Afro-Asia Cup: এক প্রান্তে যখন ব্যাটিং করছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli), নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে তখন দাঁড়িয়ে বাবর আজম। আবার নতুন বল হাতে জসপ্রীত বুমরাহ’র সাথে জুটি বাঁধছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি-নাহ! কোনো ভিডিও গেম নয়, আদতেই এমন দৃশ্য দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে ক্রিকেটদুনিয়ায়। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক কারণে যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেকার ক্রিকেটীয় সম্পর্ক প্রায় তলানিতে, তখন দুই প্রতিবেশী দেশকে কাছাকাছি আনতে পারে অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ (Afro-Asia Cup)। এর আগে ২০০৫ ও ২০০৭ সালে এশিয়া মহাদেশ ও আফ্রিকা মহাদেশের বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের নিয়ে আয়োজন করা হয়েছিলো এই মেগা টুর্নামেন্ট। খেলেছিলেন একঝাঁক তারকা। ক্রিকেটমহলে জোর গুঞ্জন যে প্রায় দুই দশক পর ফিরতে পারে অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ (Afro-Asia Cup)। উৎসাহের অন্ত নেই সমর্থকদের মধ্যে।
Read More: AFG vs NZ: বিসিসিআই নয়, নিজেদের ভুলেই কপাল পুড়লো আফগানিস্তানের, ভেস্তে গেলো টেস্ট ম্যাচ !!
আগেও আয়োজিত হয়েছে এই টুর্নামেন্ট-
২০০৫ সালে প্রথমবার এশিয়া ও আফ্রিকা একাদশের মধ্যে ওয়ান ডে টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয়েছিলো। দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে এশিয়া একাদশের (Asia XI) হয়ে মাঠে নেমেছিলেন ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কার তারকারা। আফ্রিকা একাদশের হয়ে খেলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়ার খেলোয়াড়’রা। তিন ম্যাচের সিরিজের প্রথম খেলাটি পরিত্যক্ত হয়। দ্বিতীয়টি জেতে এশিয়া একাদশ, শেষ ম্যাচটি জিতে সিরিজ ড্র করে আফ্রিকা একাদশ। ২০০৭ সালে ওয়ান ডে ও টি-২০ ফর্ম্যাটে মুখোমুখি হয়েছিলো এশিয়া (Asia XI) ও আফ্রিকা একাদশের (Africa XI) ক্রিকেটাররা। ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পাশাপাশি এশিয়া একাদশের জার্সি গায়ে সেবার মাঠে নেমেছিলেন বাংলাদেশের খেলোয়াড়রাও।
২০০৭ সালে আফ্রিকা একাদশ’কে ৩-০ ফলে ওডিআই সিরিজে হারায় এশিয়া একাদশ। ম্যাচগুলি আয়োজিত হয়েছিলো ভারতে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে টি-২০ সিরিজটি অবশ্য আফ্রিকা একাদশ জিতে নেয় ২-০ ফলে। বিভিন্ন সময়ে শন পোলক, এবি ডিভিলিয়ার্স (AB De Villiers), সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni), যুবরাজ সিং, ইনজামাম-উল-হক, মাহেলা জয়বর্ধনে, কুমার সাঙ্গাকারার মত কিংবদন্তি ক্রিকেটার অংশ নিয়েছেন এই টুর্নামেন্টে। কিন্তু ২০০৭-এর পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি, সম্প্রচারের অসুবিধার মত কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছিলো অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ (Afro-Asia Cup)। আইপিএল ও অন্যান্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগগুলির বাড়বাড়ন্ত’ও পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলো প্রতিযোগিতার জন্য। অবশেষে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এই টুর্নামেন্টকে ফেরানোর।
ফিরতে পারে অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ-
বিশ্ব ক্রিকেটের মহাতারকাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০’র আসরে একসাথে দেখে এখন অভ্যস্ত ক্রিকেটজনতা। তবুও আন্তঃমহাদেশীয় টুর্নামেন্ট হলে তার আলাদা আবেদন তৈরি হতে পারে বলে মনে করছেন আফ্রিকা ক্রিকেট সংস্থার প্রাক্তন কর্তা সুমোদ দামোদর। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, “অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ এত বছর না হওয়ায় আমি খুবই দুঃখিত। তবে এবার এই টুর্নামেন্ট হতে পারে। আমার মনে হয় ভুল-বোঝাবুঝির জন্য এতদিন এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করা যায় নি। আফ্রিকার তরফ থেকে আয়োজনের জন্য আগ্রহ দেখানো উচিৎ।” অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপ ফেরাতে উদ্যোগী হবেন পরবর্তী আইসিসি চেয়ারম্যান জয় শাহ (Jay Shah) ও এসিসি (এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল) চেয়ারম্যান মাহিন্দা ভালিপুরাম-আশাবাদী দামোদর।
বর্তমান সময়ে ঠাসা ক্রীড়াসূচি থাকে দলগুলির। এছাড়াও বিশ্বের নানা প্রান্তে ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগেও অংশ নেন ক্রিকেটাররা। তার মধ্যে অ্যাফ্রো-এশিয়া কাপের (Afro-Asia Cup) মত টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সত্যিই কঠিন। যদি সত্যিই যাবতীয় বাধা পেরিয়ে এই টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয় তাহলে ক্রিকেটপ্রেমীরা যে খুশিই হবেন তা বলাই বাহুল্য। এশিয়া একাদশে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের পাশাপাশি নিঃসন্দেহে প্রতিনিধিত্ব থাকবে আফগানিস্তানেরও। কোহলি (Virat Kohli), বুমরাহ, রশিদ খান, রোহিত শর্মা, বাবর আজমদের (Babar Azam) মত মহাতারকা ভাগাভাগু করবেন একই ড্রেসিংরুম। অন্যদিকে আফ্রিকা একাদশে হয়ত দেখা যাবে না কেনিয়ার ক্রিকেটারদের। দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়ের পাশাপাশি অংশ নিতে পারেন নামিবিয়ার খেলোয়াড়রাও। সাম্প্রতিক টি-২০ বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছিলো উগান্ডা। তাদের দল থেকেও কেউ কেউ খেলতে পারেন আফ্রিকা একাদশের হয়ে।