টিম ইন্ডিয়ার সাম্প্রতিক ব্যর্থতায় নড়েচড়ে বসেছে বিসিসিআই (BCCI)। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ০-৩ ফলে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে রোহিত শর্মা’র (Rohit Sharma) দল। ১২ বছর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজ হারের সম্মুখীন হয়েছে ‘মেন ইন ব্লু।’ ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে কখনও হোমগ্রাউন্ডে তিন বা তার বেশী টেস্টের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয় নি ভারত। গত নভেম্বরে হজম করতে হয়েছে সেই ব্যর্থতাও। কিউই বিপর্যয়ের অন্ধকার কাটিয়ে ওঠার আগেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেও হতে হয়েছে ধরাশায়ী। পার্থ-এ প্রথম টেস্টটি জিতে ১-০ এগিয়ে যাওয়ার পরেও অ্যাডিলেড, মেলবোর্ন ও সিডনিতে হেরে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি (BGT) খুইয়েছে দল। এক দশক পর ভারতকে টেস্ট সিরিজে পরাজিত করেছে অস্ট্রেলিয়া। এই হতশ্রী পারফর্ম্যান্সের নেপথ্যে তারকাদের অফ ফর্মের পাশাপাশি ফিটনেসের অভাবকেও দুষছে বোর্ড।
Read More: IPL 2025: দিল্লী ক্যাপিটালসের নেতৃত্বে পাচ্ছেন না KL রাহুল, ফ্র্যাঞ্চাইজির পছন্দ এই তারকা ক্রিকেটার !!
কোহলির ফর্মূলাতেই ফিরছে BCCI-
সামনেই রয়েছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025)। আগামী মাসে দুবাইতে আইসিসি প্রতিযোগিতায় নামতে চলেছে ‘মেন ইন ব্লু।’ নিউজিল্যান্ড বা অস্ট্রেলিয়া সিরিজের (IND vs AUS) ব্যর্থতার প্রভাব সেখানে যাতে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে মরিয়া বিসিসিআই (BCCI)। তারকাদের উপর একাধিক বিধিনিষেধ চাপানোর পথে হাঁটছে তারা। শৃঙ্খলা ও ফিটনেস বিষয়ে কোনো রকম আপস করতে আর রাজী নয় দেশের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। বিদেশ সফরে স্ত্রী ও পরিবারদের কতদিন সঙ্গে রাখা যাবে সে সম্পর্কীত নতুন নির্দেশ জারি করেছে বোর্ড। দলীয় সংহতি বজায় রাখতে টিম বাসের ব্যবহারও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়েও নেওয়া হয়েছে কড়া অবস্থান। মাঠে তারকাদের ক্ষিপ্রতা বাড়াতে বিরাট কোহলি (Virat Kohli) জমানার ইয়ো-ইয়ো টেস্টকেও ফেরানোর কথা ভেবেছে বিসিসিআই।
বিরাট কোহলি অধিনায়ক থাকাকালীন ক্রিকেটারদের ফিটনেস নির্ধারণের জন্য ইয়ো-ইয়ো টেস্ট ব্যবহারের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলো ভারতীয় বোর্ড (BCCI)। এই পদ্ধিতিতে ২০ মিটার দূরত্বে দুটি ‘কোন’ রাখা হয়। একটি বিপ্ শব্দের পরে দৌড় শুরু করেন কোনো ক্রিকেটার। দ্বিতীয় বিপ্-এর আগে প্রথম ‘কোন’ থেকে দৌড় শুরু করে দ্বিতীয় ‘কোন’-এ পৌঁছতে হয় তাঁকে। এরপর তৃতীয় বিপ্-এর আগে ফের প্রথম ‘কোন’-এ ফেরত আসতে হয় তাঁকে। এইভাবে বিভিন্ন গতিতে মোট ২ কিলোমিটার দৌড়তে হয় ক্রিকেট তারকাদের। জাতীয় দলের আলোচনায় জায়গা করে নেওয়ার জন্য অন্তত ৮ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়াটি শেষ করতে হত ভারতীয় ক্রিকেটারদের। ফাস্ট বোলারদের ক্ষেত্রে কঠিনতর ছিলো নিয়ম। নূন্যতম ৮ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে ২ কিলোমিটার দৌড়তে হত তাঁদের।
বিতর্কের কেন্দ্রে ছিলো ইয়ো-ইয়ো টেস্ট-
বিসিসিআই (BCCI) যখন প্রথম এই ইয়ো-ইয়ো টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছিলো ফিটনেসের যোগ্যতামান নির্ধারণের ক্ষেত্রে, তখন উঠেছিলো বিতর্কের ঝড়। ২০১৮ সালে এই পরীক্ষায় পাস করতে না পারায় বাদ পড়েন মহম্মদ শামি ও অম্বাতি রায়ুডু। বোর্ডের (BCCI) তৎকালীন কার্যনির্বাহী সচিব অমিতাভ চৌধুরীই (Amitabh Chaudhry) এর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে চিঠি লিখেছেন ক্রিকেট অ্যাডভাইজারি কমিটিকে। বিভিন্ন সময়ে ইয়ো-ইয়ো টেস্টের দিকে আঙুল তুলেছেন কিংবদন্তি তারকারাও। সন্দীপ পাতিল, সুনীল গাওস্করের মত অনেকেই এই পরীক্ষাকে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার মাপকাঠি হিসেবে মানতে নারাজ। দিনকয়েক আগেও যুবরাজ সিং-এর (Yuvraj Singh) বাদ পড়া প্রসঙ্গে ইয়ো-ইয়ো টেস্টের উল্লেখ করে প্রকারান্তরে বিরাট কোহলিকে দুষেছেন রবিন উথাপ্পা। কিন্তু এত কিছুর পরেও ঘুরে দাঁড়াতে সেই ইয়ো-ইয়ো টেস্টকেই সেরা বাজি মনে করছে বোর্ড।