হেড কোচ, বোলিং উপদেষ্টা, ব্য়াটিং উপদেষ্টা – একে চাই না, ওকে চাই – এ একে চায়নি, ও ওকে চেয়েছিল – এই কমিটি না, ওই কমিটি, ১০ জুলাই থেকে ভারতীয় ক্রিকেট দলের কোচ নিয়োগ নিয়ে যা নাটক চলল বিসিসিআই-তে, তা একমাত্র টিভি সিরিয়ালের গল্পেরই তুলনা টানা যেতে পারে। এই মুহূর্তে যিনি স্বচ্ছ চরিত্র, পর মুহূর্তে তিনিই আবার গল্পের লিড ভিলেন। তবে, রাহুল দ্রাবিড় যে অত্য়ন্ত ভদ্র চরিত্রের মানুষ তার প্রমান আবারও পাওয়া গেল। কোচ নিয়োগ নিয়ে রবি শাস্ত্রী আর সৌরভ গাঙ্গুলি একে অপরকে মিথ্য়েবাদী বলে যে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করেছিলেন, সেসব থেকে নিজেকে একেবারেই দূরে সরিয়ে নিলেন রাহুল। কোচ নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক মিটে গেলেও, বোলিং কোচ/ বোলিং উপদেষ্টা আর ব্য়াটিং কোচ/ ব্য়াটিং উপদেষ্টা নিযুক্ত করার ছাইচাপা আগুন এখনও ধিকিধিকি জ্বলছে। সেই আগুনে হাত পোড়াতে একেবারেই অনীহা। দ্রাবিড়ীয় মানসিক কাঠিন্য়ের দ্য় ওয়াল যে এখনও শক্তপোক্ত, তা সবার সামনে। ক্ষমতার লোভ ক্রিকেটার দ্রাবিড়কে কোনওদিনও প্রলুব্ধ করতে পারেনি আর কোচ দ্রাবিড়কেও পারল না।

এখানে দেখুনঃ সৌরভকে আড়ালে রেখেই হল শাস্ত্রীকে কোচ নির্বাচন, কার নির্দেশে এমনটা হল?
সুপ্রিম কোর্ট নিযুক্ত কমিটি অফ অ্য়াডমিনিস্ট্রেটর্সের প্রধান বিনোদ রাই শনিবার জানান, রাহুল দ্রাবিড় ভারতের সিনিয়র টিমের সঙ্গে কোনওভাবেই জড়াতে চান না। ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থে তরুণ প্রতিভা তুলে আনার কাজে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন, সেই কাজই করে যেতে চান রাহুল। একটি সংবাদ সংস্থা বিনোদ রাইকে উদ্ধৃত করে এই খবর জানিয়েছে। “রাহুল দ্রাবিড়ের কন্ট্র্য়াক্টের বিষয়টির সমাধান হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে কোচিং করানোর জন্য় দ্রাবিড় বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ। তাই নতুন করে আর কোনও বাড়তি দায়িত্ব নিতে চান না রাহুল। ফলে ভারতের সিনিয়র দলের সঙ্গে বিদেশ সফরে টেস্ট সিরিজের সময় তাঁর যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না।“

২০১৮ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আসর বসবে। তার জন্য় ভারতীয় দলকে তৈরি করতে হবে। সেই দায়িত্ব কোনওভাবেই ছেড়ে আসতে চাইছেন না দ্রাবিড়। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসলে কোচ নিয়োগ নিয়ে যে বিতর্ক হয়ে গেল, তা আপাতত সমাধান করা গেলেও ভবিষ্য়তে এনিয়ে আবার সমস্য়া তৈরি হতে পারে, তাই এসব ঝামেলায় না জড়িয়ে একেবারেই সরে গেলেন দ্রাবিড়।

অন্য়দিকে, শাস্ত্রীর ইচ্ছে মতো ভরত অরুণকে বোলিং কোচ করা হলেও জাহির খানকে বোলিং উপদেষ্টা করার ব্য়াপারটি এখনও ঝুলে আছে। দ্রাবিড়ের মতো জ্য়াক সরেও দাঁড়াননি। ফলে তিনি যে এখনও ভারতীয় দলের সঙ্গে যুক্ত হতে চান, তারই আভাস মিলছে। এব্য়াপারে রাই বলেন, “তিন সপ্তাহ, নাকি তিন মাসের জন্য় – কতদিনের জন্য় ওকে চুক্তিবদ্ধ করা যায়, সে ব্য়াপারে আমরা এখনও নিশ্চিত নই। জাহিরের আইপিএল কন্ট্র্য়াক্ট দেখতে হবে। মিডিয়ার সঙ্গে ওর কি চুক্তি রয়েছে, তাও দেখতে হবে। তারপরে আমরা ঠিক করতে পারব, ওকে কোন সময় পাওয়া যাবে। তার ওপরই সবকিছু নির্ভর করছে।”


