Asia Cup 2025: এক আকাশ বিতর্কের মাঝে আজ দুবাইতে মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। পহলগামে সন্ত্রাসবাদী হামলা ও অপারেশন সিঁদুরের পর আদৌ পড়শি দেশের বিরুদ্ধে টিম ইন্ডিয়ার মাঠে নামা উচিৎ কিনা তা নিয়ে দুইভাগ গোটা দেশ। চোরা টেনশন যে খেলোয়াড়দের মধ্যেও রয়েছে তার প্রমাণ মিললো টসের সময়। প্রথামাফিক হাত মেলান নি দুই অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও সলমল আলি আঘা। মুদ্রা পড়ে পাকিস্তানের পক্ষে। প্রথমে ব্যাটিং বেছে নেয় তারা। বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে ইনিংসের শুরুতেই আত্মসমর্পণ করে বসেছিলো পড়শি দেশের টপ-অর্ডার। সাইম আইয়ুব, মহম্মদ হারিস, ফখর জামান-সুবিধা করে উঠতে পারেন নি কেউই। তবে সাহিবজাদা ফারহানের রক্ষণ ও শাহীন শাহ আফ্রিদির প্রত্যাঘাত খানিক লড়াইতে শেষমেশ ফিরিয়েছে পাক বাহিনীকে। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা তুলেছে ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১২৭।
Read More: Asia Cup 2025 IND vs PAK TOSS REPORT: টস ভাগ্য হাসলো পাকিস্তানের দিকে, মহারণে প্রস্তুত ভারত !!
নড়বড়ে ব্যাটিং পাকিস্তানের-

“জসপ্রীত বুমরাহ’কে ছয় ছক্কা হাঁকাবে সাইম আইয়ুব,” দিনকয়েক আগে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন প্রাক্তন পাক ক্রিকেটার তনবীর আহমেদ। আজ দুবাইয়ের বাইশ গজে ভারতীয় পেসারের মুখোমুখি হওয়ারই সুযোগ পেলেন না তরুণ পাকিস্তানী ওপেনার। প্রথম ওভারের প্রথম বলেই তাঁকে সাজঘরে ফেরান হার্দিক পান্ডিয়া। ড্রাইভ মারতে গিয়ে বুমরাহর হাতেই ক্যাচ তুলে বসেন তিনি। ওমানের বিরুদ্ধে শূন্য করেছিলেন সাইম। এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) দ্বিতীয় ম্যাচেও পারলেন না খাতা খুলতে। দ্বিতীয় ওভারে চাপ বাড়ে পাকিস্তানের উপর। জসপ্রীত বুমরাহকে পুল মারতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বসেন ফর্মে থাকা মহম্মদ হারিস। ৫ বলে ৩ রান করে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ধরা পড়লেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারেই ফখর জামানকেও প্রায় আউট করে ফেলেছিলেন বুমরাহ। আঙুল তুলেও দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু ডিআরএস সহায় হয় পাক ব্যাটারের। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে পাক শিবির।
৬ রানের মধ্যে জোড়া উইকেট হারিয়ে বসা পাকিস্তান এরপর চেষ্টা করেছিলো ঘুরে দাঁড়ানোর। উইকেট আঁকড়ে ধরে পার্টনারশিপ গড়ার চেষ্টা করেন ফখর জামান (Fakhar Zaman) ও সাহিবজাদা ফারহান। তবে সেই প্রতিরোধ ভাঙে অষ্টম ওভারে। অক্ষর প্যাটেলকে (Axar Patel) স্টেপ আউট করে ছক্কা হাঁকাতে চেয়েছিলেন ফখর। কিন্তু ব্যাটে-বলে সঠিক সংযোগ ঘটাতে পারেন নি তিনি। ক্যাচ তালুবন্দী করতে বিশেষ সমস্যা হয় নি তিলক বর্মা’র। তৃতীয় উইকেটের পতনের পর রীতিমত থমকে গিয়েছিলো পাকিস্তানী ইনিংস। টি-২০ না টেস্ট? কোন ফর্ম্যাটে মুখোমুখি হয়েছে উপমহাদেশের দুই হেভিওয়েট? মাঝেমধ্যে গুলিয়েই যাচ্ছিলো দর্শকদের। এই সময় ডিআরএস ফের একবার সহায় হয়েছিলো পাক শিবিরের। রক্ষা পান সলমন আলি আঘা। কিন্তু তারপরেও ইনিংস দীর্ঘায়িত করতে পারেন নি তিনি। ১২ বলে ৩ করে অক্ষরের শিকার হন তিনি।
দুর্দান্ত কুলদীপ, লড়লেন শাহীন-

আমিরশাহীর বিরুদ্ধে ৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav)। আজ পাকিস্তানের বিপক্ষে বিধ্বংসী ফর্মে দেখা গেলো চায়নাম্যান স্পিনারকে। ১৩তম ওভারের তৃতীয় বলে শরীর সম্পূর্ণ আকাশে ছুঁড়েও হাসান নওয়াজকে কট অ্যান্ড বোল্ড করতে পারেন নি তিনি। সাফল্য মেলে পরের ডেলিভারিতেই। স্যুইপ মারতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দিয়েছিলেন নওয়াজ। ক্যাচ ধরতে কোনো ভুল করেন নি অক্ষর। এর পরের বলে মহম্মদ নওয়াজকেও সাজঘরের রাস্তা দেখান তিনি। লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন সাহিবজাদা ফারহান। তাঁর ইনিংসেও দাঁড়ি টানেন কুলদীপ’ই। ৪৪ বলে ৪০ করে আউট হন পাক ওপেনার। ৪ ওভারে ১৮ রান খরচ করে ৩ উইএক্ট তুলে আজ স্পেলে দাঁড়ি টানেন উত্তরপ্রদেশের স্পিনার। ইকোনমি ৪.৫০। চলতি এশিয়া কাপে (Asia Cup 2025) ২৫ রানের বিনিময়ে তাঁর ঝুলিতে ৭ উইকেট।
খালি হাতে ফেরেন নি বরুণ চক্রবর্তীও। ফাহিম আশরাফ’কে ১১ রানের মাথায় ফেরান তিনি। ব্যাটারদের চরম দুর্দশার দিনে পাকিস্তানকে ১০০’র মাইলস্টোন পার করালেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। নয় নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ঝোড়ো ক্যামিও খেলেন তিনি। বুমরাহ হোক বা হার্দিক-রেয়াৎ করেন নি কাউকেই। ৪ ছক্কায় সাজানো তাঁর ১৬ বলে ৩৩* রানের ইনিংস ক্ষীণ আশার আলো দেখাতে পারে পাকিস্তানকে। ৬ বলে ১০ করেন সুফিয়ান মুকিম’ও। তবে তাঁকে আউট করেন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। নতুন বলে যতটা চমকপ্রদ দেখিয়েছিলো তাঁকে, আজ ডেথে ততটা সপ্রতিভ ছিলেন না তিনি। ভারতীয় পেস বিভাগের সেরা অস্ত্র স্পেল শেষ করেন ২৮ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নিয়ে। পিচ যে স্পিন সহায়ক তা প্রথম ইনিংস থেকে পরিষ্কার। নওয়াজ-আবরার-সুফিয়ান সমৃদ্ধ পাক বোলিং-কে হাল্কভাবে নেওয়া সম্ভবত উচিৎ হবে না শুভমান-অভিষেকদের।