CT 2025: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে টিম ইন্ডিয়া। গ্রুপ-এ’র ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলো রোহিত শর্মা’র দল। এরপর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধেও বিশেষ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় নি তাদের। তৃতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় ‘মেন ইন ব্লু।’ সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ ছিলো অস্ট্রেলিয়া। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও ওয়ান ডে বিশ্বকাপ ফাইনালে ক্যাঙারুবাহিনীর বিপক্ষে হেরে স্বপ্ন ভেঙেছিলো ভারতের। শেষ চারের দ্বৈরথের আগে তাই আশঙ্কিত ছিলেন সমর্থকেরা। কিন্তু দুবাইয়ের বাইশ গজে বিরাট কোহলি (Virat Kohli), শ্রেয়স আইয়ারদের দুর্দান্ত পারফরর্ম্যান্সে ভর দিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেছে ভারতীয় শিবির। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) ও তাদের মধ্যে ব্যবধান এখন কেবল একটি ম্যাচের। আরও একবার কিউইদের বিরুদ্ধেই নামতে হবে মাঠে। খাতায়-কলমে খেতাবী যুদ্ধে ফেভারিট ভারতই। তবুও ‘অঘটন’-এর ভয় এড়াতে পারছেন না অনেকেই।
Read More: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যর্থতার জের, ওয়ান ডে থেকে অবসর নিলেন কিংবদন্তি তারকা !!
বিশ্বকাপের পুনরাবৃত্তি চান না কেউ-

টিম ইন্ডিয়ার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) অভিযানের সাথে বছর দুয়েক আগেকার ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ‘হুবহু’ মিল খুঁজে পাচ্ছে ক্রিকেটমহল। সেবার গ্রুপ পর্বের প্রত্যেকটা ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিলেন রোহিত-কোহলিরা। এবারও অপরাজিত তাঁরা। ২০২৩-এ মুম্বইয়ের মাঠে সেমিফাইনালে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয়ের নায়ক হয়েছিলেন বিরাট কোহলি। সাফল্য পেয়েছিলেন মহম্মদ শামি’ও (Mohammed Shami)। ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও (CT 2025) কাকতালীয় ভাবে ঘটেছে একই ব্যাপার। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৮৪ রানের ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন বিরাট (Virat Kohli)। ৩ উইকেট নিয়ে সফল শামি’ও। আগাগোড়া দাপট দেখিয়ে ভারত ফাইনালে পৌঁছানোয় তাই আহমেদাবাদের স্মৃতিও ঘুরে ফিরে আসছে অনেকেরই মনে। ৯২০০০ সমর্থকের সামনে খেতাবী দ্বৈরথে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিলো সেবার ‘মেন ইন ব্লু।’ এবারও কি তাই হবে? কাটছে না চিন্তা।
প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড’ও ভয় ধরাচ্ছে ভারতকে (IND vs NZ)। আইসিসি টুর্নামেন্টের নক-আউটে তাদের বিরুদ্ধে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) রেকর্ড বিশেষ ভালো নয়। বিশেষ করে খেতাবী লড়াইতে তো সাফল্যের ঝুলি শূন্য। ২০২১ সালে সাদাম্পটনের মাঠে কিউইদের বিপক্ষে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল (WTC Final 2021) খেলতে নেমেছিলো বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। বৃষ্টিভেজা বাইশ গজে কাইল জেমিসন (Kyle Jamieson), টিম সাউদীদের স্যুইং সামলাতেই পারেন নি ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংসে ৩২ রানের লিড নেয় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে নড়বড়ে টিম ইন্ডিয়া গুটিয়ে গিয়েছিলো মাত্র ১৭০ রানে। রোহিত শর্মা ও ঋষভ পন্থ ছাড়া ২০’র গণ্ডী পেরোতে পারেন নি কেউই। ১৩৯ তাড়া করতে নেমে মাত্র ২ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ‘ব্ল্যাক ক্যাপস’রা। অপরাজিত অর্ধশতক করেন কেন উইলিয়ামসন।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বিঁধেছিলো কিউই কাঁটা-

রবিবারের মেগা লড়াইয়ের আগে ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2000) ফাইনালের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে ভারতীয় সমর্থকদের। সেবারও এগিয়ে থেকেই মাঠে নেমেছিলো ভারত। নাইরোবি’র মাঠে অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Sourav Ganguly) শতরানে ভর করে ৬ উইকেটের বিনিময়ে ২৬৪ রান স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলেছিলো তারা। বল হাতেও শুরুটা অনবদ্য করেছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ ভেঙ্কটেশ প্রসাদ ফিরিয়ে দেন ক্রেগ স্পিয়ারম্যানকে। নাথান অ্যাসলে, স্টিফেন ফ্লেমিং-এর মত প্রথম শ্রেণির ব্যাটাররাও বড় রান করতে পারেন নি সেদিন। একটা সময় মনে হয়েছিলো যে সহজেই বৈতরণী পেরিয়ে যাবে টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ডের হয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়ান অলরাউন্ডার ক্রিস কেয়ার্নস। ১১৩ বলে ১০২* রান করে কার্যত একাই সৌরভদের হাতের মুঠো থেকে কেড়ে নিয়ে যান ট্রফি। সেই যন্ত্রণাদায়ক স্মৃতি সিঁদুরে মেঘ দেখতে বাধ্য করছে ভারতীয় সমর্থকদের।