কিংবদন্তি পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করা সবসময় সহজ হয় না সন্তানের জন্য। কিন্তু সেই কঠিন পথ হাঁটার সাহস দেখিয়েছেন অর্জুন তেন্ডুলকর (Arjun Tendulkar)। পিতা শচীন তেন্ডুলকরের মতই ক্রিকেটকে বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। বাইশ গজের দুনিয়ায় নিজের স্বতন্ত্র পরিচয় গড়ে তুলতে সচেষ্ট হয়েছেন তিনি। সর্বকালের সেরা ব্যাটার হিসেবে পরিচিত শচীন। অর্জুন ব্যাট নয় বরং বল’কে করে তুলেছেন নিজের প্রধান অস্ত্র। তবে ব্যাটিং-এও যে তিনি সাবলীল তার প্রমাণ ইতিমধ্যেই দিয়েছেন তিনি। স্বপ্ন ছিলো মুম্বইয়ের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার। কিন্তু পর্যাপ্ত সুযোগ পান নি। আশাহত না হয়ে সুযোগের সন্ধানে পাড়ি দিয়েছেন পাশের রাজ্য গোয়াতে। নতুন জার্সিতেই জাত চিনিয়েছেন জুনিয়র তেন্ডুলকর। রঞ্জি অভিষেকেই করেছেন শতরান।
Read More: IPL 2025: গম্ভীরের সিদ্ধান্তে লাভবান KKR, সস্তায় এই তারকাকে দলে রাখছে নাইট বাহিনী !!
বাবার মতই অভিষেকে শতরান অর্জুনের-
১৯৮৮ সালে মুম্বইয়ের হয়ে রঞ্জি ট্রফিতে অভিষেক হয়েছিলো ১৫ বছর বয়সী শচীন তেন্ডুলকরের (Sachin Tendulkar)। ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে শতরান করে নিজের আবির্ভাবের বার্তা ক্রিকেটজগতের সামনে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। এরপর প্রায় আড়াই দশক ব্যাট হাতে রাজত্ব করেছেন তিনি। হয়ে উঠেছেন ‘মাস্টার ব্লাস্টার’, টেস্ট ও ওডিআই-তে সর্বোচ্চ রানের মালিক। পিতার মতই পুত্র অর্জুন’ও (Arjun Tendulkar) রঞ্জি অভিষেকে শতরানের অনন্য রেকর্ড স্থাপন করেছিলেন ২০২২-২৩ মরসুমে। গোয়ার হয়ে রাজস্থানের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। পোরভরিমের মাঠে উপস্থিত দর্শকেরা সেদিন সাক্ষী থেকেছিলো এক নতুন তারার জন্মের। অনিকেত চৌধুরী, কমলেশ নাগারকোটি, মানব সুতারদের মত বোলার ছিলেন রাজস্থানের জার্সিতে। কিন্তু অর্জুনকে লক্ষ্যভেদ করা থেকে রুখতে পারেন নি কেউই।
টসে জিতে প্রথম বোলিং বেছে নিয়েছিলো রাজস্থান। দুই ওপেনার সুমিরণ আমনকার ও এ এস দেশাই দ্রুত ফেরেন। অর্জুন (Arjun Tendulkar) মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছিলেন সাত নম্বরে। সুয়ষ প্রভুদেশাইয়ের (Suyash Prabhudessai) সাথে জুটি বেঁধে গোয়াকে রানের পাহাড়ে চড়তে সাহায্য করেন শচীন পুত্র। পিতা শচীন ছিলেন ডান হাতি ব্যাটার। কিন্তু বোলিং অলরাউন্ডার অর্জুন (Arjun Tendulkar) ব্যাটিং করেন বাম হাতে। প্রতিপক্ষের যাবতীয় আক্রমণ সামলে তিনি ছুঁয়ে ফেলেন তিন অঙ্কের মাইলস্টোন। শেষমেশ কমলেশ নাগারকোটির বলে যখন আউট হন, তখন তাঁর নামের পাশে ২০৭ বলে ১২০ রান। ১৬টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজিয়েছিলেন তিনি। ২২১ রানের জুটি গড়েন সুয়শ প্রভুদেশাইয়ের সাথে। অর্জুনের মতই তিন অঙ্কের গণ্ডী পেরোন সুয়ষ’ও। তাঁর ২১২ রানের ইনিংস গোয়াকে পৌঁছে দেয় ৫৪৭-এ।
আইপিএলে নয়া দল পেতে পারেন অর্জুন-
২০২১ সাল থেকে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের আইপিএল স্কোয়াডের অংশ অর্জুন তেন্ডুলকর (Arjun Tendulkar)। প্রথম দুই বছর কেবল রিজার্ভ বেঞ্চেই সময় কেটেছে তাঁর। ২০২৩-এ প্রথম মেলে মাঠে নামার সুযোগ। জসপ্রীত বুমরাহ, জোফ্রা আর্চাররা চোটের কারণে ছিটকে যাওয়ায় পেসার হিসেবে খেলেন তিনি। কিন্তু দাগ কাটতে পারেন নি। মাত্র ৪ ম্যাচে সুযোগ পান। ৩টি উইকেট পেলেও ইকোনমি ছিলো ৯-এর বেশী। পরে ক্রিস জর্ডান, আকাশ মাধওয়ালদের উপর আস্থা রাখে ফ্র্যাঞ্চাইজি। একাদশ থেকে বাদ দেওয়া হয় অর্জুনকে (Arjun Tendulkar)। ২০২৪-এ মাত্র ১টি ম্যাচে তাঁকে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সামনে রয়েছে ২০২৫ আইপিএলের মেগা অকশন। সূত্রের খবর যে রিলিজ চেয়ে নিতে পারেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটে যেমন সুযোগের সন্ধানে মুম্বই থেকে গোয়া গিয়েছেন, তেমন আইপিএল নিলামে অংশ নিয়েও মুম্বই থেকে অন্য কোনো দলে যেতে পারেন জুনিয়র তেন্ডুলকর।