গত ১৪ তারিখ এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিলো ভারত ও পাকিস্তান। খেলা শুরুর আগে প্রথা মেনে হাত মেলান নি দুই দলের অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) ও সলমন আলি আঘা। ম্যাচের পরেও চোখে পড়ে নি সৌজন্যের ছিটেফোঁটাও। ছক্কা হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করার কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই মাঠ ছাড়েন সূর্য। নন-স্ট্রাইকার প্রান্তে থাকা শিবম দুবে’ও পা বাড়ান ডাগ-আউটের দিকে। এপ্রিলে কাশ্মীরের পহলগামে পাক-মদতপুষ্ট জঙ্গীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন ২৬ জন। তার প্রতিবাদস্বরূপই যে পাক ক্রিকেটারদের সাথে হাত মেলান নি তা পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও ম্যাচ পরবর্তী সাংবাদিক সম্মেলনে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন সূর্য (Suryakumar Yadav)। “সরকার, বোর্ড ও আমরা একই অবস্থানে রয়েছি। কিছু বিষয় স্পোর্টসম্যান স্পিরিটের উর্দ্ধে,” বলেছিলেন তিনি।
Read More: IND vs SL ASIA CUP 2025 TOSS REPORT in BENGALI: টস জিতলো শ্রীলঙ্কা, নিয়ম রক্ষার ম্যাচে ভারতীয় দলে ২ বড় পরিবর্তন !!
শাস্তি পেলেন সূর্যকুমার যাদব-

সূর্যকুমারের (Suryakumar Yadav) মন্তব্য মোটেই পছন্দ হয় নি পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের। ম্যাচের পরেই আইসিসি’র দরবারে অভিযোগ জানিয়েছিলো তারা। ক্রিকেটের মধ্যে রাজনীতি আমদানি করছেন ভারত অধিনায়ক, দাবী করেছিলেন মহসীন নকভি’রা। হাত না মেলানোর সিদ্ধান্তকেও ‘অখেলোয়াড়োচিত’ আখ্যা দিয়েছিলো পিসিবি। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফটের দিকেও আঙুল তোলে তারা। দাবী করে তাঁর অপসারণের। পাইক্রফটকে (Andy Pycroft) সরানো কোনো ভাবেই সম্ভব নয়, পাক ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থাকে সরাসরি জানিয়ে দিয়েছিলো আইসিসি। তবে তাদের দাবী মেনে সূর্যের (Suryakumar Yadav) বিরুদ্ধে তদন্তে রাজী হয় কেন্দ্রীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। বিসিসিআইকেও ই-মেল মারফত এই খবর জানিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাচ রেফারি রিচি রিচার্ডসন। সেইমত গতকাল শুনানি হয় ভারত অধিনায়কের।
পহলগাম হামলা ও অপারেশন সিঁদুর সম্পর্কে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও সাংবাদিক সম্মেলনে মুখ খোলার কারণে নির্বাসিত হতে পারেন সূর্যকুমার (Suryakumar Yadav reprimanded), খবর ছড়িয়েছিলো নেটদুনিয়ায়। কিন্তু শেষমেশ অত কড়া হন নি রিচি রিচার্ডসন। তবে ম্যাচ ফি’র ৩০ শতাংশ জরিমান দিতে হচ্ছে টিম ইন্ডিয়া অধিনায়ক’কে। চলতি টুর্নামেন্টে আর কোনো রাজনৈতিক মন্তব্য যেন না করেন সূর্য (Suryakumar Yadav fined by ICC), স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সংবাদমাধ্যম PTI সূত্রে জানা গিয়েছে যে শুনানির সময় নিজেকে ‘নির্দোষ’ দাবী করেছিলেন ভারতীয় তারকা। কিন্তু ধোপে টেকে নি সেই দাবী। বিসিসিআই যদিও এই শাস্তির সিদ্ধান্তে খুশি নয়। ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। আইসিসি এরপর ঠিক কি সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকেই এখন নজর ক্রিকেটদুনিয়ার।
শাস্তি পাচ্ছেন ফারহান-হারিস’ও-

২১ তারিখ সুপার ফোর পর্বের ম্যাচে অর্ধশতক করে বন্দুক চালানোর ভঙ্গিতে উদ্যাপন করেছিলেন সাহিবজাদা ফারহান (Sahibzada Farhan)। খেলার মাঠে এহেন হিংসাত্মক উদ্যাপন কেন? প্রশ্ন তুলে আইসিসি’র দ্বারস্থ হয়েছিলো বিসিসিআই। তারা অভিযোগ দায়ের করেছিলো হারিস রউফের বিরুদ্ধেও। ভারতের যুদ্ধবিমান ধ্বংস করার যে অসমর্থিত দাবী পাকিস্তান গত কয়েক মাস ধরে করে আসছে তা বোঝাতেই হাতের ইশারায় ৬-০ দেখিয়েছিলেন তিনি। ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার অভিযোগের ভিত্তিতে আজ শুনানি হয় দু’জনেরই। পাকিস্তানের দুই ক্রিকেটারই নিজেদের ‘নির্দোষ’ দাবী করেছিলেন। কিন্তু সংবাদসংস্থা ক্রিকবাজ সূত্রে খবর যে লেভেল ১ অপরাধের জন্য ভর্ৎসনা করা হয়েছে হারিস (Haris Rauf) ও ফারহানকে। বড় অঙ্কের জরিমানাও হয়েছে তাঁদের। তবে তার পরিমাণ ঠিক কত তা স্পষ্ট নয় এখনও।