২০২৩ সালে এশিয়া কাপ (Asia Cup 2023) আয়োজিত হওয়ার কথা ছিলো পাকিস্তানে। ২০২৫-এ তারা পেয়েছিলো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের দায়িত্ব। কিন্তু দু’বারই পড়শি দেশে ক্রিকেটারদের পাঠাতে রাজী হয় নি বিসিসিআই। পাকিস্তানে নিরাপদ নন তারকারা, যুক্তি দিয়েছিলো ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। মূলত তাদের চাপেই হাইব্রিড মডেলে আয়োজিত হয় টুর্নামেন্ট দু’টি। এশিয়া কাপে (Asia Cup 2023) ‘মেন ইন ব্লু’ নিজেদের ম্যাচগুলি খেলেছিলো শ্রীলঙ্কার মাটিতে। আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে (CT 2025) রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের ম্যাচগুলি হয়েছিলো দুবাইয়ের বাইশ গজে। নিরাপত্তা নিয়ে বিসিসিআই-এর সংশয় অমূলক-এতদিন এমনটাই বলে এসেছে পিসিবি। কিন্তু বাস্তব ছবিটা যে বেশ আলাদা, তার প্রমাণ মিললো গতকাল। ম্যাচের মাঝেই বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠলো স্টেডিয়াম।
Read More: নেতার আসনে ক্ষণস্থায়ী শ্রেয়স আইয়ার, অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ম্যাচে KL রাহুল সামলাবেন দায়িত্ব !!
খাইবার পাখতুনখওয়ার বাজওয়ার জেলার খার তহশিলের অন্তর্গত কৌসর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শনিবার চলছিলো একটি ক্রিকেট ম্যাচ। খেলা চলাকালীনই ঘটে বিস্ফোরণ। এখনও পর্যন্ত একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন অনেকে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন শিশু এবং কিশোরও রয়েছে বলে খবর। আহতদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ইমপ্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি (IED) ব্যবহার করে পরিকল্পনামাফিক এই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে বলে পাকিস্তানী সংবাদপত্র ‘ডন’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন বাজাওর জেলার পুলিশ আধিকারিক ওয়াকাস রফিক (Waqas Rafique)। ক্রিকেট মাঠের পাশাপাশি থানাতেও আক্রমণের চেষ্টা চালিয়েছিলো সন্ত্রাসবাদীরা, খবর মিলেছে প্রশাসন সূত্রে। তবে সেই পরিকল্পনা অবশ্য সফল হয় নি তাদের।
তদন্তে নেমেছে পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায় নি বলেই খবর। কোনো সন্ত্রাসবাদী সংগঠনও এখনও হামলার দায়ও স্বীকার করে নি। ২০০৯-এ পাকিস্তানসফররত শ্রীলঙ্কা দল’কে পড়তে হয়েছিলো জঙ্গীদের আক্রমণের মুখে। টিম হোটেল থেকে লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে যাওয়ার পথে আক্রান্ত হন জয়বর্ধনে, সাঙ্গাকারারা। ছয়জন নিরাপত্তাকর্মী ও দু’জন সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছিলেন ঐ ঘটনায়। শেষমেশ হেলিকপ্টারের সাহায্যে এয়ারলিফট করা হয়েছিলো লঙ্কান ক্রিকেটারদের। ঐ ঘটনার পর দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের আঙিনায় কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছিলো পাকিস্তান। ২০১১’র বিশ্বকাপ আয়োজনের সুযোগ হারায় তারা। এক দশক দেশের মাঠে কোনো ম্যাচও খেলতে পারে নি পাক দল। শনিবারের ঘটনা সেই বিভীষিকাময় স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে আরও একবার।