ভারতীয় দল মহিলা বিশ্বকাপ ২০২০তে ভালো প্রদর্শন করছে। ভারতীয় দলের স্পিনার রাধা যাদবকে প্রথম দুটি ম্যাচে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়নি। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচে তিনি ২৫ রান দিয়ে এক উইকেট নিয়েছিলেন আর ব্যাট হাতে ১৪ রানও করেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ম্যাচে রাধা ২৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন। এটা টি-২০ আন্তর্জাতিকে তার সবচেয়ে সেরা প্রদর্শনও। এখনো পর্যন্ত খেলা ৩৪টি টি-২০আই ম্যাচে তার নামে ৪৮টি উইকেট রয়েছে।
দারিদ্রের মধ্যে কেটেছে শৈশব
রাধা যাদবের শৈশব যথেষ্ট দারিদ্রের মধ্যে কেটেছে। তিনি মুম্বাইয়ের কান্দিভালিতে ২২৫ স্কোয়ারফুটের একটি ঘরে থাকতেন। তার কোচ প্রফুল্ল প্যাটেল প্রথমবার রাধাকে টেনিস বল ক্রিকেট খেলতে দেখেছিলেন। এই ব্যাপারে ইএসপিএন ক্রিক ইনফোর সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রাধা বলেন,
“প্রফুল্ল স্যার আমাকে ফ্রি ট্রেনিং দেওয়ার জন্য আমার বাবাকে রাজি করিয়েছিলেন। বাবা রাজি হয়ে যান কারণ কিছুদিন আগেই আমি জানতে পেরেছিলাম যে শিবসেবা ময়দানে মেয়েদের জন্য নেটস রয়েছে। আমি বুঝতে পারি যে মেয়েরাও ক্রিকেট খেলে। আমি বাবাকে অনুরোধ করি যে তিনি যেনো আমাকে ওখানে যেতে দেন। কিন্তু তিনি বলেন যে এটা তার বোঝার বাইরে”।
আরো পড়ুন: টিম সাউদি বিরাট কোহলির মাঠে আক্রামণাত্মক ব্যবহার নিয়ে দিলেন বড়ো বয়ান
মিতালি-ঝুলনের নাম শুনিনি
ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে মিতালি রাজ আর ঝুলন গোস্বামীকে সবচেয়ে বড়ো খেলোয়াড় মনে করা হয়। ১৯ বছর বয়সী রাধা যাদব জানিয়েছেন যে তিনি এই ব্যাপারে বেশি জানতেন না কারণ টিভিতে স্রেফ পুরুষদের ম্যাচই দেখানো হতো। বিশ্বকাপ ২০১১য় ভারতের জয় তার মধ্যে ক্রিকেটের প্যাশন এনে দেয়। রাধা আগে বলেন,
“বড়ো হওয়ার সময়, আমি মিঠু দি বা ঝালু দির ব্যাপারে কখনো শুনিনি, কারণ টিভিতে সবসময়ই বেশিরভাগই পুরুষদের ম্যাচ হতো। কিন্তু ভারত ২০১১ বিশ্বকাপ জেতার পর এটা আমার জন্য অনেক বড়ো ক্রেজ হয়ে যায়। আমি একটা স্টেডিয়ামে সমর্থকদের সামনে খেলতে চাইতাম, এই কারণে আমি সবকিছুর চেষ্টা করতে শুরু করে দিই। বাঁ হাতে জোরে বোলিং, স্পিন বোলিং, ব্যাটিং আর এমনকী উইকেটকিপিংও—স্রেফ এই কারণে যে ধোনি এটা এত ভালো বলেছিলেন”।
দুধ বেচত বাবা
রাধা যাদব মূল রূপে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা আর তার বাবা মুম্বাইতে দুধ বেচতেন। এর সঙ্গেই তিনি রোজগারর জন্য সবজি আর মুদিখানার দোকানও খুলেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন যে রাধার বড়ো বোন সোনি ভালো ক্রিকেটার ছিলেন কিন্তু বোনের জন্য তিনি ক্রিকেট ছেড়ে দেন। এই ব্যাপারে রাধার বাবা বলেন,
“এটা স্রেফ আমি বা আমার স্ত্রী নয়— রাধার উন্নতিতে ওর তিন বড়ো ভাই-বোনও ভূমিকা পালন করেছে। আমার বড়ো মেয়ে, সোনি, রাধার চেয়েও ভালো ক্রিকেটার ছিল, কিন্তু রাধাকে তৈরি করতে সাহায্য করার জন্য ও নিজের কেরিয়ার ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়”।