Asia Cup 2025: এশিয়া কাপের ইতিহাসে এই প্রথম ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিলো ভারত ও পাকিস্তান। ব্যাট-বলের দ্বৈরথ ছাপিয়ে দুবাইয়ের মাঠে মুখ্য হয়ে উঠলো স্নায়ুযুদ্ধই। যে পাকিস্তান গ্রুপ পর্ব বা সুপার ফোরে পাত্তাই পায় নি ভারতের বিরুদ্ধে, তারাই আজ যেন জাঁকিয়ে বসেছিলো বাইশ গজে। ব্যাটিং হোক বা বোলিং-দুই বিভাগেই একটা সময় কার্যত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ কিন্তু খাদের কিনারে পৌঁছে যাওয়ার পরেও আত্মবিশ্বাস হারায় নি তারা। সম্পূর্ণ টপ-অর্ডার যখন সাজঘরে, তখন ক্রিজে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে আজ দেখা গেলো তিলক বর্মা’কে (Tilak Varma)। গোটা টুর্নামেন্টে অভিষেক শর্মা, কুলদীপ যাদবদের ছায়ায় খানিক ঢাকা পড়ে ছিলেন হায়দ্রাবাদের তরুণ। কিন্তু আজ খেতাবী যুদ্ধে নায়ক তিনিই। ৬৯* রানের ইনিংস খেলে দেশকে জেতালেন নবম এশিয়া কাপ (Asia Cup 2025)।
Read More: Asia Cup 2025: ফাইনালে ‘ফ্লপ’ অভিষেক, ইনিংসের শুরুতেই সাজঘরে ফিরলেন ভারতীয় ওপেনার !!
ধস সামলে উজ্জ্বল তিলক-

গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ইনিংস শুরু করেছিলেন অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma)। সুপার ফোরের ম্যাচে শাহীন শাহ আফ্রিদি’কে প্রথম বলেই উড়িয়ে দিয়েছিলেন মাঠের বাইরে। কিন্তু আজ ‘ল অফ অ্যাভারেজ’ তাড়া করে বেড়ালো তাঁকে। ছন্দে থাকা ওপেনার দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট উপহার দেন ফাহিম আশরাফ’কে (Faheem Ashraf)। স্লোয়ার বলে ব্যাট চালাতে গিয়ে ভুল করে ফেলেছিলেন তিনি। ক্যাচ ধরতে কোনো ভুল করেন নি হারিস রউফ। ক্রিজে বেশীক্ষণ টেকেন নি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব’ও (Suryakumar Yadav)। গত রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তিনি করেছিলেন শূন্য। আজও ১ রানের বেশী এগোতে পারেন নি মিস্টার ৩৬০। শাহীন আফ্রিদির বলে ধরা পড়েন সলমন আলি আঘা’র হাতে। সাফল্য পান নি শুভমান গিল’ও। ফাহিমের দ্বিতীয় শিকার হন তিনি। ১০ বলে ১২ করে ফেরেন টিম ইন্ডিয়ার সহ-অধিনায়ক।
২০ রানের মধ্যে ৩ উইকেট খুইয়ে বসেছিলো ভারত। শেষমেশ ‘অঘটন’ কি ঘটতে চলেছে? আতঙ্ক গ্রাস করেছিলো সমর্থকদের। শেষমেশ সঙ্কটমোচন হয়ে ওঠেন তিলক বর্মা (Tilak Varma)। সঞ্জু স্যামসনকে (Sanju Samson) সাথে নিয়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৫৭ রান। ২১ বলে ২৪ করে সঞ্জু ফেরার পর তিনি জুটি বাঁধেন শিবম দুবে’র সঙ্গে। কেন বারবার মুম্বইয়ের দীর্ঘদেহী অলরাউন্ডারকে একাদশে জায়গা দিচ্ছেন গম্ভীর? দিনকয়েক আগেও প্রশ্ন তুলেছিলেন সমালোচকেরা। উত্তরটা আজ নিশ্চয়ই পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা। কঠিন পরিস্থিতিতে প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটেন তিনিই। দলের অন্যেরা যখন ১০০ ব ১২০’র স্ট্রাইক রেট বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন, তখন তিনি ব্যাটিং করেছেন প্রায় ১৫০ স্ট্রাইক রেটে। অষ্টাদশমতম ওভারের শেষ বলে শিবমের (Shivam Dube) মারা ছক্কাটিই চাপ কমায় টিম ইন্ডিয়ার উপর থেকে।
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ হাসি ভারতের-

উনিশতম ওভারের শেষ বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হন শিবম (Shivam Dube)। ২২ বলে ৩৩ করে ফাহিম আশরাফের শিকার হন তিনি। তিলকের সাথে জুটি বেঁধে স্কোরবোর্ডে ৬০ রান যোগ করার পর তিনি যখন সাজঘরে ফিরছেন, তখনও শেষ ছয় বলে ১০ রান চাই টিম ইন্ডিয়ার। মন্থর পিচে সেই রান তোলা খুব একটা সহজ হবে না বলেই মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। পাক অধিনায়ক সলমন আলি আঘা বল তুলে দেন হারিস রউফের হাতে। প্রথম বল বোলারের মাথার উপর দিয়ে চিপ করে দুই রান নেন তিলক। ৫ বলে ৮ রান, দাঁড়িয়েছিলো সমীকরণ। এরপরের বলে ঝলসে ওঠে তিলকের ব্যাট। দুর্দান্ত পুল শটে বল পাঠিয়ে দেন মাঠের বাইরে। জয় কার্যত নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো তখনই। ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে সিঙ্গল নিয়ে রিঙ্কু সিং-কে স্ট্রাইক দেন তিনি। চতুর্থ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অগণিত ভারতীয় সমর্থকের মুখে হাসি ফোটান উত্তরপ্রদেশের ফিনিশার।