Asia Cup 2025: গত রবিবার পাকিস্তানকে হেলায় হারিয়েছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ আজ দুবাইয়ের বাইশ গজে তারা গুঁড়িয়ে দিলো বাংলাদেশকে। লিটনহীন টাইগারদের আজ নেতৃত্ব দেন জাকের আলি অনীক। স্টপগ্যাপ অধিনায়কের পক্ষেই পড়েছিলো টসের মুদ্রা। বোলিং বেছে নেন তিনি। অভিষেক-শুভমানের দাপটে পাওয়ার-প্লে শেষে টিম ইন্ডিয়ার স্কোর ছিলো ৭২। কিন্তু তাঁরা যে মঞ্চ গড়ে দিয়েছিলেন তাতে ইমারত বানাতে পারেন নি সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav), তিলক বর্মা’রা। ইনিংস শেষ হয় ১৬৮ রানে। যেভাবে ম্যাচে ফিরেছিলো বাংলাদেশ, তাতে অনেকেই আশা করেছিলেন সেয়ানে সেয়ানে টক্করের। কিন্তু পদ্মাপারের দেশের ব্যাটিং হতাশই করলো মধ্যপ্রাচ্যের মাঠে। সইফ হাসান ছাড়া নূন্যতম প্রতিরোধটুকু গড়তে পারলেন না কেউই। কুলদীপ-বরুণদের ঘূর্ণিতে শেষমেশ বাজিমাত ভারতেরই। এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) ম্যাচে তারা জিতলো ৪১ রানের ব্যবধানে।
Read More: শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েও ফাইনালে যেতে পারবে না পাকিস্তান, এই দল হবে পথের কাঁটা !!
বাংলাদেশের আশার আলো কেবল সইফ-

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একেবারেই ছন্দে ছিলেন না জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। ১১.২০ ইকোনমি রেটে রান বিলিয়েছিলেন বিশ্বের সেরা পেসার। আজকের ম্যাচে আবারও নিজেকে প্রমাণ করলেন তিনি। বাংলাদেশ ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই টিম ইন্ডিয়াকে সাফল্য এনে দেন তিনি। বুমরাহ’র শিকার হয়ে ফেরেন ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম। ১ রানের বেশী করতে পারেন নি তিনি। প্রথম উইকেটের পতনের পর কার্যকরী জুটি গড়েছিলেন সইফ হাসান (Saif Hassan) ও পারভেজ হোসেন ইমন। ৪২ রান স্কোরবোর্ডে যোগ করেন তাঁরা। আক্রমণ চালান হার্দিক পান্ডিয়া, বরুণ চক্রবর্তীদের উপরেও। শেষমেশ পার্টনারশিপ ভাঙতে কুলদীপ যাদবের (Kuldeep Yadav) হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক সূর্য। আস্থার দাম দিতে দেরী করেন নি তিনি। সপ্তম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ২১ করে সাজঘরে ফেরেন ইমন। তিনি আউট হওয়ার পরেই ধস নামে বাংলাদেশ ব্যাটিং-এ।
বাংলাদেশের মিডল অর্ডার’ও আজ চূড়ান্ত ব্যর্থ। তাওহিদ হৃদয় ৭ রান করে অক্ষর প্যাটেলকে (Axar Patel) উইকেট উপহার দেন। বাকিরাও কেউ পেরোন নি দশের গণ্ডী। শামিম হোসেন পাটোয়ারি ও মহম্মদ সৈফউদ্দিন’কে আউট করেন বরুণ চক্রবর্তী। যথাক্রমে ০ ও ৪ করেন তাঁরা। ৪-এর বেশী করতে পারেন নি জাকের আলি অনীক’ও। সূর্যকুমারের থ্রোয়ে রান-আউট হন তিনি। দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এসে বাংলাদেশের (India vs Bangladesh Match) জয়ের যাবতীয় স্বপ্ন চুরমার করেন কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav)। আজ তাঁর শিকার হয়েছেন রিশাদ হোসেন (২) ও তানজিম হাসান সাকিব’ও (০)। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চায়নাম্যান স্পিনারের বোলিং পরিসংখ্যান ৪-০-১৫-৩। অপর প্রান্তে একের পর এক উইকেট পড়লেও বুক চিতিয়ে লড়ছিলেন সইফ হাসান (Saif Hassan)। টাইগার ওপেনারকে শেষমেশ ১৮তম ওভারে আউট করেন বুমরাহ। ৫১ বলে ৬৯ রানের লড়াকু ইনিংস খেলেন তিনি।
আত্মসমীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে ভারতের-

ভারত যে জিতছে তা নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিলো ১৫ বা ১৬ ওভারের পর থেকেই। সইফ কতক্ষণ ম্যাচে টাইগারদের জীবিত রাখতে পারেন সেদিকেই তাকিয়ে ছিলেন সকলে। ১৮তম ওভারে তিনি যখন ফেরেন তখন বাংলাদেশের স্কো্র দাঁড়ায় ৯ উইকেটের বিনিময়ে ১১৬। ফলাফল নিশ্চিত জেনে বাকি ওভারগুলিতে পার্ট-টাইমারদের ব্যবহার করলো ভারত। ১৯তম ওভারে ১০ রান খরচ করেন শিবম দুবে। শেষ ওভারে সূর্য বল তুলে দিয়েছিলেন তিলক বর্মা’র (Tilak Varma) হাতে। তাঁর তৃতীয় ডেলিভারিতে মুস্তাফিজুর আউট হতেই দাঁড়ি পড়ে বাংলাদেশের ইনিংসে। ১২৭-এ থামলো তারা। এই ম্যাচকে হয়ত একপেশেই বলবে স্কোরবোর্ড। কিন্তু শুকনো পরিসংখ্যান সরিয়ে দেখলে বোঝা যাবে যে ভারতীয় একাদশের একাধিক সীমাবদ্ধতাও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলো আজ বাংলাদেশ। শুভমান-অভিষেকের ওপেনিং জুটি না চললে প্ল্যান-বি কী হবে? রবিবারের ফাইনালের আগে খুঁজে বার করতে হবে কোচ গম্ভীরকে।