এবারের মত আইপিএল এর পালা শেষ, অপেক্ষা সামনের বছরের জন্য। যদিও দুই আইপিএল এর মধ্যে ব্যবধান থাকবে মত্র পাঁচ মাসের, কিন্তু এরই মধ্যে এবারের আইপিএল এর সেরা একাদশ তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ক্রিকেট প্রেমী থেকে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। পারফর্মেন্স এবং ভারসাম্যের বিচারে সেরা একাদশ তৈরিতে বদ্ধপরিকর ক্রিকেট জগত।
এরকমই এবার নিজের আইপিএল একাদশ গড়লেন ভারতের প্রাক্তন অলরাউন্ডার ইরফান পাঠান। অবাক করার মত বিষয়ে, নিজের একাদশে তিনি রাখেননি বিরাট কোহলি, জোফ্রা আর্চার এবং রশিদ খানকে। এবারের আইপিএল এ মিশ্র পারফর্মেন্স করলেন ৪০০ এর বেশি রান করেছেন কোহলি। এদিকে এবারের আইপিএল এর মোস্ট ভ্যালুয়েবল প্লেয়ারের খেতাব পেয়েছেন রাজস্থান রয়্যালসের এই ইংরেজ পেসার। আর সবশেষে এবারের আইপিএল এ সবথেকে কম ইকোনমি রেট বজায় রেখে ২২টি উইকেট নিয়েছেন রশিদ খান। কিন্তু এনাদের বাদ দিয়েই নিজের একাদশ গড়লেন ইরফান।
নিজের দলের ওপেনিংয়ে তিনি রেখেছেন দুই ভারতীয় ওপেনার কে এল রাহুল ও শিখর ধাওয়ানকে। এবারের আইপিএল এ সর্বাধিক রান করার তালিকায় প্রথম দুইয়ে ছিলেন রাহুল ও ধাওয়ান। এদিকে অস্ট্রেলিয়া ও সানরাজার্স হায়দ্রাবাদের ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকে নিতে চাইলেও বিদেশী কোটার জন্য নিতে পারেননি ইরফান। এই নিয়ে স্টার স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরফান জানিয়েছেন, “কে এল রাহুল এবং শিখর ধাওয়ান অবশ্যই আমার দলে থাকবেন। আমি ডেভিড ওয়ার্নারকে দলে আনতে পারলাম না কারণ মাত্র চারজন বিদেশীকে নেওয়া যাবে।”
এরপর তিন ও চার নম্বরে সূর্যকুমার যাদব এবং এবি ডি ভিলিয়ার্সকে রেখেছেন ইরফান। এই নিয়ে ইরফান বলেছেন, “যেভাবে সূর্যকুমার যাদব নিজের ইনিংস খেলেছেন, আমরা সবসময় বলতাম ওনার গড়ের বিষয়ে, কিন্তু ওনার স্ট্রাইক রেটই হল আকর্ষনীয় বিষয়, আর এর সাথে তিনি নিজের দলকে ম্যাচ জিতিয়েছেন। তাই আমি ওনাকে অবশ্যই নেব। এবি ডি ভিলিয়ার্সেরও স্ট্রাইক রেট অত্যন্ত ভালো। আমরা সবসময় আশা করি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে উনি বেশি রান করুন। কিন্তু উনি রান করার পাশাপাশি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরকে ম্যাচ জিতিয়েছেন।”
এরপর পাঁচ ও ছয়ে যথাক্রমে কাইরন পোলার্ড ও মার্কাস স্টোইনিসকে রেখেছেন ইরফান। দলকে নেতৃত্ব দেবেন পোলার্ড, এমনই অভিমত পাঠানের। এদিকে সাতে আসবেন ভারতীয় অলরাউন্ডার রাহুল তেওয়াটিয়া। এই নিয়ে ইরফান বলেছেন, “আমি কাইরন পোলার্ডকে আমার দলে রাখব পাঁচ নম্বরের জন্য এবং উনি আমার দলকে নেতৃত্ব দেবেন। আমার কাছে হার্দিক পান্ডিয়াও ছিল অপশন হিসেবে, কিন্তু উনি বল করছেন না এবং পোলার্ড আমায় বোলিংয়ের অপশন দেবেন ওনার অধিনায়কত্বের সাথে সাথে। পাশাপাশি উনি একজন দুর্দান্ত ফিল্ডার। তাই আমি একজন ত্রিমাত্রিক খেলোয়াড় পাব ওনার মধ্যে। ছয়ে আসবেন মার্কাস স্টোইনিস, যিনি আমায় বোলিংয়ের অপশন দেবেন। এবারের আইপিএল এ উনি দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেন এবং স্পিনের বিরুদ্ধে বেশ ভালো খেলেছেন। সাত নম্বরে থাকবেন রাহুল তেওয়াটিয়া। নিজের দলে দুটি ম্যাচ জিতিয়েছেন এবং বোলিংও ভালো করেছেন।”
যেহেতু লেগস্পিনার রাহুল তেওয়াটিয়াকে নিয়েছেন, তাই আর এক লেগস্পিনার হিসেবে রশিদ খানের থেকে যুজবেন্দ্র চাহালকে এগিয়ে রাখলেন ইরফান পাঠান। এদিকে তিন পেসার হিসেবে মহম্মদ শামি, জসপ্রীত বুমরাহ ও কাগিসো রাবাডাকে বেছে নিয়েছেন নিজের দলে। এই নিয়ে পাঠান বলেছেন, “যুজবেন্দ্র চাহাল এবং রশিদ খান দুজনেই অত্যন্ত ভালো বোলার, কিন্তু আমি চাহালকে দলে রাখব। এছাড়া আমি এমন কাউকে চাই যিনি নতুন ও পুরোনো বলে কার্যকরী হয়ে উঠুন। তাই মহম্মদ শামিকে দলে রাখতেই হবে। আর বাকি দুই হিসেবে থাকবেন জসপ্রীত বুমরাহ ও কাগিসো রাবাডা।”
ইরফান পাঠানের আইপিএল একাদশ – কে এল রাহুল, শিখর ধাওয়ান, সূর্যকুমার যাদব, এবি ডি ভিলিয়ার্স, কাইরন পোলার্ড, মার্কাস স্টোইনিস, রাহুল তেওয়াটিয়া, যুজবেন্দ্র চাহাল, মহম্মদ শামি, জসপ্রীত বুমরাহ, কাগিসো রাবাডা।