ঈশান কিষণ (Ishan Kishan) ও পৃথ্বী শ- দুই তরুণ তুর্কি’ই ভারতীয় ক্রিকেটমহলের পরিচিত নাম। আইপিএল হোক বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, ব্যাট হাতে বারবার জ্বলে উঠতে দেখা গিয়েছে তাঁদের। দু’জনকেই ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কেরিয়ারের শুরুটা আশা জাগিয়েই করেছিলেন তাঁরা। পৃথ্বী (Prithvi Shaw) ২০১৮ সালে অধিনায়ক হিসেবে ভারতকে জেতান অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ। ২০১৬ সালে নেতা হিসেবে অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছিলেন ঈশান’ও। যদিও ট্রফি জেতেন নি। তবে সিনিয়র ক্রিকেটে টিম ইন্ডিয়াকে সাফল্য এনে দিয়েছেন তিনি। ২০২৩-এ এশিয়া কাপ (Asia Cup) জয়ের অন্যতম কারিগর ছিলেন ব্যাট হাতে। সাফল্যের এভারেস্ট জয়ের দিকে দৃপ্ত পায়ে এগোতে থাকা দুই তরুণ-এর যাত্রাপথের পুরোটা মসৃণ অবশ্য হয় নি। মুখোমুখি হয়েছেন ঝড়ঝাপটারও। বাদ পড়তে হয়েছে ভারতীয় দল থেকে।
Read More: ঈশান কিষানের জন্য কাল হলো এই খেলোয়াড়, প্রমান দিলো বন্ধু নামে কলঙ্ক !!
ঈশান কিষণের প্রত্যাবর্তন অনিশ্চিত-
ডিসেম্বর মাস থেকে ভারতীয় দলের জায়গা পাচ্ছেন না ঈশান কিষণ (Ishan Kishan)। চলছে বিসিসিআই-এর সাথে তাঁর ঠাণ্ডা যুদ্ধ। কর্মকর্তাদের ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেওয়ার নির্দেশ অগ্রাহ্য করার শাস্তিও পেয়েছেন তিনি। ২০২৩-২৪ মরসুমের জন্য যে কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছে তা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে ঝাড়খণ্ডের ক্রিকেটারকে। আপাতত নির্বাচকদের রেডারে তিনি যে নেই তা বেশ ভালোই বুঝতে পারছেন ঈশান (Ishan Kishan)। বেশ কয়েক মাস গোটা ঘটনাটি নিয়ে চুপ ছিলেন তিনি। অবশেষে সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে মুখ খুলেছেন তিনি। গোটা অধ্যায়টা তাঁর কাছে যে বেশ হতাশাজনক, তা স্পষ্ট করেছেন ঈশান।
‘মানসিক অবসাদ’ প্রশ্নে অকপট ক্রিকেটতারকা বলেছেন, “আমি রান পাচ্ছিলাম, কিন্তু হঠাৎই নিজেকে রিজার্ভ বেঞ্চে আবিষ্কার করি। এই জিনিসগুলো দলগত খেলায় হয়েই থাকে। কিন্তু আমি ক্লান্ত বোধ করছিলাম। তার মানে কিছু তো সমস্যা ছিলোই। আমি সেরা অবস্থায় ছিলাম না। তাই একটা বিরতি নেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু আমার পরিবার ও কাছের কয়েকজন ছাড়া কেউই কারণটা বুঝলেন না।” ইঙ্গিতে যে বিসিসিআই-কেই ঈশান (Ishan Kishan) বিঁধেছেন তা স্পষ্ট। তাঁর হতাশা প্রকাশের ভাষা আবার বোর্ডের কর্মকর্তাদের রোষের কারণ হয়ে দাঁড়ায় কিনা তা নিয়ে আপাতত চলছে চর্চা।
আন্তর্জাতিক আঙিনার বাইরেই পৃথ্বী-
২০১৮ সালে অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পরেই লাইমলাইটে জায়গা করে নিয়েছিলেন মুম্বইয়ের পৃথ্বী শ (Prithvi Shaw)। সেই বছর সিনিয়র জাতীয় দলে সুযোগ পান তিনি। কেরিয়ারের প্রথম টেস্টেই নজর কাড়েন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শতরান করে জায়গা করে নেন মহম্মদ আজহারউদ্দিন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রোহিত শর্মাদের পাশে। কিন্তু সাফল্যের স্বাদ দীর্ঘস্থায়ী হয় নি তাঁর জন্য। ২০২০ সালের বর্ডার-গাওস্কর সিরিজে ব্যাটিং ব্যর্থতার পরেই টেস্ট দল থেকে বাদ পড়েন তিনি। ২০২১ সালে অবধি ওডিআই ও টি-২০তে টিম ইন্ডিয়ার অংশ ছিলেন। কিন্তু তারপর ছিটকে গিয়েছেন সীমিত ওভারের ক্রিকেট থেকেও। এখনও অবধি ৫টি টেস্টে ৩৩৯ রান, ৬টি একদিনের ম্যাচে ১৮৯ রান ও ১টি টি-২০তে ০ রান করেছেন তিনি। ২০২৩-এ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজের স্কোয়াডে থাকলেও মাঠে নামতে পারেন নি।
ইংল্যান্ডের মাঠে যোগ্যতার প্রমাণ দিচ্ছেন পৃথ্বী-
ভারতীয় দল থেকে ব্রাত্য বহুদিন। রঞ্জি ট্রফি, বিজয় হাজারে ট্রফি বা সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ভালো পারফর্ম করেও মেলে নি দলে ফেরার ছাড়পত্র। যোগ্যতার প্রমাণ দিতে আপাতত ইংল্যান্ডের মাটিতে পা রেখেছেন পৃথ্বী শ (Prithvi Shaw)। তাদের ঘরোয়া লিস্ট-এ টুর্নামেন্ট রয়্যাল লন্ডন ওয়ান ডে কাপে নিয়মিত মাঠে নামছেন নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে। গত বছরও নর্দাম্পটনশায়ারের হয়ে খেলেছিলেন এই টুর্নামেন্টে। সমারসেটের বিপক্ষে একটি দ্বিশতক ও ডারহামের বিরুদ্ধে একটি শতরান করলেও হাঁটুতে গুরুতর চোট লাগায় প্রতিযোগিতার মাঝপথেই ফিরে আসতে হয় তাঁকে। এবার সম্পূর্ণ ফিট থেকে ব্যাট হাতে সাফল্য পাওয়াই লক্ষ্য তরুণ তুর্কি’রা। শুরুটা বেশ ভালোই করেছেন। প্রথম ম্যাচে ৯ করে আউট হলেও পরের তিনটি ইনিংসে করেছেন যথাক্রমে ৪০, ৭৬ ও ৯৭।