আইনি টানাপোড়েনের মধ্যে জড়িয়ে পড়লেন ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। ১৫ কোটি টাকা প্রতারণার মামলায় নাম জড়ালো তাঁর। অভিযোগ এনেছিলেন ধোনি স্বয়ং। ক্যাপ্টেন কুল-এর নিশানায় ছিলো অর্ক স্পোর্টস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট নামে এক সংস্থার দিকে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ঐ সংস্থার কর্তা মিহির দিবাকর (Mihir Diwakar) ও সৌম্য বিশ্বাসের (Soumya Vishwas) বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ক্রিকেট নক্ষত্র। রাঁচী সিভিল কোর্টে ধোনি’র হয়ে মামলা করেছিলেন তাঁর আইনজীবী দয়ানন্দ সিং। ঝাড়খণ্ডের হাইকোর্টে পালটা মামলা করেন মিহির দিবাকর’ও। বিচারপতি এস কে দ্বিবেদী’র এজলাসে গতকাল উঠেছিলো মামলা’টি। ধোনি’কে (MS Dhoni) আদালতে হাজিরা দিয়ে নিজের বক্তব্য বা অভিযোগ পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন মহামান্য বিচারপতি।
Read More: IND vs SA 3rd T20i: “এবার আসল ফর্মে ফিরেছে…” সঞ্জু ঝুলিতে আবার ‘শূন্য’, কটাক্ষের স্রোতে ভাসালো নেটদুনিয়া !!
চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন ধোনি-
জানুয়ারিতে রাঁচী সিভিল কোর্টে মহেন্দ্র সিং ধোনি’র (MS Dhoni) আইনজীবী দয়ানন্দ সিং দাবী করেন যে ২০১৭ সালে অর্ক স্পোর্টস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সংস্থার সাথে চুক্তি হয়েছিলো ক্রিকেট নক্ষত্রের। সেই চুক্তি অনুসারে ধোনি’র নাম ব্যবহার করে দেশে ও বিদেশে ক্রিকেট অ্যাকাডেমি চালু করার কথা ছিলো সংস্থাটির। বিনিময়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি ও মোট লাভের একটা অংশ প্রাক্তন ভারত অধিনায়ককে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। কিন্তু অর্ক স্পোর্টস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সেই চুক্তি মানে নি বলে অভিযোগ করেন ধোনি’র (MS Dhoni) আইনজীবী। সংস্থাকে ক্রিকেট তারকার তরফে তাঁর নাম ব্যবহার করে অ্যাকাডেমি খোলার যে অনুমতিপত্র দেওয়া হয়েছিলো তা ২০২১ সালের ১৫ অগস্ট প্রত্যাহার করেন ধোনি।
বিশ্বজয়ী অধিনায়ক তাঁর নাম ব্যবহারের অনুমতি প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরেও টনক নড়ে নি মিহির দিবাকর, সৌম্য বিশ্বাসদের। তাঁরা ধোনি’র নাম’কে কাজে লাগিয়ে একের পর এক অ্যাকাডেমি ও স্পোর্টস কমপ্লেক্স খোলেন এর পরেও। এমনকি অর্ক স্পোর্টস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সংস্থার ওয়েবসাইটে কর্মকর্তাদের পাশে জ্বলজ্বল করছিলো ক্রিকেট তারকার ছবিই। জানুয়ারিতে তাই আদালতকে ধোনি জানিয়েছিলেন যে ঐ সংস্থা চুক্তি ভঙ্গ করায় তাঁর অন্তত ১৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। সেই পরিমাণ অর্থ ক্ষতিপূরণ হিসেবে চেয়েছিলেন তিনি। ধোনি’র করা মামলায় ২০ মার্চ অর্ক স্পোর্টস অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সংস্থার দুই কর্তাকে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজকুমার পাণ্ডে। তখনই সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে পালটা মামলা করেন মিহির (Mihir Diwakar)।
আগেও জেরার মুখে পড়েছেন ‘ক্যাপ্টেন কুল’-
টিম ইন্ডিয়ার সর্বকালের সেরা অধিনায়কদের তালিকায় উপরের দিকেই থাকবেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। তাঁর হাত ধরে তিনটি আইসিসি ট্রফি জিতেছে দেশ। ওডিআই বিশ্বকাপ, টি-২০ বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের নজির অন্য কোনো অধিনায়কের নেই। আইপিএলেও (IPL) চূড়ান্ত সফল তিনি। জিতেছেন পাঁচটি ট্রফি। আইন-আদালতের জটিল গোলকধাঁধায় এর আগেও দেখা গিয়েছে তাঁকে। ২০১৩ সালে যখন চেন্নাই সুপার কিংস ফ্র্যাঞ্চাইজির (CSK) নাম জড়িয়েছিলো গড়াপেটার সাথে, তখন কেন্দ্রীয় এজেন্সির জেরার মুখে পড়তে হয়েছিলো ধোনি’কে। সরাসরি তাঁর বিরুদ্ধে ম্যাচ ফিক্সিং-এর কোনো রকম অভিযোগ না থাকা সত্ত্বেও সংবাদমাধ্যমে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা বয়ান দিয়েছিলেন আইপিএস সম্পথ কুমার। বিষয়টি আদালতের গোচরে এনে মানহানির মামলা করেছিলেন তিনি। ক্রিকেটতারকার পক্ষেই রায় দিয়েছে আদালত।