Asia Cup 2025: ‘মেন এগেইনস্ট বয়েজ’- বুধবারের ভারত বনাম সংযুক্ত আরব আমিরশাহী দ্বৈরথকে ব্যাখ্যা করার সবচেয়ে ভালো উপায় সম্ভবত এই শব্দবন্ধই। দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের মধ্যে গুণগত মানের তফাত ঠিক কতটা তা স্পষ্ট বোঝা গেলো দুবাইয়ের বাইশ গজে। সাম্প্রতিক কয়েকটি ম্যাচে আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মত দলের বিরুদ্ধে লড়তে দেখা গিয়েছিলো আমিরশাহীকে। আজ ভারতের বিরুদ্ধেও প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন মহম্মদ ওয়াসিম, আলিশান শরাফু’রা, আশায় ছিলেন ক্রিকেটজনতা। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা দেখা গেলো না। একপেশে ম্যাচ কার্যত হাসতে হাসতেই জিতে গেলো সূর্যকুমার যাদবের দল। টসে জিতে বোলিং বেছে নিয়েছিলো ভারত। মাত্র ৫৭ রানে আমিরশাহীকে থামিয়ে দেন কুলদীপ যাদব-শিবম দুবেরা। স্বল্প রানের লক্ষ্য ছুঁতে বেশী সময় লাগে নি ‘মেন ইন ব্লু।’ ১৫.৩ ওভার বাকি থাকতেই ৯ উইকেটের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় তারা।
Read More: Asia Cup 2025: কুলদীপ-শিবম যুগলবন্দীতে নাজেহাল আমিরশাহী, ইনিংস থামলো মাত্র ৫৭ রানেই !!
সহজ জয় পেলো ভারত-

২০২৩-এ খেতাব জিতে এশিয়া কাপ’কে (Asia Cup) বিদায় জানিয়েছিলো ভারতীয় দল। ২০২৫-এ ট্রফি রক্ষার দৌড়টাও তারা শুরু করলো দাপটের সঙ্গেই। চুতুর্থ ওভারেই আমিরশাহী ইনিংসে ভাঙন ধরিয়েছিলেন জসপ্রীত বুমরাহ। তাঁর ট্রেডমার্ক ইয়র্কার ছিটকে দিয়েছিলো আলিশাল শারাফু’র অফস্টাম্প। এরপর সাফল্য পান বরুণ চক্রবর্তী। তবে আজকের ম্যাচের নায়ক নিঃসন্দেহে কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav)। ইংল্যান্ড সফরে একটানা পাঁচটি টেস্টে রিজার্ভ বেঞ্চে ছিলেন তিনি। দীর্ঘসময় পর ভারতীয় একাদশে ফিরে আজ জ্বলে উঠলেন তিনি। পাওয়ার-প্লে’র ঠিক পরেই কুলদীপের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অধিনায়ক সূর্যকুমার। স্পেলের প্রথম ওভারেই ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। আমিরশাহী ইনিংসের ইতিও টানেন কুলদীপ’ই। মাত্র ৭ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নিয়ে আজ ম্যাচের সেরা চায়নাম্যান স্পিনার। ধ্বংসযজ্ঞে সামিল হন শিবম দুবেও। তাঁর সাফল্যের সংখ্যা ৩।
৫৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma)। তরুণ বাম হাতিকে পাওয়া গেলো চেনা মেজাজেই। ১৬ বলে ৩০ করে যখন আউট হন, ততক্ষণে ভারতের জয় কেবল সময়ের অপেক্ষা। স্বল্পদৈর্ঘের ইনিংসটি আজ ৩টি ছক্কা ও ২টি বাউন্ডারিতে সাজিয়েছিলেন টি-২০ বিশ্বর্যাঙ্কিং-এর এক নম্বর ব্যাটার। অভিষেকের ওপেনিং পার্টনার কে হতে চলেছেন তা নিয়ে বিস্তর চর্চা চলেছে গত কয়েক দিনে। আজ শুভমান গিলের উপরেই আস্থা রেখেছিলেন কোচ গৌতম গম্ভীর। মাত্র ৯ বলে ২০* রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ২৫ বর্ষীয় তরুণ’ও বুঝিয়ে দিলেন যে কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত তিনি। তিন নম্বরে তিলক বর্মা নয়, আজ নেমেছিলেন অধিনায়ক সূর্যকুমার। মাত্র ২ বলে ৭ করে অপরাজিত রইলেন তিনি। মারেন ১টি ছক্কা। ৪.৩ ওভারের মধ্যেই দুই পয়েন্ট নিশ্চিত করে ফেলে ভারত।
সতীর্থদের কৃতিত্ব দিলেন সূর্যকুমার-

আগামী রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামতে হবে ভারতকে। তার আগে অপেক্ষাকৃত দুর্বল আমিরশাহীর বিপক্ষে কেন প্রথমে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিলেন না সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)? ম্যাচ চলাকালীনই উঠতে শুরু করেছিলো প্রশ্ন। খেলা শেষে নিজের সিদ্ধান্তের স্বপক্ষে মুখ খুলেছেন স্বয়ং টিম ইন্ডিয়া অধিনায়ক। জানান, “দেখতে চেয়েছিলাম বাইশ গজ ঠিক কেমন আচরণ করছে। দ্বিতীয় ইনিংসেও একই ছিলো অবস্থা।” সতীর্থদের পারফর্ম্যান্সের প্রশংসা করেছেন তিনি। বলেন, “দুর্দান্ত খেলেছে ছেলেরা। আমরা উদ্যম নিয়ে মাঠে নামতে চেয়েছিলাম। আর সেটাই পেয়েছি।” দুবাইয়ের চেনা পরিবেশ সাহায্য করেছে, মনে করেন সূর্যকুমার। “এই দলের অনেকেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য এখানে এসেছিলো। পিচ দেখে ভালো মনে হয়েছিলো কিন্তু তা আদতে বেশ মন্থর ছিলো। তাই স্পিনাররা কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছে। এই গরমের মধ্যেও কুলদীপ দারুণ পারফর্ম করেছে।”