ঘরের মাঠেই ২০২৩’ ওডিআই ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর টিম ইন্ডিয়ার সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ (T20 World Cup 2024)। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড গত মঙ্গলবার বিশ্বকাপের জন্য ভারতীয় স্কোয়াড প্রকাশ করেছে। স্কোয়াডে বিশ্বকাপের নিরিখে বেশ কিছু নতুন মুখ দেখা গেলেও দলে দেখা পাওয়া গেল না রিংকু সিংকে (Rinku Singh)। ভারতীয় দলের হয়ে বিগত ১ বছর ধরে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ফিনিশারের ভূমিকা পালন করে আসছেন। শুধু ২০ ওভারের ফরম্যাটে নয় ৫০ ওভারের ফরম্যাটে ভারতীয় দলের হয়ে অভিষেক করে ফেলেছেন রিঙ্কু, দুই ফরম্যাটেই নিজেকে প্রমাণ করেছেন রিংকু। তবে, আসন্ন T20 বিশ্বকাপে রিংকুকে ছাড়া পস্তাতে হতে পারে টিম ইন্ডিয়াকে, নিম্নলিখিত এই ৩ কারণে বিশ্বকাপ দলে প্রয়োজন ছিল রিংকুর।
দেখুন ৩ কারণ কেন রিঙ্কু সিংকে বিশ্বকাপের দলে প্রয়োজন ছিল
১. যেকোনো মুহূর্তেই ম্যাচের রূপ বদলাতে সক্ষম
রিংকু সিং (Rinku Singh) হলেন এমন এক ধরনের খেলোয়াড় যিনি যেকোন মুহূর্তেই ম্যাচের রূপ বদলে দিতে সক্ষম। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রবেশ করার আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ দুর্দান্ত প্রদর্শন দেখিয়ে এসেছেন তিনি। উত্তরপ্রদেশের হয়ে বেশ কয়েকটি ম্যাচ উইনিং ইনিংস তার রাজ্যকে উপহার দিয়েছিলেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে রিতিমতন ভালো পারফরম্যান্স করার পর ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে নিজের প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পান রিংকু। গত মৌসুমে প্রথম ম্যাচ থেকেই কলকাতা দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন রিংকু, প্রথম কয়েক ম্যাচ বাদেই ২০২৩ মৌসুমীর চ্যাম্পিয়ন গুজরাট টাইটান্স দলের বিরুদ্ধে রিংকু সিং-এর অবিশ্বাস্য ইনিংস নজর কেড়ে নেয় নেট জনতাদের।
Read More: পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে হারতেই প্লে অফ থেকে ছিটকে গেল CSK, এই খেলোয়াড় গুলো দিলেন ধোকা !!
রিংকু শেষ ওভারে পাঁচটি বলে পাঁচটি ছক্কা হাঁকিয়ে আইপিএলে রেকর্ড করে ফেলেন এবং এই ম্যাচের পর থেকেই তার জীবন বদলে যায়। KKR’এই হয়ে শুধু একটি ম্যাচেই নয়, এরপরেও একাধিক ম্যাচে তিনি এমন কিছু ইনিংস খেলেছেন যেগুলি দলকে জয়ের আঙিনায় পৌঁছে দিয়েছেন। শুধু যে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটেই তিনি ভালো খেলেছেন এমনটাই নয় ভারতীয় দলের জার্সিতেও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস খেলছেন তিনি। ভারতীয় দলের জার্সিতে রিংকু ১১ ইনিংসে ব্যাটিং করার সুযোগ পেয়েছেন। ৮৯ গড়ে ও ১৭৬.২৪ স্ট্রাইক রেটে ৩৫৬ রান বানিয়ে জাতীয় দলে তাঁর জায়গা পাকা করে ফেলেছিলেন।
২. ম্যাচ ফিনিশ করার ক্ষমতা
মিডিল ওর্ডারে ব্যাটিং করার সুবাদে থেকে ম্যাচ উইনারের রুপান্তর করে ফেলেছিলেন রিঙ্কু এর সূচনা হয়েছিল ২০২২ সালে লখনৌ সুপার জায়েন্টস দলের বিরুদ্ধে তৎকালীন মৌসুমে দুই দল যখন মুখোমুখি হয়েছিল তখন কলকাতাকে ম্যাচ জিততে শেষ ওভারে ২১ রানের প্রয়োজন ছিল, তখন ব্যাটিং করছিলেন রিংকু। শেষ ওভারে স্টোইনিসের বিরুদ্ধে ৪,৬,৬,২ হাঁকানো পর আউট হয়ে ফিরে যান প্যাভিলিয়নে। কলকাতা এই ম্যাচটি হারলেও সেই দিন ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেট এর জন্যই জন্ম হয়েছিল নতুন ১ ফিনিশারের।
গত মৌসুমে একাধিক ম্যাচ দায়িত্ব নিয়েই ফিনিশ করেছেন তিনি। ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটে উন্নতির সাথে সাথে জাতীয় দলে ডাক আসে রিংকুর। প্রথমেই আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিজের জাত চেনান তিনি এরপর একে একে অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুরন্ত ফিনিশিং নক খেলেন রিঙ্কু। টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি এবং আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ৬৯ রানের ইনিংসটি খেলেন তিনি।
৩. হার্দিক-জাদেজার থেকে এগিয়ে রিংকু
আসন্ন T20 বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের হয়ে খেলতে দেখা যাবে হার্দিক পান্ডিয়া ও রবীন্দ্র জাদেজাকে। লম্বা সময় পর দুজনকেই আন্তর্জাতিক T20 ফরম্যাটে দেখা যাবে। বর্তমানে এই ফরম্যাটে দুজনের বেশ ফর্মের ঘাটতি দেখা গিয়েছে। চলতি আইপিএলে ব্যাট হাতে পান্ডিয়া ১০ ম্যাচে ২১.৮৯ গড়ে ও ১৫০.৩৮ স্ট্রাইক রেটে ১৯৭ রান বানাতেই সক্ষম হয়েছেন এবং বল হাতে নিয়েছেন ৬ উইকেট ও দিয়েছেন ১১ রান প্রতি ওভার পিছু।
অন্যদিকে জাদেজা ৭ ইনিংসে ৫৩ গড়ে ও মাত্র ১২৯.২৭ স্ট্রাইক রেটে ১৫৯ রান বানাতেই সক্ষম হয়েছেন এবং বল হাতে চেপকের স্পিন উইকেটেও উইকেট নিতে হচ্ছেন ব্যার্থ, ওভার পিছু ৭.৫৩ রান দিয়ে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। অন্যদিকে রিংকুকে এবছর খুব কম সুযোগ পেতে দেখা গিয়েছে, ৮ ইনিংসে ২০.৫ গড়ে ও ১৫০ স্ট্রাইক রেটে ১২৩ রান বানিয়েছেন তিনি। তুলনামূলক কম সুযোগ পাওয়ায় রিঙ্কুর থেকে ভালো পারফরমেন্স দেখা যায়নি। তবে, আইপিএলের ভিত্তিতে তাকে দল থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত একেবারে অপ্রাসঙ্গিক। বিশ্বকাপে (T20 World Cup 2024) রিংকুর প্রয়োজন বোধ করবে টিম ইন্ডিয়া।