ক্রিস গেইল (Chris Gayle)-ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের অন্যতম সুপারস্টার। বাইশ গজে ব্যাট হাতে তাঁর তাণ্ডব মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখে নি এমন ক্রিকেটপ্রেমী সম্ভবত পাওয়া যাবে না। দীর্ঘ আন্তর্জাতিক কেরিয়ারে ১০৩টি টেস্ট, ৩০১টি একদিনের ম্যাচ ও ৭৯টি টি-২০তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জার্সিতে করেছেন যথাক্রমে ৭২১৪, ১০৪৮০ ও ১৮৯৯ রান। তিন ফর্ম্যাট মিলিয়ে শতরানের সংখ্যা ৪২। আইপিএলের আসরেও শ্রেষ্ঠতমদের তালিকায় নিঃসন্দেহে নাম থাকবে তাঁর। ১৪২ ম্যাচে ৩৯.৭২ গড়ে করেছেন ৪৯৬৫ রান। ভারতের ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে আজও দ্রুততম শতরানটির মালিক তিনি। এক ইনিংসে সর্বোচ্চ রানের মাইলস্টোনও তাঁর দখলে। তাঁর ক্রিকেটীয় যাত্রাপথটি ফুল ছড়ানো হলেও মাঠের বাইরে নানা সময় বিতর্কের কাঁটায় বিদ্ধ হয়েছেন তিনি। এর মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই বিতর্কের কেন্দ্রে থেকে নারী সংক্রান্ত কোনো ঘটনা।
Read More: IND vs PAK: ভারতের বিপক্ষে জিততে ভরসা কালাযাদু, অদ্ভুত সিদ্ধান্ত নিলো পাকিস্তান !!
অশালীন আচরণের অভিযোগ এনেছিলেন ম্যাসিওর-

ক্রিস গেইলের (Chris Gayle) বিরুদ্ধে অশালীন আচরণের অভিযোগ এনেছিলেন লিয়ান রাসেল নামে এক অস্ট্রেলীয় ম্যাসিওর। ২০১৫ সালের ওয়ান ডে বিশ্বকাপ চলাকালীন ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সঙ্গে ছিলেন তিনি। একদিন ড্রেসিংরুমে গিয়েছিলেন একটি তোয়ালে খুঁজতে। সেখানেই গেইলের (Chris Gayle) সাথে দেখা হয় তাঁর। তাঁর সাজঘরে প্রবেশের কারণ জানা মাত্র পরনের তোয়ালেটি খুলে ক্যারিবিয়ান তারকা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘তুমি এটা খুঁজছিলে?’ যৌন হয়রানির মামলা দায়ের হয়েছিলো ক্রিকেট তারকার বিরুদ্ধে। বেশ কিছুদিন চলে শুনানি। ঘটনার পর তিনি ভেঙে পড়েছিলেন, দীর্ঘসময় কিছু খেতেও পারেন নি, জানিয়েছিলেন লিয়ান। শেষমেশ অবশ্য এই অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছেন গেইল। মানহানির মামলায়ও জিতেছেন তিনি। ২০১৮তে গেইলকে ২২০০০০ মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দেয় অস্ট্রেলিয়ার একটি আদালত।
উঠেছিলো সঞ্চালিকার সাথে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ-

২০১৬ সালের বিবিএল চলাকালীন বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ক্রিস গেইল (Chris Gayle)। মেলবোর্ন রেনেগেডসের জার্সিতে সেবার অস্ট্রেলিয়ার ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ টুর্নামেন্ট খেলছিলেন ক্যারিবিয়ান ওপেনার। একটি ম্যাচ চলাকালীন ডাগ-আউটে গেইলের সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন সম্প্রচারকারী সংস্থার সঞ্চালিকা মেল ম্যাকলাফলিন (Mel McLaughlin)। হঠাৎ’ই তাঁকে ক্রিকেটতারকা বলে বসেন, “আপনি আমার সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন তাতে আমি খুশি। কারণ প্রথমবার আপনার চোখ দু’টো দেখতে পাচ্ছি।” এহেন মন্তব্যে বেশ অপ্রস্তুতে পড়েছিলেন ম্যাকলাফলিন। তখন গেইল (Chris Gayle) বলেন, “ডোন্ট ব্লাশ বেবি।” বিতর্কের ঝড় ওঠে এরপর। শুধুই মজা করতে চেয়েছিলেন তিনি, দাবী করেন গেইল। কিন্তু চিঁড়ে ভেজে নি তাতে। ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয় তাঁকে। পাশাপাশি ৭০০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার জরিমানাও করে মেলবোর্ন রেনেগেডস ফ্র্যাঞ্চাইজি।
বিতর্কের কেন্দ্রে গেইলের ইন্সটাগ্রাম স্টোরি-

চলতি বছরের গোড়ায় বিতর্ক তৈরি হয়েছিলো ক্রিস গেইলের (Chris Gayle) ইন্সটাগ্রাম স্টোরি নিয়ে। সেন্ট কিটস আল্ট্রা কার্ণিভালে অংশ নিয়েছিলেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি। সেখানকার যে সব ভিডিও তিনি পোস্ট করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায় তাতে চোখ প্রায় কপালে উঠেছিলো নেটিজেনদের। সারি সারি স্বল্পবসনা সুন্দরীদের মাঝে কার্ণিভাল উপভোগ করতে দেখা গিয়েছিলো তাঁকে। গেইল (Chris Gayle) যেহেতু ক্রিকেটদুনিয়ার একজন নামী মুখ, সেহেতু তাঁর ফলোয়ারসংখ্যার একটা বড় অংশ উঠতি বয়সের কিশোর-কিশোরীরা। টিন-এজারদের সামনে এহেন ‘প্রাপ্তবয়স্ক’ ছবির ডালি সাজিয়ে আদৌ ঠিক করেছেন গেইল? প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে। কেউ কেউ আবার ব্যক্তিগত স্বাধীনতার প্রসঙ্গ টেনে পাশেও দাঁড়িয়েছিলেন তাঁর।