দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে দশটা বছর। ২০১৩ সালে শেষবার ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিলো ভারতীয় দল। এরপর থেকে আইসিসি আয়োজিত কোনো প্রতিযোগিতার সাফল্যের মুখ দেখে নি তারা। বারবার তীরে এসে ডুবেছে তরী। ২০১৪ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ, ২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০২১ সালের বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের BCCIফাইনালে হারতে হয়েছিলো ফাইনালে গিয়ে। এছাড়াও ২০১৫ ও ২০১৯ সালের একদিনের বিশ্বকাপ, ২০১৬ ও ২০২২-এর টি-২০ বিশ্বকাপে বিদায় নিতে হয়েছে সেমিফাইনাল থেকে। অধিনায়ক বদলের পথে হেঁটেছে BCCI। বিরাট কোহলিকে (Virat Kohli) সরিয়ে নেতা করা হয়েছে রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma)। তবুও আসে নি সাফল্য। দীর্ঘ হতাশার চিত্রটা বদলের খানিক সুযোগ চলে এসেছিলো টিম ইন্ডিয়ার সামনে ২০২৩-এ। ফের একবার বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলো দল। কিন্তু ইংল্যান্ডের কেনিংটন ওভালেও নয়া ভোরের সন্ধান পেলো না ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ২০৯ রানের ব্যবধানে হেরে দ্বিতীয়বার হাতছাড়া হলো লাল বলের ক্রিকেটে বিশ্বসেরা হওয়ার সুযোগ।
Read More: Ashes 2023: রোমাঞ্চকর টেস্টের উত্তাপে জল ঢালবে বৃষ্টি? এজবাস্টনে পঞ্চম দিনে আশাহত করছে আবহাওয়া !!
মেয়েদের ক্রিকেটেও সঙ্গী হতাশা-

ছেলেদের ক্রিকেটের মত মেয়েদের খেলাতেও ব্যর্থতার ছবিটা স্পষ্ট। বিরাট-রোহিতদের মতই হরমনপ্রীত কৌর (Harmanpreet Kaur), স্মৃতি মন্ধানারাও (Smriti Mandhana) একের পর এক টুর্নামেন্টে ফাইনাল বা সেমিফাইনাল থেকে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। ২০১৭ একদিনের বিশ্বকাপ ফাইনাল, ২০২০ টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলো ভারত। প্রথমবার হারতে হয় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে, আর দ্বিতীয়বার স্বপ্ন ভাঙে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। এছাড়া কমনওয়েলথ গেমসেও ফাইনাল ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হেরে রূপো নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় টিম ইন্ডিয়াকে। এই ছবি বদলায় নি ২০২৩-এর টি-২০ বিশ্বকাপেও। সেমিফাইনাল অবধি দাপটের সাথে এগিয়েও হারতে হয় অজিদের বিরুদ্ধে। অস্ট্রেলিয়ার ছুঁড়ে দেওয়া ১৭৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতের মেয়েরা থামেন ১৬৭ রানে। ৫২ রান করেন অধিনাইয়ক হরমনপ্রীত (Harmanprewet Kaur)। তাঁর দুর্ভাগ্যজনক রান-আউটেই শেষ হয় ভারতের ফাইনাল খেলার সুযোগ। ব্যর্থতার চিত্র বদল ঘটানোর লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলো বিসিসিআই। গ্যারি কার্স্টেনকে (Gary Kirsten) স্মৃতি-হরমনপ্রীতদের কোচ করার ভাবনা ছিলো তাদের।
BCCI-এর আবেদনে সাড়া দিলেন না গ্যারি-

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড মেয়েদের কোচ হিসেবে দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার গ্যারি কার্স্টেনকে (Gary Kirsten) । ক্রিকেটার হিসেবে বেশ চমকপ্রদ তাঁর কেরিয়ার। ৩১টি আন্তর্জাতিক শতরান রয়েছে। খেলেছেন ১০১টি টেস্ট ম্যাচ। কোচ হিসেবেও সাফল্যের সর্বোচ্চ শিখর ছুঁয়েছেন তিনি। ২০০৮ সালে ভারতীয় পুরুষ দলের কোচ করা হয়েছিলো তাঁকে। ২৮ বছর পর কার্স্টেনের (Gary Kirsten) হাত ধরেই একদিনের বিশ্বকাপ জেতে টিম ইন্ডিয়া। ২০১১ সালের ২ এপ্রিল তাঁকে কাঁধে নিয়ে মাঠ প্রদক্ষিণ করেছিলেন ‘মেন ইন ব্লু’ ক্রিকেটাররা। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা জাতীয় দলের কোচিং করানোরও অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। গুজরাত টাইটান্স (GT) কোচিং স্টাফের সদস্য হিসেবে ২০২২ সালে জিতেছেন আইপিএল।
কার্স্টেনের হাত ধরে মহিলা ক্রিকেটের পাতায় সাফল্যের অধ্যায় যোগ করতে চেয়েছিলো বিসিসিআই। তবে জনপ্রিয় ক্রিকেট পরিসংখ্যান ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোর খবর অনুযায়ী তিনি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রস্তাবে রাজী হন নি। আইপিএল ও অন্যান্য যে সকল দলের সঙ্গে তিনি যুক্ত, সেই কাজই আপাতত চালিয়ে যেতে আগ্রহী তিনি। বর্তমানে ভারতীয় মহিলা দলের হেড কোচ পদটি শূন্য রয়েছে। ব্যাটিং কোচের ভূমিকায় রয়েছেন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার হৃষিকেশ কানিতকর।