সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে সহজে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে উঠে এলো টিম ইন্ডিয়া। ফাইনালে ভারত মুখোমুখি হতে চলেছে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের। গ্রুপ লিগের দুটি ম্যাচে জয় তুলে নেওয়ার পাশাপাশি সেমিতে দাপুটে জয় ভারতের অধিনায়ক বিরাট কোহলির প্রত্যাশাকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানও গ্রুপের প্রথম ম্যাচে হেরে বাকি তিন ম্যাচে জিতে প্রতিযোগিতার ফাইনালে। আগামী রবিবার ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে গতবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন ভারত। যদিও ওই ম্যাচ নিয়ে বাড়তি কোনও আগ্রহ কিংবা আবেগ ধরা পড়েনি কোহলির গলায়। তবে সেমিতে এতবড় জয় পাওয়ার পর ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভালো পারফরম্যান্স করার ব্যাপারে আশাবাদী ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি।
বৃহস্পতিবারে ম্যাচে টস জিতে ভারত অধিনায়ক কোহলি প্রথম ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তাঁর সে সিদ্ধান্ত কতটা সঠিক ছিল, তা ম্যাচের পরবর্তী সময় পরিস্কার হয়ে যায়। ম্যাচের একেবারে শুরুতে ভারত একটি উইকেট পেয়ে যায়। তার কিছুক্ষণের মধ্যে আরও একটি মূল্যবান উইকেট পেয়ে যায় ভারত। যদিও তৃতীয় উইকেটটি পেতে ভারতীয় বোলারদের প্রায় আরও ২০ ওভার অপেক্ষা করতে হয়। ৭০ রান করে তামিম ইকবাল সাজঘরে ফিরে যাওয়ার পর একমাত্র মুশফিকুর রহিম (৬১) ছাড়া আর কেউই বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট হাতে বড় স্কোর খাড়া করতে পারেননি। যার ফলে দূর্দান্ত গতিতে ঘুরে চলা বাংলাদেশের স্কোর বোর্ড ২৬৪ রানে থেমে পড়ে।
ম্যাচ জয়ের জন্য বাংলাদেশ প্রতিপক্ষ ভারতের সামনে যে লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিল, সেই লক্ষ্যমাত্রায় মাত্র একটা উইকেট হারিয়ে পৌঁছে যায় তারা। রোহিত শর্মার অপরাজিত ১২৩ এবং কোহলির অপরাজিত ৯৬ রানে ভর করে প্রায় ১০ ওভার বাকি থাকতে জয়ের সীমানায় পৌঁছে ২৬৫ রান সংগ্রহ করে ভারত। ব্যাট হাতে তার আগে শিখর ধাওয়ান ৪৬ রানের একটা বিস্ফোরক ইনিংস খেলে মুস্তাফিজুর, তাসকিন, রুবেলদের আত্মবিশ্বাস ভেঙে খান খান করে দেন। প্রতিবেশি দেশ বাংলাদেশকে সেমির লড়াইয়ে ৯ উইকেটে বিধ্বস্ত করার পর কোহলি বললেন,
‘এটা আর একটা সার্বিক জয়। টসে জেতার পর এ ধরনের পরিচ্ছন্ন খেলার প্রয়োজন ছিল। বিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের আমরা প্রথম থেকে ভালো বোলিং করে বেঁধে রেখে ছিলাম। প্রথমে পর পর দুটি উইকেট পেয়ে খেলার মোমেনটাম ফিরে পেয়েছিলাম। কেদার যাদব দলের বাকিদের মতো সত্যি ভালো বল করলো। ও দলের সারপ্রাইজ প্যাকেজ নয়। একজন প্রতিভাবান ব্যাটসম্যান। ও জানতো, পিচে ঠিক কোথায় বল ফেলতে হবে। ওদের স্কোর ৩০০–র কাছাকাছি যেতে পারতো, কিন্তু ও নজরকাড়া বোলিং করে সেটা হতে দেয়নি।’
একটু থেমে কোহলি আরও বলেন,
‘আমি নিজেকে সব সময় একটু বাড়তি সময় দিতে চাই। এ ম্যাচে নিজেকে বেশি সময় দিয়ে মনের মতো খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। যাবতীয় কৃতিত্ব রোহিত শর্মার। একইভাবে দারুণ ব্যাটিং করেছে শিখর ধাওয়ানও। আশা করছি, ফাইনালেও ওরা ভালো খেলে দেবে। যে দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে উত্তেজনা কম এবং ম্যাচের কঠিন সময়ে নার্ভ ধরে রাখতে পারবে, তারাই ফাইনাল জিতবে। আমরা ওভালে ফাইনাল ম্যাচে ভালো খেলার ব্যাপারে আশাবাদি। এটা দলের কাছে কোনও চিন্তার বিষয় নয়, যেখানে দলের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যাট হাতে মাঠে নামতে হচ্ছে না। দলের সবাই নেটে দূর্দান্ত অনুশীলন করেছিল। আর রইলো কথা দর্শকদের, সত্যি ওরা প্রতি ম্যাচে আমাদের হয়ে যেভাবে সমর্থন জানিয়ে গলা ফাটিয়ে যাচ্ছে, তা এক কথায় অসাধারণ।’