এশিয়া কাপে ‘সুপার ফোর’ পর্ব থেকে বিদায়, টি-২০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে হার, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে গিয়েও শিরোপা জিততে না পারা, ক্রিকেটের বড় মঞ্চে সাম্প্রতিককালে ভারতের ভাঁড়ার শূন্য। দলের পারফর্ম্যান্সের গ্রাফ তলানিতে নামায় বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিসিআই। নির্বাচক প্রধান চেতন শর্মা’সহ গোটা নির্বাচক কমিটিকেই ছাঁটাই করে দিয়েছে তারা। চেতন ও তাঁর কমিটির ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন দেশের ক্রিকেটজনতাও। তার প্রধান কারণ যদি দলের হতশ্রী পারফর্ম্যান্স হয়, তাহলে বিরাট কোহলি’কে আচমকা নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া বা বিভিন্ন সিরিজে বহু নেতা পলিসি চালু করার মত কাজকর্ম’ও সেই আগুনে ঘি ঢেলেছিলো। চেতন শর্মা ও তাঁর কমিটিকে বোর্ড সরিয়ে দেওয়ায় তাই খুশিই হয়েছিলেন অনেকে। ট্যুইটার বা অন্যান্য সমাজমাধ্যমগুলিতে পোস্ট করে সেই অনুভূতি জানিয়েছিলেন তাঁরা। ঘরে-বাইরে সমালোচনার মধ্যে চেতন(Chetan Sharma) আচমকাই পাশে পেলেন একজন’কে। তিনি আর কেউ নয়, ভারতীয় দলের উইকেটরক্ষক দীনেশ কার্তিক(Dinesh Karthik)।
নিউজিল্যান্ডে নেই কার্তিক-

আইপিএলে ভালো পারফর্ম্যান্স করে জাতীয় দলে ফিরে এসেছিলেন অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক ব্যাটার দীনেশ কার্তিক(Dinesh Karthik)। ঘরের মাঠে কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে ভালো ফর্ম দেখালেও বিশ্বকাপের মঞ্চে হয়েছেন একেবারে ব্যর্থ। দল তাঁর কাছ থেকে আশা করেছিলো যে শেষের ওভারগুলোয় বড় রান তুলে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেবেন তিনি। টুর্নামেন্ট শুরু’র আগে কার্তিকের প্রশংসায় মেতেছিলেন স্বয়ং রিকি পন্টিং। কিন্তু খেলা যত গড়িয়েছে, মোহভঙ্গ হয়েছে সবার। অস্ট্রেলিয়ার বাইশ গজে বারবার হতাশ করেছে কার্তিক। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এসেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে যখন দরকার ছিলো বড় পার্টনারশিপ গড়ার তখনো চলে নি তাঁর ব্যাট। টি-২০ বিশ্বকাপের শেষ দুই ম্যাচে বাদ পড়েন তিনি। এছাড়াও নিউজিল্যান্ডগামী সীমিত ওভারের দলেও তাঁকে আর রাখে নি দল নির্বাচন কমিটি। মনে করা হচ্ছে জাতীয় দলের দরজা এবার চিরতরে বন্ধ হয়েছে তাঁর কাছে। মাঠে সুযোগ না পেয়ে মাঠের বাইরে বিশেষজ্ঞের ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে কার্তিক’কে(Dinesh Karthik)।
‘বরখাস্ত’ নিয়ে বাড়াবাড়ি কেনো? প্রশ্ন কার্তিকের-

গত ১৮ নভেম্বর রাতের দিকে এক ট্যুইটবার্তায় চেতন শর্মা(Chetan Sharma), দেবাশীষ মোহান্তি, হরবিন্দর সিং এবং সুনীল যোশী’কে ছেঁটে ফেলার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় ভারতের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই। সম্পূর্ণ কমিটিকে বাতিল করে নতুন নির্বাচক নিয়োগ করতে চলেছে তারা, জানায় সেই কথাও। আবেদনপত্র চাওয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। এই বিষয় নিয়ে আলোচনায় ক্রিকবাজ’কে ভারতের উইকেটরক্ষক ব্যাটার দীনেশ কার্তিক(Dinesh Karthik) জানিয়েছেন, “ যা ঘটেছে তা বেশ ইন্টারেস্টিং। এরকম হবে, আমার মনে না কেউ ভেবেছিলো। তবে নতুন নির্বাচক কমিটিতে যাঁরা আসবেন, তাঁদের কাছে সুযোগ থাকবে দল’কে ঢেলে সাজানোর। দেখা যাক কি হয়!” চেতন শর্মা ও তাঁর কমিটি’কে ‘বরখাস্ত’ করা হয়েছে বলে জানানো হচ্ছে নানা মহল থেকে। এই ‘বরখাস্ত’ শব্দটিতে ঘোর আপত্তি রয়েছে দীনেশের। ২০২০ সালে দায়িত্ব নিয়েছিলেন চেতন শর্মা। দেবাশিষ মোহান্তি’র মত কেউ কেউ রয়েছেন আরও আগে থেকে। সেই কথা মনে করিয়ে ‘ডিকে’র মন্তব্য, “ আমি জানি বরখাস্ত শব্দটা বহুবার ব্যবহার করা হচ্ছে। কিন্তু ওনাদের (নির্বাচক কমিটি) মেয়াদ তো ফুরিয়েই এসেছিলো, তাই না? মনে রাখতে হবে যে ৪০-৪৫ জন ক্রিকেটার, যাঁরা প্রত্যেকে দেশের জার্সি পরার যোগ্য, সেই তালিকা থেকে ১৫ জনের দল বেছে নেওয়া খুবই কঠিন কাজ। আমি ওঁদের সাধুবাদ জানাই। ওঁরা খুবই ভালো কাজ করেছেন। নতুন যাঁরা নির্বাচক হবেন তাঁদের বেশ কিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে এইবার।”