CT 2025: অস্ট্রেলিয়া সফরে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো সাকুল্যে ১৯০ রান। ৯ ইনিংসে ব্যাটিং গড় ২৩.৭৫। পার্থ-এর শতরানটি বাদ দিলে আরও হতশ্রী ছিলো পরিসংখ্যান। ফর্ম পুনরুদ্ধারের জন্য এক যুগ পরে ফিরেছিলেন রঞ্জির ময়দানেও। কিন্তু সেখানেও সাফল্য পান নি মহাতারকা। বিরাট কোহলি কি তাহলে ফুরিয়ে গেলেন? কানাঘুষো শুরু হয়ে গিয়েছিলো ক্রিকেটমহলে। অবশেষে নিন্দুকদের জবাব দেওয়ার জন্য বড় মঞ্চকেই বেছে নিলেন তিনি। দিনকয়েক আগে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অনবদ্য ১০০* করে বুঝিয়েছিলেন যে এখনও বাইশ গজ শাসনের ক্ষমতা রাখেন তিনি, আজ অস্ট্রেলয়ার বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) সেমিফাইনালে চোখধাঁধানো ইনিংস খেলে আরও একবার প্রমাণ করলেন নিজের শ্রেষ্ঠত্ব। এই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ হেরেছে ভারত, খুইয়েছে বিশ্বকাপ। আজ বিরাট বিক্রমে তাদের উড়িয়ে দিলো ‘মেন ইন ব্লু।’
Read More: CT 2025 IND vs AUS Stats Review: অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারত, ধুন্ধুমার ম্যাচে তৈরি হলো ১৩টি নয়া রেকর্ড !!
তাড়াহুড়ো করি নি, জানালেন বিরাট-

শুভমান গিল ও রোহিত শর্মা যখন সাজঘরে ফিরেছিলেন তখন টিম ইন্ডিয়ার স্কোরবোর্ডে মাত্র ৪৩ রান। দুবাইয়ের মন্থর পিচে প্রতিপক্ষকে এর পরেও জাঁকিয়ে বসতে দেন নি বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। অনবদ্য ৮৪ রানের ইনিংস খেলে দল’কে দুরন্ত জয় এনে দিয়েছেন। ম্যাচের সেরার পুরষ্কার জিতে স্বাভাবিক কারণেই বেশ তৃপ্ত তিনি। সাক্ষাৎকারে জানান, “আগের দিন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেমন খেলেছিলাম, প্রায় একই রকম ছিলো আজকের ইনিংসটা। আমি পরিস্থিতি বিচার করে সেই অনুযায়ী খেলতেই পছন্দ করি।” সাফল্যের সিক্রেট ফাঁস করেছেন আরও একবার। বলেন, “স্ট্রাইক রোটেট করে পার্টনারশিপ গড়াটাই প্রয়োজনীয়। যখন আমি আউট হলাম, তখন পরিকল্পনা ছিলো ২০ রান ছিনিয়ে নিয়ে দুই ওভারের মধ্যে ম্যাচ শেষ করার। আমি সাধারণত এভাবেই খেলে থাকি। কিন্তু কখনও কখনও সব কিছু ঠিক ঠাক হয় না।”
আগ্রাসন না রক্ষণ? কি করে ঠিক করেন রণনীতি? “পুরোটাই নির্ভর করে পরিস্থিতির উপর। পিচই আমায় বলে দেয় তার উপর ঠিক কেমন ক্রিকেট খেলার উচিৎ। আমি সেই বুঝেই খেলি,” সাফ জানিয়েছেন বিরাট (Virat Kohli)। নিজের ‘টাইমিং’ নিয়ে খুশি তিনি। যে ধৈর্য্য নিয়ে ব্যাটিং করেছেন, তাও স্বস্তি যুগিয়েছে টিম ইন্ডিয়ার সুপারস্টারকে। নিজেই জানিয়েছেন, “আমি তাড়াহুড়োয় ছিলাম না। এক রান নিয়েও খুশিই ছিলাম। যখন ফিল্ডিং-এর ফাঁক খুঁজে এক রান নেওয়াতে আপনি গর্ব করা শুরু করেন, তখনই বুঝবেন যে আপনি ভালো ক্রিকেট খেলছেন। যখন আপনি একটা বড় পার্টনারশিপ গড়েন, সেটা রান তাড়া করার সময় স্নায়ুর চাপ নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও কাজে আসে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচটিতে এবং আজ’ও এগুলোয় আমার জন্য সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক বিষয়।”
আবেগ নিয়ন্ত্রণ’ই সাফল্যের মূলমন্ত্র-

রান তাড়া করার সময় এই অবিশ্বাস্য সাফল্যের কারণ কি? ওভার গুনে ব্যাটিং করেন? প্রশ্নের জবাবে বিরাট (Virat Kohli) বলেছেন, “খেলা মানেই চাপ। বিশেষ করে সেমিফাইনাল বা ফাইনালের মত বড় ম্যাচগুলি। যদি শেষ অবধি ম্যাচকে টেনে নিয়ে যাওয়া যায়, আর হাতে উইকেট থাকে, তাহলে সাধারণত প্রতিপক্ষ নিজেই আত্মসমর্পণ করে দেয়। তখন একটু সহজ হয়ে যায় বিষয়টা।” “আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখাটাই আসল। কত ওভার আর কত বাকি রয়েছে সে সম্পর্কে ধারণা রাখার চেষ্টা করি। যদি ২৫-৩০ রানেরও ব্যবধান থাকে আর তা ৬ রান প্রতি ওভারে দাঁড়ায় তখনও আমি বিশেষ চিন্তা করি না যদি ৬-৭ উইকেট হাতে থাকে,” সংযোজন তাঁর ওয়ান ডে’ই কি তাঁর সেরা ফর্ম্যাট? “আপনারাই বিবেচনা করুন। মাইলস্টোন নিয়ে ভাবি না। ম্যাচ জিতলে ওগুলো নিজে থেকেই হয়ে যায়,” মন্তব্য বিরাটের।
Also Read: CT 2025 IND vs AUS: বিরাট বিক্রমে অস্ট্রেলিয়া কাঁটা উপড়ে ফেললো টিম ইন্ডিয়া, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ‘মেন ইন ব্লু’ !!