২০২৩ সালে চেন্নাই সুপার কিংস (CSK) আইপিএল (IPL) জেতার পরই অনেকে ভেবেছিলেন সরে দাঁড়াবেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। কিন্তু আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ট্রফি হাতে কিংবদন্তি তারকা জানিয়েছিলেন, “এখন খেতাব জয়ের পর সরে দাঁড়ানো সবচেয়ে সহজ সিদ্ধান্ত। কিন্তু সমর্থকদের কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই। চেষ্টা করবো নয় মাস পর ফের মাঠে নামতে।” কথা রেখেছিলেন তিনি। হাঁটুর অস্ত্রোপচার করিয়ে ফিট হয়ে মাঠে নেমেছিলেন। আগামী আইপিএলের (IPL) সময় ধোনির বয়স দাঁড়াবে ৪৩। সমর্থকদের কথা মাথায় রেখে আবারও তিনি মাঠে নামবেন কিনা সেই প্রশ্নেরই উত্তর এখন খুঁজছে ক্রিকেটমহল। ধোনি (MS Dhoni) বা চেন্নাই ফ্র্যাঞ্চাইজির তরফে কোনো মন্তব্য আসে নি এখনও। তবে সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে যে খেলার বিষয়টি অনেকটাই নির্ভর করছে বিসিসিআই-এর উপর।
Read More: ৬, ৬, ৬, ৪, ৪…অনবদ্য ঈশান কিষণ, প্রত্যাবর্তন ম্যাচেই করলেন ধুন্ধুমার শতরান !!
রিটেনশন নিয়ে নয়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বোর্ড-
আইপিএলের (IPL) মেগা অকশন আয়োজিত হতে পারে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে। এখনও সে সম্পর্কে কোনো নিয়মনীতি ঘোষণা করে নি বিসিসিআই। রিটেনশন, রিলিজ ও দলগঠন সংক্রান্ত নানান দাবীদাওয়া ছিলো টুর্নামেন্টের দশ ফ্র্যাঞ্চাইজির। সেই নিয়ে গত ৩১ জুলাই একটি বৈঠক আয়োজন করেছিলো বোর্ড। মুম্বইতে বিসিসিআই সদর দপ্তরে সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দশ ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রতিনিধিরাই। কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR), সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ, গুজরাত টাইটান্স (GT), মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, চেন্নাই সুপার কিংসের মত দলেরা মেগা অকশনের বদলে মিনি অকশনের পক্ষে সওয়াল করেন। যদিও উলটো সুর শোনা গিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB), পাঞ্জাব কিংস, লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টসের মত দলের থেকে। মেগা অকশন হলেও তার ব্যবধান তিন বছরের থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার দাবী করে কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি।
রিটেনশন নিয়ে জোর তরজা চলে বৈঠক। সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে যে এক ফ্র্যাঞ্চাইজি রিটেনশন রাখার প্রয়োজন নেই বলে মতামত দেয়। কিন্তু বাকিদের মধ্যে অনেকেই অন্তত পাঁচ থেকে ছ’টি রিটেনশন চেয়ে সওয়াল করে। সবচেয়ে সরব ছিলেন সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের মালকিন কাব্য মারান (kavya Maran)। তিনি অন্তত ছয় জন ক্রিকেটারকে ধরে রাখার ব্যপারে দাবী করেন। তোলেন রাইট টু ম্যাচ বা আরটিএম কার্ড প্রসঙ্গ’ও। ২০২২-এর মেগা নিলামে ছিলো না আরটিএম। এই পদ্ধতি ফেরানোর দাবী করেন তিনি। ছ’টি রিটেনশন দেওয়া সম্ভব না হলে দু’টি রিটেনশন ও চারটি আরটিএম বা চারটি রিটেনশন ও দু’টি আরটিএম-এর অনুমতি দেওয়ার কথা জানান। ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মতামত গুরুত্ব দিয়ে শুনেছে বোর্ড। সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে সবুজ সংকেত মিলেছে ছ’টি রিটেনশনে। দু’জন আনক্যাপড খেলোয়াড়কে আলাদা এক স্লটে রিটেন করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
আনক্যাপড প্লেয়ার হবেন ধোনি?
যদি ২০২২-এর মত মাত্র চারজন ক্রিকেটারকে ‘রিটেন’ করার নীতি নেয় বিসিসিআই, তাহলে চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) পক্ষে ৪৩-এর ধোনিকে (MS Dhoni) ধরে রাখা যে কঠিন হবে তা নিঃসন্দেহে বলা যায়। হয়ত দাঁড়ি পড়ে যাবে তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারে। কিন্তু এখনই ধোনি’র মত ‘ব্যান্ড’কে হাতছাড়া করতে চায় না সিএসকে। আরও অন্তত একটা মরসুম ‘মাহি’কে মাঠে রাখতে মরিয়া তারা। সেই জন্যই বিসিসিআই-এর কাছে একটি ‘বাতিল’ নিয়মকে পুনরায় কার্যকর করার দাবী তুলেছে তারা। আইপিএলের প্রথম নিলাম থেকে ২০২১ অবধি টুর্নামেন্টের নিয়মাবলীতে বলা ছিলো যে কোনো ক্রিকেটার যদি পাঁচ বছর আগে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়ে থাকেন, তাহলে তাঁকে ‘আনক্যাপড’ খেলোয়াড় হিসেবে ধরা হবে। কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি এতদিন নিয়মটি ব্যবহার না করায় তা তুলে দিয়েছিলো বোর্ড। ধোনি’কে (MS Dhoni) ধরে রাখতে সেই নিয়মই এখন ভরসা সিএসকে’র।
বাকি নয় ফ্র্যাঞ্চাইজির তরফে এই নিয়ম নিয়ে বিশেষ উৎসাহ দেখা না গেলেও সিএসকে’র (CSK) এই প্রস্তাব মনে ধরেছে বোর্ড কর্মকর্তাদের। নিউজ-১৮’কে এক সূত্র জানিয়েছে, “এই নিয়ম বদল নিয়ে গত মাসের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। নিয়মবিধি সামনে যখন আসবে, তখনই আনক্যাপড প্লেয়ারের নয়া নিয়ম সংক্রান্ত ঘোষণাও করা হবে।” যদি তা সত্যি হয় তাহলে ধোনি’কে (MS Dhoni) ধরে রাখতে বিশেষ সমস্যায় পড়তে হবে না চেন্নাই সুপার কিংস-কে (CSK)। ভারতের হয়ে তিনি শেষ খেলেছেন ২০১৯ সালে। আইপিএলের (IPL) বল গড়ানোর আগে পাঁচ বছর অতিক্রান্ত হয়ে যাবে তাঁর অবসরের। হলুদ জার্সিতে খেলতে কোনো বাধা থাকবে না পাঁচ বারের ট্রফিজয়ী তারকার। ২০২২ সালে তাঁকে ১২ কোটি টাকা দিয়ে ‘রিটেন’ করেছিলো চেন্নাই। এবার তাঁর পিছনে কত অর্থ খরচ করা হবে তা যদিও এখনও নিশ্চিত নয়।