প্রত্যাশামতো বার্মিংহ্যামে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত–পাকিস্তানের ২২ গজের যুদ্ধ ক্রিকেটপ্রেমীদের মন ভরিয়ে দিয়েছেন। যে ম্যাচে পাকিস্তানকে ডিএল নিয়মে ১২৪ রানে হারিয়ে দিয়েছে ভারত। প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানের মতো একটা শক্তিশালী ক্রিকেট দলকে হারিয়ে দারুণভাবে এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির অভিযান শুরু করলেন কোহলিরা।
ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ। বলার অপেক্ষা রাখে না, একটা সময় ওই ম্যাচটিকে ঘিরে উত্তেজনার পারদ আকাশ ছুঁয়ে ফেলেছিল। তার মধ্যে হঠাৎ একটি অপ্রয়োজনীয় মন্তব্য করে বিতর্কে সৃষ্টি করেছিলেন পাকিস্তানের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার ক্রিকেটার শোয়েব মালিক। আর তিনি বিতর্কে জড়িয়েছিলেন ভারতের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার মুহাম্মদ শামির ধর্ম নিয়ে কথা বলে।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি ওয়ার্ম-আপ ম্যাচে জয় পেয়েছিল পাকিস্তান। রুদ্ধশ্বাস সে ম্যাচে জয় পায় পাকিস্তান। সে ম্যাচে দলকে জেতানোর পথে ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন শোয়েব মালিক। কঠিন সময়ে ৭২ রান করে বাংলাদেশকে জয়ের রাস্তা থেকে তিনিই ছিটকে দিয়েছিলেন। তেমনই একটা পরিস্থিতিতে ভারতের বিরুদ্ধে হাই ভোল্টেজ ম্যাচে নামার আগে আইসিসি–র অফিশিয়াল টুইটারে অ্যাকাউন্টে প্রশ্নোত্তর পর্বে ভিডিও লাইভ অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন পাকিস্তানের জার্সিতে সর্বাধিক ছ’টি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলা শোয়েব।
সে অনুষ্ঠানে এক সমর্থক শোয়েবের কাছ থেকে জানতে চান, তাঁর নজরে ভারতের সেরা বোলার কে? জবাবে শোয়েব বলেন, ‘ আমার চোখে ভারতের সেরা বোলার মুহাম্মদ শামি। ও শুধু একজন মুসলিম বলেই নয়, ওর বোলিং আমি দেখেছি। ওকে খেলতে আমার বেশ সমস্যা হয়েছে।’ এতক্ষণ সবটাই ঠিক ছিল। কিন্তু শোয়েব হঠাৎ ক্রিকেটের আলোচনায় ভারতীয় ক্রিকেটার মুহাম্মদ শামির ধর্ম টেনে কথা বলায় অনেকে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। শোয়েবের এহেন আচরণ অনেকেই মন থেকে মেনে নিতে পারেননি। যার ফলে তারপর থেকে ভারতের টেনিস কুইন সানিয়া মির্জার স্বামী শোয়েবকে টুইটারে রীতিমতো সমালোচনায় ঝাঁঝরা করে দেন একদল ক্রিকেট সমর্থকেরা।
সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইটে পাকিস্তান ক্রিকেটার শোয়েব মালিককে যাঁরা সমালোচনায় ভরিয়ে দিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগই ভারতীয়রা। রোশন টোডি নামক এক ট্যুইটার ইউজার্স শোয়েবকে উদ্দেশ্য করে রিট্যুইট করে লেখেন, ‘আপনার এই ধরণের বিবৃতি অপ্রয়োজনীয় এবং প্ররোচনামূলক। আপনার এই ধরণের কথাবার্তায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি হয়।’ শুভ্রজ্যোতি ঘোষ নামক একজন ট্যুইটার ব্যবহারকারি লেখেন, ‘সেকুলারাই নিজেদের ধর্মের বাইরে আর কিছু দেখতে চান না।’ আর একজন বলেন, ‘শোয়েব মালিক ওই প্রশ্নের উত্তরে যেটি বলেছেন, তা অনেকটাই যুক্তিযোগ্য। তবে তার মধ্যে অকারণে ধর্ম টেনে এনে তিনি ঠিক করেননি।’ সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, সেদিনের শোয়েবের ওই মন্তব্যের জেরে আজও ট্যুইটারে অনেকে নিজেদের মতামত পোষণ করেছেন। পাশাপাশি তাঁরা জানিয়েছেন, শোয়েব মালিকের মতো স্টার ক্রিকেটারদের জনসমক্ষে কিছু বলার আগে ভেবে বুঝে বলা উচিত। কারণ, তাঁদের বক্তব্য জনমানসে দারুণ প্রভাব বিস্তার করতে পারে।