জমে উঠেছে চলতি আইপিএল (IPL 2022)। প্রায় প্রতিটা ম্যাচ ঘিরেই দুর্দান্ত লড়াই দেখতে পাচ্ছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। শেষ ওভারের লড়াইয়ে বেশ কয়েকটি ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারন হয়েছে। এই মুহুর্তে গ্রুপ পর্যায়ের সিংহভাগ ম্যাচ শেষ হয়ে গিয়েছে। আর সেই সব ম্যাচগুলিতে নামজাদা প্লেয়ারদের মারকাটারি পারফরমেন্স সবার নজর কেড়েছে। ব্যাট হাতে জস বাটলার, কেএল রাহুল, ডেভিড ওয়ার্নাদের পারফরমেন্সের জয়জয়কার চলছে চারিদিকে। বল হাতে যুজবেন্দ্র চাহাল, কুলদীপ যাদব, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গারা প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের রানের ঘুম কেড়ে নিয়েছেন। তবে মাঠে নেমে যারা পারফর্ম করছেন তাদের বাইরেও প্রতিটা দলের ডাগ আউটে এমন কিছু কিছু খেলোয়াড় আছে যারা যে কোন সময়, যে কোন ম্যাচের রঙ বদলে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। এবার দেখে নেওয়া যাক এমন সব ক্রিকেটারদের নিয়ে তৈরি একটা দল যারা আইপিএলের যে কোন দলের ঘাম ঝরাবে।
টপ অর্ডার
মনন ভোরা: চলতি আইপিএলে লখনউ সুপার জায়েন্টস দলে রয়েছেন মনন ভোরা। তবে এখনও পর্যন্ত একটি ম্যাচেও মাঠে নামার সুযোগ হয়নি তার। মনন ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত আইপিএলের আঙিনায় চুটিয়ে খেলেছেন। ৫৩টি ম্যাচে ১০৫৪ রান করা ভোরা বড় শট খেলতে পারদর্শী। মাঠে নামলে তিনি অনেক বড় বড় বোলারদের মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে বাধ্য করবেন।
রহমনুল্লাহ গুরবাজ: টি-২০ ক্রিকেটের অন্যতম ভয়ঙ্কর নাম রহমনুল্লাহ গুরবাজ। এই আফগান ক্রিকেটার ব্যাট হাতে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখেন। পৃথিবীর বিভিন্ন টি-২০ লিগে খেলে বেড়ানো গুরবাজ এবছর গুজরাট টাইটান্স দলের সঙ্গে রয়েছেন। তবে দলে আরও নামজাদা ক্রিকেটার থাকায় প্রথম দলে সুযোগ পাননি গুরবাজ।
ইয়াশ ধুল: ভারতীয় ক্রিকেটের উঠতি তারকাদের মধ্যে একজন হলেন ইয়াশ ধুল। ভারতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ দলের এই তারকা ব্যাটসম্যানকে এবার সই করিয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস। তবে দলের ব্যাটিং লাইনআপে ডেভিড ওয়ার্নার, পৃথ্বী শ, রোভম্যান পাওয়েলের মতো ব্যাটসম্যান থাকায় এখনও ধুল প্রথম দলে সুযোগ পাননি।
মিডল অর্ডার
নারায়ণ জগদীশান: চেন্নাই সুপার কিংস দলে অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা করার চেষ্টা চালাচ্ছেন নারায়ণ জগদীশান। জগদীশান বল করার পাশাপাশি ব্যাট হাতে রান তোলারও ক্ষমতা রাখেন। সেটাকে মাথায় রেখেই তাকে দলে নেয় চেন্নাই। তবে মহেন্দ্র সিং ধোনির দলে অলরাউন্ডারের ছড়াছড়ি হওয়ায় এখনও পর্যন্ত হলুদ জার্সি গায়ে তাকে মাঠে দেখা যায়নি।
গ্লেন ফিলিপস: এই মরশুমে সানরাইজার্স দলে রয়েছেন গ্লেন ফিলিপস। ব্যাট হাতে বড় বড় শট খেলার ক্ষমতা রাখেন এই কিউয়ি ব্যাটসম্যান। এর সঙ্গে অফব্রেক বোলিং করার ক্ষমতা রাখেন তিনি। টি-২০ ক্রিকেটে ৩৫টি ম্যাচে ৬৪৫ রান করেছেন ফিলিপস। সব মিলিয়ে এই ফর্ম্যাটে একজন গুরুপূর্ণ প্লেয়ার হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে তার মধ্যে।
মোহাম্মদ নবি: আফগানিস্তান ক্রিকেটের বড় নাম এই মোহাম্মদ নবি। অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাস, পাকিস্তানের পিএসএল, ক্রিকেটের তাবড় তাবড় লিগে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে নবির। এই মুহুর্তে কেকেআর দলে রয়েছেন তিনি। তবে এখনও একটা ম্যাচেও মাঠে নামার সুযোগ পাননি। সুযোগ পেলে নবি যে ব্যাটে ও বলে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, সেটা কারও অজানা নয়।
লোয়ার অর্ডার
অর্জুন তেন্ডুলকার: শচীন পুত্র অর্জুনের ক্রিকেটের প্রতি ‘প্যাশন’ কিংবা ‘ডেডিকেশন’ নিয়ে প্রশ্ন তোলার কোন জায়গা নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে মুম্বাইয়ের হয়ে নজর কেড়েছেন তিনি। সেটাকে মাথায় রেখেই অর্জুনকে দলে নেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ২১ বছরের এই অলরাউন্ডার যে কোন দলের জন্যই আগামী দিনের সম্পদ। তবে রোহিত শর্মার দলের হয়ে এখনও মাঠে নামতে পারেননি তিনি।
জয়ন্ত যাদব: এবছরের নিলামে জয়ন্ত যাদবকে ১.৭ কোটি টাকা দিয়ে কিনে নেয় গুজরাট টাইটান্স। তবে এখনও অবধি মাঠে নামা হয়নি তার। বল হাতে স্পিন বোলিংয়ে পারদর্শী তিনি। সেই সঙ্গে তলার দিকে নেমে চটজলদি রান তোলার ক্ষমতাও রাখেন। এমন একটা প্লেয়ার যে কোন দলের প্রথম একাদশে সুযোগ পেলে অবশ্যই নিজের জাত চিনিয়ে দেবেন।
কুলদীপ যাদব: স্পিনার নয়, এই কুলদীপ পেস বোলিংয়ের জন্য বিখ্যাত। দিল্লিতে জন্ম নেওয়া এই ক্রিকেটার এই মুহুর্তে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দলের সঙ্গে রয়েছেন। তবে মুম্বাইয়ের তারকায় ঠাসা দলে নিজের জন্য আলাদা করে জায়গা করে উঠতে পারেননি তিনি। এই মুহুর্তে তিনি সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছেন। তবে অন্য কোন দলের হয়ে মাঠে নামলে তিনি হয়তো তারকা হয়ে ওঠার ক্ষমতা রাখেন।
লুঙ্গি এনগিডি: লুঙ্গি এনগিডির নামটির সঙ্গে আলাদা করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার খুব একটা প্রয়োজন নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার তারকা পেসারদের মধ্যে ধরা হয় তাকে। তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে এই মরশুমে রিজার্ভ বেঞ্চে বসেই কাটাচ্ছেন তিনি। দিল্লি ক্যাপিটালসের হয়ে একটি ম্যাচেও এবার তার মাঠে নামা হয়নি। তবে বল হাতে পেলে এই প্রোটিয়া পেসার ব্যাটসম্যানদের রাতের ঘুম কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন।
সিদ্ধার্থ কউল: ৩১ বছরের সিদ্ধার্থ কউল আইপিএলের একজন পরিচিত নাম। এই কুড়ি-বিশের টুর্নামেন্টে খেলার ভরপুর অভিজ্ঞতা রয়েছে কউলের। একটা সময় তিনি ছিলেন কলকাতা নাইটরাইডার্সে। সেখান থেকে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ হয়ে এই মুহুর্তে তিনি রয়েছেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। তবে এই মুহুর্তে প্রথম দলে সুযোগ পাওয়া থেকে অনেকটাই দূরে তিনি।
এক নজরে প্রথম একাদশ:
মনন ভোরা, রহমনুল্লাহ গুরবাজ, ইয়াশ ধুল, নারায়ণ জগদীশান, গ্লেন ফিলিপস, মোহাম্মদ নবি, অর্জুন তেন্ডুলকার, জয়ন্ত যাদব, কুলদীপ যাদব, লুঙ্গি এনগিডি, সিদ্ধার্থ কউল