CT 2025: আগামী বছর পাকিস্তানের মাটিতে বসার কথা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) আসর। দীর্ঘ সময় পর বড় কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চলেছে ওয়াঘা সীমান্তের ওপারের দেশ। তাই সাজসাজ রব চারিদিকে। ইতিমধ্যেই ভেন্যু হিসেবে লাহোর, রাওয়ালপিন্ডি ও করাচীকে বেছে নেওয়া হয়েছে। জোরকদমে চলছে স্টেডিয়াম ও অন্যান্য পরিকাঠামোর উন্নয়নের কাজ। সুত্রের খবর প্রায় ১২৬০ কোটি টাকা পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে খরচ করছে পাক ক্রিকেট বোর্ড (PCB)। মহসীন নকভি’রা (Mohsin Naqvi) জুন মাসের টি-২০ বিশ্বকাপ চলাকালীনই আইসিসি’র কাছে গ্রুপ বিন্যাস ও খসড়া সূচি জমা করে দিয়েছিলেন। আট’টি দল অংশ নেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (CT 2025)। বাকিরা পাকিস্তান যাওয়া নিয়ে কোনো আপত্তি না জানালেও বেঁকে বসেছে কেবল ভারত, যা গোটা টুর্নামেন্টের ভাগ্যকেই ঠেলে দিয়েছে বিশ বাঁও জলে।
Read More: IND vs SA 2nd T20i: বাদ অভিষেক শর্মা, দ্বিতীয় টি-২০তে জোড়া পরিবর্তনের সম্ভাবনা ভারতীয় একাদশে !!
পাকিস্তানে যেতে রাজী নয় ভারত-
২০২৩-এর এশিয়া কাপ (Asia Cup) আয়োজনের কথা ছিলো পাকিস্তানের। কিন্তু ক্রিকেটারদের নিরাপত্তায় ফাঁকফোকর থাকতে পারে, সেই আশঙ্কায় পড়শি দেশে যেতে অসম্মত হয় টিম ইন্ডিয়া। দুই দেশের কূটনৈতিক দড়ি-টানাটানি চলেছিলো দীর্ঘ সময়। শেষমেশ হাইব্রিড মডেলে সায় দেয় বিসিসিআই ও পিসিবি উভয় পক্ষই। সেইমত টুর্নামেন্টের ১৩টি ম্যাচের ৪টি আয়োজন করে পাকিস্তান। ভারতের সবক’টি গ্রুপ পর্বের ম্যাচ ও সম্পূর্ণ নক-আউট পর্ব আয়োজিত হয় শ্রীলঙ্কায়। ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) জন্যও একই ব্যবস্থা চাইছে বিসিসিআই। ইতিমধ্যেই আইসিসি’র কাছে হাইব্রিড মডেলের জন্য তদ্বির করেছেন জয় শাহ, রজার বিনি’রা। মধ্যপ্রাচ্যের দুবাই বা শারজাতে ম্যাচ খেলতে চেয়ে আবেদন জানিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। ডিসেম্বরে জয় শাহ (Jay Shah) স্বয়ং বসবেন আইসিসি’র মসনদে। তখন দাবী আদায়ে ‘মেন ইন ব্লু’ বাড়তি সুবিধা পাবে বলে মনে করছে ক্রিকেটদুনিয়া।
ভারতের ‘হাইব্রিড মডেল’-এর দাবী ২০২৩-এ মেনে নিয়েছিলেন তৎকালীন পিসিবি প্রধান নাজম শেঠি (Najam Sethi)। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) ক্ষেত্রে সেই চাহিদা মানতে কোনো মূল্যেই রাজী নন পাক বোর্ডের বর্তমান চেয়ারম্যান মহসীন নকভি (Mohsin Naqvi)। টিম ইন্ডিয়া যাতে পাকিস্তান যায় তা নিশ্চিত করতে একাধিক প্রস্তাব ইতিমধ্যে রেখেছেন তাঁরা। প্রথমে ভারতের সব ম্যাচ লাহোরে সরিয়ে আনার কথা জানানো হয়। খসড়া সূচিতে দুটি সেমিফাইনাল আয়োজিত হওয়ার কথা করাচী ও রাওয়ালপিন্ডিতে। কিন্তু ভারত শেষ চারে উঠলে সেই ম্যাচেরও ভেন্যু বদলানো হবে বলে জানিয়েছিলো পিসিবি (PCB)। কিন্তু চিঁড়ে ভেজে নি তাতে। এরপর এক ধাপ এগিয়ে ভারতকে ম্যাচের দিন পাকিস্তানে এসে ম্যাচ খেলে ফের অমৃতসর বা দিল্লী ফেরত যাওয়ার প্রস্তাব’ও দিয়েছিলো পিসিবি। কিন্তু কোনো প্রভাব ফেলে নি তাও।
লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত পিসিবি-
শেষমেশ কোন খাতে গড়াবে জল সে বিষয়ে নিশ্চিত নয় কেউই। তবে বিনা যুদ্ধে ভারতকে সূচাগ্র মেদিনী দিতে যে তিনি ও তাঁর সংস্থা রাজী নয় তা সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করে দিয়েছেন মহসীন নকভি (Mohsin Naqvi)। বিসিসিআই ও ভারতীয় দলের পাশাপাশি তাঁর নিশানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম’ও। নকভি বলেন, “গত দুই মাসে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে যে টিম ইন্ডিয়া পাকিস্তান সফরে আসবে না। আমি এটা ওদের সাথে (ভারত) ও আমার সতীর্থদের সাথে আলোচনা করেছি। আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। ওদের কি কি সমস্যা রয়েছে সেই বিষয়ে একটা লিখিত তালিকা দিক আমাদের। এখনও পর্যন্ত হাইব্রিড মডেল নিয়ে কোনো আলোচনা হয় নি। আমরা এমন কিছু মেনে নিতে রাজীও নই। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এমনটা বলছে বটে, কিন্তু আমাদের এসব কিছুই জানানো হয় নি।”
নিজেদের অ্যাকশন প্ল্যান স্পষ্ট করেছেন নকভি। জানান, “আমরা যদি ভারতের থেকে কোনো চিঠি পাই তখন অবশ্যই সরকারের সাথে করা বলবো। তারা যে পথে চলার কথা জানাবেন তা মেনে নেবো। অতীতে পাকিস্তান ভারতের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করেছে। কিন্তু (যদি তারা না আসে) আগামীতে তারা সেই আচরণ আশা যেন না করে। পাকিস্তান আগামীতে কোনো প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে আদৌ ভারতে যাবে কিনা তা সরকার স্থির করবে যদি ভারত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে পাকিস্তানে না আসে। পিসিবি এই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেবে না।” পাকিস্তানের মন্ত্রীপরিষদের সদস্য মহসীন নকভি। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “ক্রিকেট রাজনীতিমুক্ত থাকা উচিৎ। কোনো খেলাধূলার সাথেই রাজনীতিকে জড়ানো সঠিক নয়। আপনার অন্য কোনো দেশের সাথে সম্পর্ক ভালো না হতেই পারে, সেটা আলাদা বিষয়, কিন্তু খেলায় রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকা অনুচিত।”
Also Read: CT 2025: “পাকিস্তানে খেলতে আসুন, তবে…” বিসিসিআই-কে অভূতপূর্ব ‘দিল্লী’ প্রস্তাব দিলো পিসিবি !!