IPL 2024: চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আজ রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর’র বিপক্ষে মাঠে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস। দুই দলই বর্তমানে রয়েছে পয়েন্ট তালিকার নীচের অর্ধে। আজ সামনে এগোনোর লড়াই তাদের। বেঙ্গালুরু ইতিমধ্যে খেলে ফেলেছে তিনটি ম্যাচ। চেন্নাইয়ের বিরুদ্ধে হেরে তাদের আইপিএল (IPL) অভিযান শুরু হয়েছিলো। এরপর ঘরের মাঠে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে জয় পেলেও ফের হারতে হয়েছে কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে। কোহলিদের সামনে আজ ঘুরে দাঁড়ানোর চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস এখনও অবধি খেলেছে দুটি ম্যাচ। প্রথম ম্যাচে তারা হেরেছে রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে। দ্বিতীয় ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিরুদ্ধে জয় আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছে সুপারজায়ান্টসদের।
টসে জিতে আজ প্রথমে প্রতিপক্ষকে ব্যাটিং-এর আমন্ত্রণ জানান বেঙ্গালুরু অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসি। শুরু থেকেই বিধ্বংসী ছন্দে ছিলেন ক্যুইন্টন ডি কক। অপর প্রান্তে খানিক সময় নিয়ে খেলার প্রয়াস করেন কে এল রাহুল। তিনি ২০ করে ফিরলেও আজ অদম্য ছিলেন প্রোটিয়া উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। সিরাজ, যশ দয়াল, মায়াঙ্ক ডাগার-দের বিরুদ্ধে অনবদ্য খেলে ৮০ করেন ডি কক। এরপর দেবদত্ত পাডিক্কাল বিশেষ রান পান নি। ঘরের মাঠে ১১ বলে ৬ করেন কর্ণাটকের তরুণ। মার্কাস স্টয়নিসের ক্যামিও বড় রানের ভিত গড়েছিলো লক্ষ্ণৌর। ডেথ ওভারে নিকোলাস পুরানের ক্যামিও শেষমেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে সুপারজায়ান্টসদের পৌঁছে দেয় ১৮১ রানে।
Read More: IPL 2024: “দলের কাছ থেকে সম্মান পেতে হলে…”, রাজস্থানের কাছে দুরমুশ হওয়ায় হার্দিককে একহাত নিলেন ইরফান পাঠান !!
দ্বিতীয় অর্ধশতক ডি ককের, ফর্ম সমস্যায় রাহুল-

বেঙ্গালুরু বনাম লক্ষ্ণৌ ম্যাচের আগে সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর মিলেছিলো যে আজ নাও খেলতে পারেন কে এল রাহুল। বাম পায়ের হ্যামস্ট্রিং-এ টান লাগায় বিশ্রামে থাকার সম্ভাবনা ছিলো তাঁর। কিন্তু টসের সময় তাঁকে মাঠে নামতে দেখে স্বস্তি পেয়েছিলেন সমর্থকেরা। ডি ককের সাথে ওপেন করতেও নামেন লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস অধিনায়ক। কিন্তু বড় ইনিংস খেলতে পারলেন না চেনা চিন্নাস্বামীর বাইশ গজে। প্রথমে খানিক সময় নিলেন ক্রিজে থিতু হতে। এরপর জোড়া ছক্কা মারলেও দ্রুত আউট হন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের বলে। ১৪ বলে ২০ করেন রাহুল। তিনে নামা দেবদত্ত পাডিক্কাল ব্যর্থ হলেন আরও একবার। আজ ১১ বলে ৬ রানের ইনিংস খেলেই মহম্মদ সিরাজের শিকার হন তিনি।
রাহুল ও দেবদত্ত ফিরলেও আক্রমণ চালিয়ে যান ক্যুইন্টন ডি কক। গত ম্যাচে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে অর্ধশতক করেছিলেন তিনি। আজ নিজের পুরনো আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির বিরুদ্ধেও জ্বলে উঠলেন প্রোটিয়া তারকা। শুরুটা করেছিলেন ধুন্ধুমার মেজাজে। পরে অপরপ্রান্তে উইকেট পড়ায় খানিক বাঁধ দেন আগ্রাসনে। ৫৬ বলে ১৪৪.৪৪ স্ট্রাইক রেট বজায় রেখে শেষমেশ করেন ৮১ রান। মেরেছেন ৮টি চার ও ৫টি ছক্কা। আজ ব্যাট হাতে লক্ষ্ণৌ ইনিংসের ভিত গড়েন ডি কক’ই। রিস টপলি’র বলে মায়াঙ্ক ডাগারের হাতে ধরা পড়েন। এরপর চারে নামা মার্কাস স্টয়নিস ১৫ বলে ১টি চার ও ২টি ছক্কার সাহায্যে করেন ২০ রান।
প্রশ্নচিহ্ন RCB-র ডেথ বোলিং নিয়ে, ক্যামিও পুরানের-

গত কয়েকটি ম্যাচে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর বোলিং নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়েছে। স্টুয়ার্ট ব্রডের মত প্রাক্তনী বেঙ্গালুরু একাদশকে বোলিং-এর কারণে ‘ভারসাম্যহীন’ আখ্যা দিতেও দ্বিধা করেন নি। আজ মাঝের ওভারগুলিতে নিজেদের খানিক শুধরে নেওয়ার ইঙ্গিত দিলেন যশ দয়াল, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল’রা। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান খরচ করেন বাম হাতি পেসার যশ। তুলে নেন ১টি উইকেট। অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার ম্যাক্সওয়েল আজ ২৩ রান খরচ করে তুলে নেন ২ উইকেট। তবে পাওয়ার-প্লে ও ডেথ ওভারে বোলিং সমস্যা রয়েই গেলো বেঙ্গালুরুর। রিস টপলি প্রথম তিন ওভারে খরচ করেছিলেন ১৯ রান। নিজের চতুর্থ ওভারে বিলোলেন ২০। ৪ ওভারে ৪৭ দিলেন মহম্মদ সিরাজ’ও।
স্টয়নিস আউট হওয়ার পর লক্ষ্ণৌর হয়ে ঝড় তোলার কাজটা করেন সহ-অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। সুপারজায়ান্টস শিবিরের হয়ে গত মরসুম থেকেই ফিনিশারের ভূমিকায় খেলে আসছেন ক্যারিবিয়ান তারকা। সাফল্যও পেয়েছেন। এই বছরেও গত দুটি ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো যথাক্রমে ৬৪ ও ৪২ রান। আজ বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধেও মাত্র ২১ বলে ১৯০.৪৭ স্ট্রাইক রেটে ৪০ রান করে অপরাজিত রইলেন তিনি। মারেন ১টি চার ও ৫টি ছক্কা। চিন্নাস্বামীর মাঠে রান তাড়া করে জয়ের সংখ্যাই বেশী। পাশাপাশি বেঙ্গালুরু ব্যাটিং অর্ডার’ও তারকাখচিত। তাই লক্ষ্য ১৮২ হওয়া সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞদের মত এগিয়ে এখনও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সই।