BCCI: এই মুহূর্তে ভারতীয় দল রয়েছে ইংল্যান্ডে। বেন স্টোকসদের বিরুদ্ধে পাঁচটি টেস্ট খেলবে তারা। ৪ঠা জুলাই শেষ হচ্ছে সেই সিরিজ। তারপর দেশে ফিরে দিনকয়েকের বিশ্রামের পর বাংলাদেশ উড়ে যাওয়ার কথা ছিলো শুভমান গিল, কে এল রাহুলদের। মীরপুর ও চট্টগ্রামে তিনটি একদিনের ম্যাচ ও তিনটি টি-২০ ম্যাচের সূচিও ইতিমধ্যে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছলো। কিন্তু স্থগিত হয়ে গেলো সেই সফর। দিনকয়েক আগেই সংবাদমাধ্যমকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (BCB) এক কর্তা জানিয়েছিলেন যে পড়শি দেশে পা রাখার ব্যাপারে এখনও কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে সবুজ সংকেত পায় নি ভারতীয় ক্রিকেট সংস্থা (BCCI)। তবে তাঁরা যে সিরিজ আয়োজন নিয়ে আশাবাদী তাও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষমেশ মিটলো না জটিলতা। বাংলাদেশে বাড়তে থাকা ভারতবিদ্বেষ ও দুই দেশের রাজনৈতিক সম্পর্কের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছে ক্রিকেটমহল।
Read More: অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হলো ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ, রাজনৈতিক টানাপোড়নে সিদ্ধান্ত BCCI’র !!
হচ্ছে না ভারত-বাংলাদেশ সিরিজ-

অগস্টের ১৭ থেকে ২৩ তারিখের মধ্যে তিনটি একদিনের ম্যাচ হওয়ার কথা ছিলো। আর ২৬, ২৯ ও ৩১ অগস্ট ছিলো তিনটি টি-২০ ম্যাচ। তবে সেগুলি যে আর হচ্ছে না তা স্পষ্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (BCB) সিদ্ধান্তে। সোমবার ভারত বনাম বাংলাদেশ (IND vs BAN) সিরিজ-সহ ২০২৫-২৭ ক্রিকেট চক্রের সম্প্রচার সত্ত্ব বিক্রয়ের নিলাম হওয়ার কথা ছিলো। কিন্তু তা অনির্দিষ্টকালের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এই মুহূর্তে কেবল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজের সত্ত্ব বিক্রি করতে চলেছে বিসিবি, খবর সংবাদমাধ্যম সূত্রে। “ভারত বনাম বাংলাদেশ সিরিজের দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয় নি। ওরা (বিসিসিআই) জানিয়েছে যে অগস্টে ওদের পক্ষে আসা কঠিন। এটা এফটিপি (ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রাম) এর অন্তর্গত,” সংবাদমাধ্যম ক্রিকবাজকে জানিয়েছেন এক বিসিবি কর্তা।
এই প্রসঙ্গে কোনো বিবৃতি এখনও পর্যন্ত জারি করে নি বিসিসিআই (BCCI)। তবে ভারতীয় বোর্ডের এক কর্তা অবশ্য নাম না প্রকাশের শর্তে ক্রিকবাজকে জানিয়েছেন যে এক সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশ সফর নিয়ে নেওয়া হতে পারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। দিনকয়েকের মধ্যেই একটি যৌথ বিবৃতি জারি করতে পারে দুই দেশের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। তবে ভারতের অন্দরে বাংলাদেশ সফর নিয়ে দেখা বিরূপ মনোভাবই চোখে পড়েছে। গত জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর দুই দেশের সম্পর্কের যথেষ্ট অবনতি হয়েছে গত কয়েক মাসে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশে রোহিত-কোহলিরা যথেষ্ট নিরাপত্তা পাবেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। সূত্রের খবর যে কূটনৈতিক কারণেই পড়শি দেশে যাওয়ার ব্যাপারে আপত্তি তুলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। অদূর ভবিষ্যতেও এই জটিলতা কাটার বিশেষ সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।
ভারতের সিদ্ধান্তে চাপে বাংলাদেশ-

এমনিতেই অর্থনৈতিক দিক থেকে বেশ সঙ্কটে বাংলাদেশ ক্রিকেট সংস্থা। দিনকয়েক আগে জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে টাইগার্সদের টেস্ট ম্যাচের জন্য কোনো সম্প্রচারকারী সংস্থা না পাওয়া যাওয়ায় দেশের সরকারী টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়েছিলো তাদের টেস্ট ম্যাচে। অগস্টে ভারতীয় দলের বাংলাদেশ সফর তাদের কোষাগারে কিছু অর্থ যোগ করতে পারত। কিন্তু বিসিসিআই (BCCI) বেঁকে বসার ফলে বেশ চাপে বিসিবি। সম্প্রচার সত্ত্ব বিক্রির চুক্তিতে বেশ কিছু বদল করেছে তারা। তবুও বিশেষ আগ্রহ দেখা যায় নি নাজমুল হোসেন শান্ত, লিটন দাসদের ম্যাচ নিয়ে। সামনেই রয়েছে পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ। কোন চ্যানেল বা কোন ওটিটিতে খেলা দেখা যাবে তা নিশ্চিত নয় এখনও। অতীতে ভারত-পাক সম্পর্কের অবনতির পর ক্রিকেটদুনিয়ায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলো পাকিস্তান। বাংলাদেশের ভবিতব্যও কি এক? ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে সেই আশঙ্কা।