ঘরের মাঠে বিশ্বজয়ের হাতছানি ছিলো টিম ইন্ডিয়ার (Team India) সামনে। টানা দশ ম্যাচ জিতে বিশ্বকাপের ফাইনালে পা রেখেছিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma), বিরাট কোহলিরা। বারো বছর পর খেতাব জয়ের স্বপ্নে বিভোর ছিলেন সমর্থকেরা। আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম ফাইনালের দিন পরিপূর্ণ ছিলো কানায় কানায়। কিন্তু ঘরের মাঠের সুবিধা, বিপুল জনসমর্থনকে পাশে পাওয়ার পরেও হতাশাই সঙ্গী হলো টিম ইন্ডিয়ার (Team India)। গত দশ বছরে বেশ কয়েকবার আইসিসি প্রতিযোগিতার ফাইনাল বা সেমিফাইনাল থেকে তারা ফিরেছে খালি হাতে। গত ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের মাঠেও মিললো পরাজয়ই। গ্যালারিতে উপস্থিত ৯৩ হাজার দর্শককে চুপ করিয়ে রেখে নিজেদের ষষ্ঠ বিশ্বকাপ জিতে নিলো অস্ট্রেলিয়া। দুরন্ত ছন্দে থাকা ভারতীয় ব্যাটিং-এর রথের চাকা বসলো ফাইনালের দিনেই। আর তাতেই বেসামাল ‘মেন ইন ব্লু।’
বড় ম্যাচগুলিতে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) বারবার মুখ থুবড়ে পড়ার নেপথ্যে কি? প্রশ্নটা আগেও উঠেছে বারবার। এবারের বিশ্বকাপ ফাইনালের পরেও জোরালো ভাবে ফিরে এসেছে তা। প্রায় এক মাস কেটে গেলেও বিশেষজ্ঞরা এখনও এই জটিল গোলকধাঁধার সমাধানের প্রচেষ্টায় ব্যপৃত। অনেকেই মানসিক কাঠিন্যের কথা বলছেন। জানাচ্ছেন যে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) ক্রিকেটাররা বড় মঞ্চের চাপ সামলাতে পারছেন না। ভেঙে পড়ছেন। আর তাতেই জুটছে লাগাতার হতাশা। অনেকে আবার অতিরিক্ত প্রত্যাশার চাপ’কে ব্যর্থতার কারণ বলে ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। তবে আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতের খারাপ ফলাফলের জন্য প্রত্যাশার চাপ বা স্নায়ু ধরে রাখার অপারগতার উপর দোষ চাপাতে রাজী নন প্রাক্তন ক্রিকেটার অজয় জাদেজা (Ajay Jadeja)। তাঁর মতে একাদশ নিয়ে যে পরীক্ষানিরীক্ষা গত কয়েক বছর ধরে করছে টিম ম্যানেজমেন্ট, তাই ফিরছে ব্যুমেরাং হয়ে।
Read More: ভারতীয় ভক্তদের জন্য দুঃসংবাদ, দ্বিতীয় জসপ্রীত বুমরাহ হিসাবে পরিচিত এই খেলোয়াড় এখন দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের বাইরে !!
ঈশান কিষণ সুযোগ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ জাদেজা-
২০২২-এর টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup 2022) সেমিফাইনালে ভারত ১০ উইকেটের ব্যবধানে হেরেছিলো ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে। সেই পরাজয়ের পরেও দল নির্বাচনের দিকে আঙুল তুলেছিলেন অজয় জাদেজা। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে টিম ইন্ডিয়াকে (Team India) তুলোধোনা করেছিলেন রোটেশন পলিসি’র জন্য। বিভিন্ন সিরিজে বিভিন্ন ক্রিকেটারদের সুযোগ দেওয়ার যে নীতি ভারত নিয়েছে তা আদপে ক্ষতি করেছে দলের। তেমনটাই জানিয়েছিলেন জাদেজা (Ajay Jadeja)। কোনো নির্দিষ্ট দলের মধ্যে যে ‘বন্ডিং’ থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন, তা তৈরি হওয়ার সময়টাই ভারতের রোটেশন পলিসির জন্য পাওয়া যাচ্ছে বলেই মত ছিলো তাঁর। অজয় জাদেজা (Ajay Jadeja) আঙুল তুলেছিলেন অধিনায়ক রোহিতের (Rohit Sharma) দিকেও। ‘ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্টের’ কারণে ২০২২-এ একাধিক সিরিজ খেলেন নি রোহিত। যার ফলাফল বিশ্বকাপ বিপর্যয়, জানিয়েছিলেন জাদেজা।
২০২৩-এর ওডিআই বিশ্বকাপের (ICC World Cup 2023) ফাইনালে পরাজয়ের পরেও ভারতের রোটেশন নীতি’কে একহাত নিলেন তিনি। প্রাক্তন ক্রিকেটার এক সাক্ষাৎকারে জানান ভারতে নিরন্তর ট্রায়াল চলতে থাকে খেলোয়াড়দের। তাঁরা নির্বাচিত হন না, বরং তাঁদের ছেঁটে ফেলা হয়। ঈশান কিষণের উদাহরণ টেনে আনেন তিনি। চাঁচাছোলা ভাষায় জাদেজার (ICC World Cup 2023) মন্তব্য, “যা হয়েছে ভুলে যান। আমাদের এগিয়ে চলা উচিৎ। বিশ্বকাপের ঠিক পরে আমরা অস্ট্রেলিয়া সিরিজ খেললাম। সেখানে সুযোগ’ই দিলাম না ঈশান কিষণ’কে। ও গোটা বিশ্বকাপে মাত্র দুটো ম্যাচ খেললো, তারপর অস্ট্রেলিয়া সিরিজে ওকে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হলো।” এরপর বোর্ডের উদ্দেশ্যে তাঁর প্রশ্ন, “আপনারা কি ট্রায়ালই নিতে থাকবেন? কতজনকে শেষ দুই বছরে সুযোগ দিয়ে দেখা গিয়েছে? ভারতীয় ক্রিকেটে এটাই সমস্যা। এখানে সিলেকশন হয় না, রিজেকশন হয়।”