Asia Cup 2025: গত রবিবারের করমর্দন কাণ্ডের রেশ কাটে নি এখনও। জ্বলছে বিতর্কের আগুন। আর সেই আবহেই চলতি এশিয়া কাপে (Asia Cup 2025) দ্বিতীয় বার মুখোমুখি ভারত ও পাকিস্তান। ধুন্ধুমার যুদ্ধ দেখা যাবে, ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। অক্ষরে অক্ষরে মিলে গেলো তা। আজ টসের মুদ্রা পড়ে সূর্যকুমার যাদবের পক্ষে। পরিসংখ্যান মাথায় রেখে প্রথম বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। গ্রুপ পর্বের ম্যাচে পাক ব্যাটারদের দেখা গিয়েছিলো খানিক গুটিয়ে থাকতে। কিন্তু আজ বাড়তি তাগিদ চোখে পড়লো ফখর জামান, সাহিবজাদা ফারহানদের মধ্যে। পাওয়ার প্লে’তে প্রথম উইকেট এলেও রানের গতি রুখতে একটা সময় হিমশিম খাচ্ছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ আক্রমণের মুখে পড়তে হয় জসপ্রীত বুমরাহকেও। ইনিংসের গতি বদলায় দশ ওভারের পর। শিবম দুবে, বরুণ চক্রবর্তীদের কাঁধে ভর দিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায় ভারত। শেষমেশ তারা প্রতিপক্ষকে বেঁধে রাখতে পারে ১৭১ রানের মধ্যে।
Read More: “হাত না মেলানোর কিছু নেই…” সূর্যদের সিদ্ধান্তে অখুশি আজহারউদ্দিন, ভারত-পাক ম্যাচ নিয়ে তোপ প্রাক্তন অধিনায়কের !!
ফিল্ডিং নিয়ে উঠবে প্রশ্ন-

প্রথম ওভারেই ভারতকে সাফল্য প্রায় এনে দিয়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। বড় শট মারতে গিয়ে ভুল করে বসেছিলেন সাহিবজাদা ফারহান। কিন্তু থার্ড ম্যানে ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন অভিষেক শর্মা। শূন্যে শরীর ছুঁড়েও বলের নাগাল পান নি তিনি। পরের ওভারে বুমরাহ’কে নিষ্প্রভ দেখানোয় কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছিলো ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের। শেষমেশ তৃতীয় ওভারে সাফল্য এনে দেন হার্দিক’ই। তাঁর স্লোয়ার ফখর জামানের ব্যাটের কোণ ছুঁয়ে জমা পড়ে সঞ্জু স্যামসনের দস্তানায়। পাক সমর্থক এমনকি ধারাভাষ্যকাররাও এই উইকেটটি নিয়ে বিতর্ক বাঁধানোয় চেষ্টা করলেও রিপ্লেতেই স্পষ্ট যে ক্যাচ ধরার সময় সঞ্জুর গ্লাভসের বেশ খানিকটা ছিলো বলের তলায়। সঠিক সিদ্ধান্তই দেন তৃতীয় আম্পায়ার রুচিরা পাল্লিয়াগুরুগে। ৯ বলে ১৫ করে ফেরেন ফখর। ২১ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান।
এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) প্রথম তিন ম্যাচে সাইম আইয়ুবের স্কোর ছিলো ০, ০ ও ০। আজ ওপেনিং নয় বরং তিন নম্বরে নেমেছিলেন তরুণ তুর্কি। হার্দিককে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের খাতা খোলেন তিনি। তবে ব্যক্তিগত ৫ রানের মাথায় ফিরতে পারতেন সাজঘরেও। বরুণ চক্রবর্তীর (Varun Chakravarthy) বলে স্যুইপ মারতে গিয়ে আকাশে বল তুলে দিয়েছিলেন সাইম। সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন কুলদীপ যাদব। জীবন ফিরে পাওয়ার পর বেশ সপ্রতিভ দেখাচ্ছিলো বাম হাতি ব্যাটারকে। সাহিবজাদা ফারহানের সাথে জুটি বেঁধে ৭২ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করেন তিনি। পাকিস্তানের রান রেট যখন বাড়তে বাড়তে প্রায় ১১’র দিকে এগোচ্ছে, তখন ভারতকে স্বস্তি এনে দেন শিবম দুবে (Shivam Dube)। লেন্থের হেরফের ঘটিয়ে ব্যক্তিগত ২১ রানের মাথায় সাইম আইয়ুবকে সাজঘরে ফেরান তিনি। এবার আর ভুল করেন নি অভিষেক। অনেকখানি দৌড়ে এসে সামনের দিকে ডাইভ দিয়ে তালুবন্দী করেন ক্যাচ।
আশা জাগালো বরুণ-শিবম জুটি-

গত ম্যাচগুলিতে টিম ইন্ডিয়ার বোলিং বিভাগের প্রধান মুখ ছিলেন কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav)। আজ খানিক বিবর্ণ দেখালো তাঁকে। হুসেইন তালাতের উইকেট নিলেও ৪ ওভারে খরচ করেন ৩১ রান। তবে বল হাতে আজ ভারতের ‘ত্রাতা’ শিবম দুবে। আমিরশাহীর বিরুদ্ধে মাত্র ৪ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। আজ সুপার ফোরের ম্যাচে সাইম আইয়ুবের পর ক্রিজে ‘জমে’ যাওয়া সাহিবজাদা ফারহানের (Sahibzada Farhan) উইকেটও তুলে নেন মুম্বইয়ের অলরাউন্ডার। ৫৮ করে ফেরেন পাক ওপেনার। অন্যপ্রান্তে উজ্জ্বল বরুণ চক্রবর্তীও। উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে ২৫-এর বেশী খরচ করেন নি তিনি। চূড়ান্ত হতাশ করলেন জসপ্রীত বুমরাহ। টি-২০তে তাঁর কেরিয়ার ইকোনমি রেট ৬.৩৭। আজ ওভারপ্রতি ১১.২০ রান বিলোলেন তিনি। পাকিস্তানের হয়ে ১৯ বলে ২১ করেন মহম্মদ নওয়াজ। অধিনায়ক সলমন আঘা ১৭ ও ফাহিম আশরাফ অপরাজিত রইলেন ২০ করে।