চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) বাকি আর ঠিক এক মাস। আগামী মাসের ১৯ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে মহারণ। গ্রুপ-এ’তে রয়েছে ভারতীয় দল। তাদের প্রথম ম্যাচ ২০ তারিখ প্রতিবেশী বাংলাদেশের বিপক্ষে। ২৩ তারিখ রয়েছে মহারণ। দুবাইতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হতে চলেছে ‘মেন ইন ব্লু।’ ২ মার্চ টিম ইন্ডিয়ার (Team India) শেষ গ্রুপ ম্যাচ রয়েছে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে। আইসিসি’র তরফে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) দল ঘোষণার ডেডলাইন বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো ১২ জানুয়ারি। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ব্যস্ততার কারণে তা মানা সম্ভব হয় নি বিসিসিআই-এর পক্ষে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে গতকাল মুম্বইতে বোর্ডের সদর দপ্তরে ১৫ জনের স্কোয়াড সামনে আনেন অধিনায়ক রোহিত (Rohit Sharma) ও মুখ্য নির্বাচক আগরকার। দল ঘোষণার পর থেকেই শুরু হয়েছে গুঞ্জন। অন্তত পাঁচটি সিদ্ধান্তের কোনো ব্যাখ্যা পাচ্ছেন না ক্রিকেটজনতা।
Read More: CT 2025: “ও কার্যকরী নয়…” সিরাজে ‘না’ রোহিতের, অধিনায়কের আপত্তিতেই বাদ তারকা পেসার !!
5. সঞ্জুর বদলে সুযোগ পেলেন ঋষভ-
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) স্কোয়াডে রয়েছেন ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant)। লাল বলের ক্রিকেটে এই মুহূর্তে নিঃসন্দেহে তিনি দেশের সেরা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। কিন্তু সাদা বলের খেলায় আহামরি নয় তাঁর পারফর্ম্যান্স। ৩১টি একদিনের ম্যাচে ৩৩.৫০ গড়ে তিনি করেছেন ৮৭১ রান। শতরান ১টি, অর্ধশতক ৫টি। আর কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে ৭৬ ম্যাচে সুযোগ পেয়ে তাঁর ঝুলিতে মাত্র ১২০৯ রান, গড় ২৩.২৫। অত্যন্ত সাধারণ পরিসংখ্যান সত্ত্বেও কেন তিনি ডাক পেলেন তা বুঝছে না ক্রিকেটমহল। সুযোগ পাওয়া উচিৎ ছিলো সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson), মত অনেকের। ফর্ম এবং পরিসংখ্যানও পক্ষে যাচ্ছে সঞ্জুর’ই। শেষ ১৩টি আন্তর্জাতিক ইনিংসের মধ্যে ৪টি শতরান রয়েছে তাঁর। ওডিআই-তে তাঁর গড় ৫৬.৬৬, মাত্র ১৬ ম্যাচে করেছেন ৫১০ রান। নির্বাচকদের পক্ষপাতের শিকার হয়েছেন সঞ্জু, উঠছে অভিযোগ।
4. বাদের খাতায় মহম্মদ সিরাজ-
ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) স্কোয়াডের অন্যতম চমক মহম্মদ সিরাজের (Mohammed Siraj) বাদ পড়া। গত দেড়-দুই বছর ধরে তিন ফর্ম্যাটেই দেশের জার্সিতে নিয়মিত খেলেছেন হায়দ্রাবাদের পেসার। সবচেয়ে বেশী ওভার হাতও ঘুরিয়েছেন তিনিই। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে আইসিসি র্যাঙ্কিং-এর শীর্ষস্থানে পা দিয়েছেন। এখনও রয়েছেন প্রথম দশের মধ্যে। তার পরেও দুবাইগামী বিমানের টিকিট পেলেন না তিনি। গতকাল সাংবাদিক সম্মেলনে সিরাজকে (Mohammed Siraj) বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত (Rohit Sharma)। “নতুন বল ছাড়া কার্যকরী হয় না ও। বল যত পুরনো হয়, তত কমতে থাকে ওর কার্যকারিতা,” জানিয়েছেন তিনি। এই যুক্তি মনঃপুত হচ্ছে না ক্রিকেটজনতার। এশিয়া কাপ ফাইনাল বা বিশ্বকাপের মঞ্চে সিরাজের বিধ্বংসী সব স্পেলের উদাহরণ টেনে আনছেন তাঁরা।
3. সহ-অধিনায়ক শুভমান, স্কোয়াডে যশস্বী-
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) জন্য ১৫ সদস্যের যে ভারতীয় স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে যে অধিনায়ক রোহিতের (Rohit Sharma) ডেপুটি হিসেবে রয়েছেন শুভমান গিল (Shubman Gill)। হার্দিক পান্ডিয়া, জসপ্রীত বুমরাহ, কে এল রাহুলদের মত অভিজ্ঞ তারকাদের বদলে শুভমানকে কেন সহ-অধিনায়কত্ব দেওয়া হলো তা নিয়েই সন্দিহান অনেকে। পাঞ্জাবের ওপেনার সহ-অধিনায়ক পদ পাওয়ায় তিনিই যে ওপেনার হিসেবে প্রথম পছন্দ তা এক প্রকার নিশ্চিত। তার পরেও কেন আবার যশস্বী জয়সওয়ালকে (Yashasvi Jaiswal) দলে রাখা হলো তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। গত বছরের টি-২০ বিশ্বকাপেও (T20 World Cup) স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়ার পরে গোটা টুর্নামেন্ট রিজার্ভ বেঞ্চে বসে কাটাতে হয়েছিলো মুম্বইয়ের তরুণকে। এবারও তেমনটাই হবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
2. বুমরাহ’র ফিটনেস নিয়ে ধোঁয়াশা-
সিডনিতে টেস্ট খেলার সময় পিঠে চোট পেয়েছিলেন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। এখনও সারে নি তা। সম্পূর্ণ বিশ্রামে রয়েছেন তিনি। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে (IND vs ENG) একদিনের সিরিজে তাঁকে রাখা হয় নি। বদলে খেলবেন হর্ষিত রাণা। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) স্কোয়াডে রাখা হয়েছে ডান হাতি পেসারকে। তিনি ২০ ফেব্রুয়ারির আগে আদৌ ফিট হয়ে উঠবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে ক্রিকেটজনতা। শেষ মুহূর্তে যদি বুমরাহ ছিটকে যান তাতে ভারতীয় বোলিং বিভাগ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবে, পাশাপাশি তড়িঘড়ি বদলি হিসেবে কাউকে দুবাই উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হলে টিম ইন্ডিয়ার স্কোয়াডের ভারসাম্যও বিঘ্নিত হতে পারে বলে আশঙ্কায় অনেকে। বুমরাহ পরিস্থিতির আরও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দেওয়া উচিৎ ছিলো বোর্ডের, জানাচ্ছেন তাঁরা।
1. রয়েছেন ওয়াশিংটন, বাদ নীতিশ রেড্ডি-
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) স্কোয়াডে রয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা ও অক্ষর প্যাটেলের মত দুই অভিজ্ঞ স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার। তারপরেও তৃতীয় স্পিনার-অলরাউন্ডার হিসেবে ওয়াশিংটন সুন্দরকে (Washington Sundar) টিম ইন্ডিয়ার আদৌ প্রয়োজন ছিলো কিনা তা নিয়ে উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। সেই জায়গায় সুযোগ প্রাপ্য ছিলো নীতিশ কুমার রেড্ডি’র, মত বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশের। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার কঠিন পরিস্থিতিতে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন বিশাখাপত্তনমের তরুণ। তিনি পেস বোলিং অলরাউন্ডার হওয়ায় হার্দিক পান্ডিয়ার আদর্শ ব্যাক-আপ হতে পারতেন বলে মনে করা হচ্ছে। এছাড়া দুবাইতে যে মাঠে খেলবে ভারত, সেখানে পেস বোলিং কার্যকরী হয়। নীতিশ (Nitish Kumar Reddy) থাকলে ভারতের হাতে বাড়তি পেস বিকল্প থাকত বলে মনে করছে ক্রিকেটমহল।