিলামে নজির গড়েছিলেন ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant)। পূর্বের যাবতীয় রেকর্ড ভেঙে টুর্নামেন্টের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দাম পেয়েছিলেন তারকা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। তাঁকে পেতে ঝাঁপিয়েছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের মত ফ্র্যাঞ্চাইজি। একটা সময় পন্থের (Rishabh Pant) জন্য আরটিএম বা ‘রাইট টু ম্যাচ’ কার্ড ব্যবহারের চেষ্টা করেছিলো তাঁর পুরনো দল দিল্লী ক্যাপিটালসও। কিন্তু যাবতীয় চ্যালেঞ্জ ফুৎকারে উড়িয়ে শেষমেশ ২৭ কোটি টাকা খরচ করে ঋষভকে (Rishabh Pant) দলে সামিল করে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস। সম্প্রতি ম্যাঞ্চেস্টারে ভারত বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন উঠে এলো পন্থের (Rishabh Pant) রেকর্ড দাম পাওয়ার প্রসঙ্গ। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় প্রাক্তনী সুনীল গাওস্কর বলেন যে পাঁচ দশক আগে আইপিএল থাকলে বিপুল দাম পেতে পারতেন ফারুখ ইঞ্জিনিয়ারও।
Read More: IND vs ENG 4th Test: “দলটা উচ্ছন্নে গেছে…” প্রথম ওভারেই সাজঘরে যশস্বী-সাই, ক্ষোভে ফুঁসছে নেটদুনিয়া !!
ইঞ্জিনিয়ারের সাথে পন্থের তুলনা গাওস্করের-

ভারত বনাম ইংল্যান্ড সিরিজের চতুর্থ টেস্ট’টি আয়োজিত হচ্ছে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড স্টেডিয়ামে। ম্যাচের প্রথম দিনে ভারতীয় প্রাক্তনী ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার (Farokh Engineer) ও ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ক্লাইভ লয়েড’কে সম্মানিত করে ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি দল। স্টেডিয়ামের দু’টি স্ট্যান্ডের নামকরণ করা হয় তাঁদের নামে। সেদিনই ধারাভাষ্য দেওয়ার সময় ইঞ্জিনিয়ার সম্বন্ধে স্মৃতিচারণ করতে শোনা যায় গাওস্কর’কে (Sunil Gavaskar)। ৬০-৭০ এর দশকে, ওয়ান ডে ক্রিকেটের সূচনারও আগে টেস্টের মঞ্চেই ঝড়ের গতিতে ব্যাটিং করার জন্য সুবিদিত ছিলেন তিনি। ১৯৬৭-৬৮ মরসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে মাদ্রাজ-এর ( বর্তমানে চেন্নাই) মাঠে মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগেই ৯৪ রান করে ফেলেছিলেন তিনি। তাঁর এই ধুন্ধুমার ব্যাটিং দক্ষতাকে মাথায় রেখেই গাওস্কর বলেন, “ঋষভ পন্থ যেন (আইপিএল নিলামে) কত পেয়েছে? আমার মতে উনিও (ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার) তেমনই দাম পেতেন।”
টিম ইন্ডিয়ার পাশাপাশি ল্যাঙ্কাশায়ারেও কিংবদন্তির মর্যাদা পান ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার (Farokh Engineer)। ১৯৬৮ থেকে ১৯৭৬ সাল অবধি কাউন্টি দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। ১৭৫ ম্যাচে ইঞ্জিনিয়ারের ব্যাট থেকে এসেছে ৫৯৪২ রান। উইকেটের পিছনে তিনি ধরেছেন ৪২৯টি ক্যাচ। স্টাম্পিং করেছেন ৩৫টি। একটা সময় নিদারুণ ট্রফি খরায় ভুগছিলো ল্যাঙ্কাশায়ার কাউন্টি। ১৫ বছর খেতাবহীন থাকতে হয়েছিলো তাদের। পরিস্থিতি বদলায় ইঞ্জিনিয়ারের আগমনের পরেই। ১৯৭০ থেকে ১৯৭৫-এর মধ্যে চারবার জিলেট কাপ জেতে ‘লাল গোলাপের’ দল। সেই সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপই ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে তাঁকে একটি স্ট্যান্ড উৎসর্গ করলো কাউন্টি দল। বম্বে (মুম্বই)-এর হয়ে ভারতে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন ফারুখ ইঞ্জিনিয়ার। ব্র্যাবোর্ন স্টেডিয়াম সাক্ষী রয়েছে তাঁর বহু চোখধাঁধানো ইনিংসের। সেখানে অবশ্য নেই তাঁর নামাঙ্কিত কোনো স্ট্যান্ড বা প্যাভিলিয়ন।
দেখুন ইঞ্জিনিয়ারের ব্যাটিং-এর কিছু ঝলক-
ফারুখ ইঞ্জিনিয়ারের কেরিয়ার পরিসংখ্যান-

১৯৬১ সালে কানপুরে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিলো ফারুখ ইঞ্জিনিয়ারের (Farokh Engineer)। প্রায় দেড় দশকের কেরিয়ারে ৪৬টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। ৩১.০৮ গড়ে করেছেন ২৬১১ রান। রয়েছে ২টি শতরান ১৬টি অর্ধশতক। ৫টি ওয়ান ডে’ও খেলেছেন। ৩৮ গড়ে ১১৪ রান করেছেন তিনি। ১টি ম্যাচে পেরিয়েছিলেন পঞ্চাশের গন্ডীও। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফারুখ ইঞ্জিনিয়ারের পরিসংখ্যান ঈর্ষণীয়। ভারত ও ইংল্যান্ডে মোট ৩৩৫টি ম্যাচ খেলেছেন তিনি। প্রায় ৩০ গড়ে রয়েছে ১৩৪৩৬ রান। ১৩টি শতরান ও ৬৯টি অর্ধশতক’ও করেছেন তিনি। নিয়েছেন ৭০৪টি ক্যাচ। স্টাম্পিং-এর সংখ্যা ১২০। লিস্ট-এ ফর্ম্যাটে ১৬০ ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ৩০০৮ রান। অর্ধশতকের সংখ্যা ১২। অবসরের পর ধারাভাষ্যকার ও ম্যাচ রেফারী হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। ২০২৪-এ ইঞ্জিনিয়ারকে ‘জীবনকৃতি সম্মান’ দিয়েছে বিসিসিআই।