গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে জ্বলে উঠেছিলো তিলক বর্মা’র (Tilak Varma) ব্যাট। সেঞ্চুরিয়নে ৫৬ বলে ১০৭ রানের চমকপ্রদ ইনিংস খেলেন তিনি। সেদিন ৮টি চার ও ৭টি ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন হায়দ্রাবাদের তরুণ। স্ট্রাইক রেট ছিলো ১৯১.০৭। ঠিক তার পরের ম্যাচে জোহানেসবার্গের বাইশ গজেও তিন অঙ্কের মাইলস্টোন পেরিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। ৪৭ বলে অপরাজিত থাকেন ১২০ রান করে। ২৫৫.৩১ স্ট্রাইক রেট বজায় রেখেছিলেন তিলক (Tilak Varma)। মারেন ৯টি বাউন্ডারি ও ১০টি ছক্কা। ধুন্ধুমার ব্যাটার হিসেবে আন্তর্জাতিক আঙিনায় তাঁকে পরিচিত দিয়েছিলো প্রোটিয়া সিরিজ, তবে প্রয়োজনে যে লো স্কোরিং ম্যাচে ধৈর্য্যের পরীক্ষা দিয়ে দলকে সাফল্য এনে দিতেও তিনি যথেষ্ট দড়, তা গতকাল প্রমাণ করলেন তিলক। তাঁর ব্যাটে ভর করেই চেন্নাইতে ইংল্যান্ডকে হারালো ‘মেন ইন ব্লু।
Read More: IND vs ENG, 2ND T20I STATS REVIEW: চেপকে দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নিলো টিম ইন্ডিয়া, ভাঙলো মোট ৫ টি রেকর্ড !!
অসামান্য ব্যাটিং তিলক বর্মা’র-
গতকাল চেন্নাইয়ের চেপকে টসে জিতে প্রথম প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডকে ব্যাটিং-এর আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। স্পিন খেলতে সমস্যায় পড়লেন বাটলারের ৪৫, ব্রাইডন কার্সের ৩১ ও জেইমি স্মিথের ২২ রানের সৌজন্যে ১৬৫ অবধি পৌঁছে গিয়েছিলো সফরকারী দল। রান তাড়া করতে নামা ভারতের শুরুটা ভালো হয় নি। পাওয়ার-প্লে’তেই সাজঘরে ফেরেন দুই ওপেনার-অভিষেক শর্মা ও সঞ্জু স্যামসন। রান পান নি সূর্যকুমার যাদব’ও। ধ্রুব জুড়েল, হার্দিক পান্ডিয়ারাও গতকালের ম্যাচে দশের গণ্ডী পেরোতে পারেন নি। একটা সময় ৭৮ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে বসেছিলো টিম ইন্ডিয়া। খাদের কিনারে পৌঁছে যাওয়া দলকে লড়াইতে ফেরায় তিলক বর্মা’র (Tilak Varma) ব্যাট। প্রথমে ওয়াশিংটন সুন্দরের সাথে জুটি বেঁধে ও পরে কার্যত একাই ভারতকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেন তিনি।
তিন নম্বরে গতকাল ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিলক (Tilak Varma)। অপরপ্রান্তে পরপর উইকেট পড়লেও লড়াই থেকে সরে আসেন নি তিনি। উইকেট বাঁচাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্ষণাত্মক হন নি তরুণ ব্যাটার। বরং সুযোগ পেলেই হাঁকিয়েছেন বড় শট। চেন্নাইতে তিলকের তাণ্ডবের শিকার হয়েছেন ইংল্যান্ডের পেস তারকা জোফ্রা আর্চার। দুই ওভারে যথাক্রমে ১৫ ও ১৯ রান খরচ করেন তিনি। ওয়াশিংটন-অক্ষররা ফেরার পর সিঙ্গল নিয়ে স্কোরবোর্ড সচল রাখতে পারছিলেন না তিলক। তা সত্ত্বেও অহেতুক বড় শট খেলতে গিয়ে আউট হন নি তিনি। বরং শেষ অবধি টেনে নিয়ে গিয়েছেন খেলাকে। ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এক অসামান্য কভার ড্রাইভে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচ ‘ফিনিশ’ করেই মাঠ ছাড়েন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের মত ১৯১ বা ২৫৫ নয়, ১৩১ স্ট্রাইক রেট রেখেও যে ম্যাচ জেতানো যায় তা বুঝিয়ে দিলেন তিলক।
টি-২০ স্বপ্ন ভাঙছে আইয়ার-রাহুলের-
মাত্র ২২ বছর বয়স তিলক বর্মা’র (Tilak Varma)। এত অল্প বয়সে যে পরিণতিবোধের পরিচয় তিনি দিয়েছেন তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছে ক্রিকেটদুনিয়া। চেপক জয়ের নায়ক নিজে অবশ্য কৃতিত্ব দিচ্ছেন কোচ গম্ভীরকে। ম্যাচের পরিস্থিতি বুঝে ব্যাটিং করেছেন, জানিয়েছেন তিনি। দেশে হোক বা বিদেশে-এই মুহূর্তে টি-২০ দলে তিলক যে অপরিহার্য্য তা পরিষ্কার গতকালের ইনিংসের পর। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর যশস্বী, শুভমান গিলরা কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে ফিরলে ওপেনিং স্লট নিয়ে দড়ি-টানাটানি চলতে পারে। কিন্তু অপরিবর্তিতই থাকছে মধ্যক্রম। হায়দ্রাবাদের তরুণের উত্থানে চাপ বেড়েছে শ্রেয়স আইয়ার (Shryeas Iyer) ও কে এল রাহুলের (KL Rahul) উপর। দুজনেই লম্বা সময় টি-২০ পরিকল্পনার বাইরে রয়েছেন। ইংল্যান্ড সিরিজে যদি মিডল অর্ডারে শূন্যতা তৈরি হত তাহলে আসন্ন ম্যাচগুলিতে হয়ত ভেবে দেখা হয় তাঁদের কথা। কিন্তু তা না হওয়ায় দীর্ঘায়িতই হচ্ছে তাঁদের প্রত্যাবর্তনের প্রতীক্ষা।