বিশ্ব ক্রিকেটে একজন বড় মাপের খেলোয়াড় হলেন এমএস ধোনি (MS Dhoni)। ভারতীয় দলের অধিনায়ক থাকাকালীন মহেন্দ্র সিং অনেক কীর্তিমান রচনা করেছেন। তার অধিনায়কত্বে অনেক খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার গড়ে উঠেছিল আবার অনেক খেলোয়াড় তারকা থেকে কিংবদন্তিতেও পরিণত হয়েছেন। অনেকের মতে ধোনি খুবই ভালো মানের মানুষ আবার অনেকের মতে ধোনির জন্যই ক্যারিয়ার নষ্ট হয়েছে তাদের। ইরফান পাঠান, বীরেন্দ্র সেহবাগ, মনোজ তিওয়ারি প্রমুখ খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ধোনির উপর অনেক তারকা তাদের ক্ষোভ উগড়েও দিয়েছেন। এমন ৩ খেলোয়াড় রয়েছেন যারা ধোনির একেবারে চরম শত্রু।
যোগরাজ সিং

ভারতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার যুবরাজ সিংয়ের পিতা যোগরাজ সিং (Yograj Singh) এমএস ধোনির (MS Dhoni) বড় শত্রু বললে কোনো ভুল হবে না। ধোনিকে নিয়ে বারবার নানান মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে উঠে আসেন যোগরাজ সিং। যুবরাজ সিংয়ের বাবা যোগরাজ একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যখন ধোনির সাথে যোগরাজ সিংয়ের প্রথম বার দেখা হয়েছিল তখন তাকে উপেক্ষা করেছিলেন ধোনি এমন তাকে প্রাপ্ত সম্মান টুকু নাকি ধোনি দেননি। এরপর আবার ২০১১ সালেই বিশ্বকাপের পর বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় যুবরাজ সিংকে (Yuvraj Singh) কোনো ভাবেই সমর্থন করেননি ধোনি, ধোনির কারণেই ভারতীয় দলের ক্যাপ্টেন হতে পারেননি যুবরাজ। তাছাড়া, ধোনি অনেক খেলোয়াড়ের ক্যারিয়ার নষ্ট করে দিয়েছেন বলেই যোগরাজ মন্তব্য করে থাকেন। ধোনিকে নিয়ে বড় অভিযোগ করে তিনি বলেন, “আমি এমএস ধোনিকে ক্ষমা করব না। তার আয়নায় নিজের মুখ দেখা উচিত। সে অনেক বড় ক্রিকেটার, কিন্তু সে আমার ছেলের সাথে যা করেছে, সবকিছু এখন বেরিয়ে আসছে; জীবনে কখনোই তা ক্ষমা করা যাবে না।”
Read More: MS Dhoni: “ওদের ক্যারিয়ার নষ্ট করার পিছনে…” MS ধোনিকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে উঠে আসলেন যোগরাজ সিং !!
গৌতম গম্ভীর

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন ভারতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। তারকা ক্রিকেটার গম্ভীর এমএস ধোনিকে নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই নানান মন্তব্য করে থাকে। গম্ভীর একসময় ধোনির ডেপুটি ছিলেন, তবে গম্ভীরকে ধোনির ডেপুটি থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছিল, যে নিয়ে ম্যানেজমেন্ট ও ক্যাপ্টেনের উপর খুশি ছিলেন না গম্ভীর। গম্ভীর মন্তব্য করে বলেছিলেন, “সিবি সিরিজে ভারত ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি, অস্ট্রেলিয়া এবং শ্রীলঙ্কা পেরেছে। আমি ছিলাম সহ-অধিনায়ক, এমএস ধোনি ছিলেন অধিনায়ক। সেই সিরিজের পর ভারত, শ্রীলঙ্কা এবং বাংলাদেশকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের জন্য ভ্রমণ করার কথা ছিল। আমরা ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারিনি, এর আগে আমরা ৪-০ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ হেরেছিলাম। ধোনিও চাপের মধ্যে ছিলেন, তিনি ছিলেন অধিনায়ক।“
এই প্রসঙ্গে গৌতম গম্ভীর বলেন, “CB সিরিজের পর যদি কিছু পরিবর্তন করা হয়, তাহলে তা ছিল সহ-অধিনায়ক। পরবর্তী সিরিজের জন্য, আমাকে সরিয়ে বিরাট কোহলিকে সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল। ভারতের ইতিহাসে বা অন্য কোনও খেলার ইতিহাসে কি এমন কখনও ঘটেছে ? সহ-অধিনায়ককে সরিয়ে দেওয়ার পরেও অধিনায়ককে অক্ষত রাখা হয়েছে ? সেসময়, ডানকান ফ্লেচার ভারতের কোচ ছিলেন। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম যে এই সিদ্ধান্তের পিছনে কারণ কী ছিল। তিনি বলেছিলেন যে এটি নির্বাচকদের সিদ্ধান্ত।” তাছাড়া, ২০১১ সালের ওডিআই বিশ্বকাপ নিয়েও বারবার চর্চায় থাকেন গৌতম গম্ভীর। আসলে সকলে প্রায় ধোনির ছক্কা হাঁকিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে জেতার বিষয়টি নিয়ে বেশ চর্চা করে। অন্যদিকে, গম্ভীর সর্বদাই বলে এসেছেন ধোনির ছক্কার জন্য ভারত কখনও বিশ্বকাপ জেতেনি।
হরভজন সিং

তালিকায় রয়েছেন তারকা স্পিনার হরভজন সিং (Harbhajan Singh)। হরভজনও মাঝে মধ্যেই ধোনিকে নিয়ে বেফাঁস মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে উঠে আসেন। তারকা স্পিনার জানিয়েছেন যে, চেন্নাই সুপার কিংসে থাকাকালীন তিনি এবং এমএস ধোনি (MS Dhoni) মাঠের বাইরে কথা বলতেন না। হরভজন ২০১৮-২০২০ সালের মধ্যে চেন্নাই সুপার কিংস দলের অংশ ছিলেন। ধোনিকে ফোন করলে তিনি ফোন ধরননা বলেও অভিযোগ করেন ভাজ্জি। ধোনির সাথে হরভজনের সম্পর্ক নিয়ে তিনি বলেন, “আমি ধোনির সাথে কথা বলি না। আমি যখন সিএসকেতে ছিলাম তখনই আমরা কথা বলতাম, কিন্তু অন্যথায়, আমরা কথা বলিনি। ১০ বছর বা তারও বেশি সময় হয়ে গেছে কোনো কথা নেই। যখন আমরা সিএসকেতে আইপিএল খেলছিলাম, তখনই আমরা কথা বলতাম, এবং তাও কেবল মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তিনি আমার ঘরেও আসতেন না বা আমিও তার ঘরে যেতাম না। আমি কখনও তাকে ফোন করার চেষ্টা করিনি কারণ আমার অনেক আবেগ আছে। আমি কেবল তাদেরই ফোন করি যারা আমার ফোন ধরে। অন্যথায় আমার সময় থাকে না।” পাশাপশি হরভজনের আগে অশ্বিনকে ভারতীয় টেস্ট দলে খেলানোর সিদ্ধান্ত ধোনিরই ছিল। যে কারণে ৪০০’এর বেশি উইকেট নেওয়ার পরেও ভারতীয় দলে জায়গা হয়নি তাঁর।