1983 World Cup Final: ২৫ জুন, ১৯৮৩ ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। ওই দিনে ভারত প্রথমবারের মতো ক্রিকেট বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় এবং বিশ্বকাপের আঙিনায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রাজত্বের অবসান ঘটায়। এই বিশ্বকাপ জেতার পর বদলে যায় ভারতের ক্রিকেট পরিস্থিতি। দেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা এখন কয়েকগুন বেড়ে গিয়ে এখন বিসিসিআই বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিকেট বোর্ড। এই টুর্নামেন্টে ভারতের ক্রিকেট দল এমন একটা কাণ্ড করে দেখায় যা দলের অতি বড় ভক্তও ভাবতে পারেনি
১৯৮০-র দশকে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল খুবই শক্তিশালী ছিল। ১৯৮৩ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে টানা তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের আয়োজন করা হয়। সেই দেশের পিচ ফাস্ট বোলারদের জন্য সহায়ক এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজে একাধিক ফাস্ট বোলার ছিল। এমন পরিস্থিতিতে ভারত ফাইনালে উঠবে তা কেউ কল্পনাও করেনি। তবে কঠিন লড়াই করে তরুণ কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারতীয় দল বিস্ময়কর কাজ করে এবং বিশ্বকাপ জিতে নেয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের আধিপত্য শেষ করে ভারত
ক্রিকেট বিশ্বকাপ শুরু হয় ১৯৭৫ সালে। এই সময় বিশ্ব ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের আধিপত্য। সেই টুর্নামেন্টে ক্যারিবিয়ান দলে ভিভিয়ান রিচার্ডস এবং ক্লাইভ লয়েডের মতো ব্যাটসম্যান ছিলেন। সেই সঙ্গে ফাস্ট বোলারদের পুরো বাহিনীই ছিল উইন্ডিজ দলে। পুরো দুই দশক ধরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে দলে প্রচুর বিপজ্জনক ফাস্ট বোলার ছিলেন যাদের গোটা বিশ্বের তাবড় তাবড় ব্যাটসম্যানরাও ভয় পেতেন।
ভারতের দল এই সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটে নিজের ছাপ ফেলে। কিন্তু বিশ্বকাপ শুরুর আগে কেউই আশা করেনি ভারত বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৯৭৫ এবং ১৯৭৯বিশ্বকাপ জিতেছিল এবং ১৯৮৩ সালে টানা তৃতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেয়। আশা করা হয়েছিল যে অস্ট্রেলিয়া বা ইংল্যান্ড এই দলের বিরুদ্ধে ফাইনালে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। কিন্তু আদতে তেমনটা তা হয়নি। ভারত চমক দিয়ে টুর্নামেন্ট জিতে নেয় এবং কপিল দেব সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক হিসেবে বিশ্বকাপ জেতার নজির গড়েন।
বদলে যায় ভারতীয় ক্রিকেটের ভাগ্য
ভারতীয় দল যখন প্রথমবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় তখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের কাছে তার খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করার মতো টাকাও ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে কথা হয় এবং তিনি কোন টাকা না নিয়ে গান গেয়েছিলেন। এই ইভেন্ট থেকে পাওয়া অর্থ দিয়ে খেলোয়াড়দের পুরস্কৃত করা হয়। বিশ্বকাপ জয়ের পর ভারতে ক্রিকেট দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। বিসিসিআইয়ের কোষাগারে টাকা সতে শুরু করে এবং দেশের ক্রিকেটের অবস্থা উন্নত হতে থাকে। এখন আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টে খেলোয়াড়রা খুব সহজেই কোটি কোটি টাকা পান। কিন্তু এই সাফল্যের যাত্রার শুরুটা ১৯৮৩ সালে বিশ্বকাপ জেতার পরই শরু হয়েছিল।