শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন অলরাউন্ডার অ্য়াঞ্জেলো ম্য়াথিউজ। তিন ধরণের ফরম্য়াট থেকেই শ্রীলঙ্কা দলের অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্য়াচের একদিনের আন্তর্জাতিক সিরিজে দলের চূড়ান্ত ভরাডুবির পর ঘরে-বাইরে বিস্তর সমালোচনার মুখে পড়ে নৈতিক দায় নিয়ে দলনায়কের পদ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন ম্য়াথিউজ।
গতমাসে ইংল্য়ান্ডে হওয়া চ্য়াম্পিয়ন্স ট্রফিতেও সুবিধা করে উঠতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। প্রতিযোগিতার শুর থেকেই হোঁচট খাওয়া শুরু। চূড়ান্ত নাকানি-চোবানি খাওয়ার পর প্রাথমিক স্টেজ থেকেই বিদায়। অতবড় টুর্নামেন্টে তিনটি ম্য়াচ খেলে মাত্র একটা জয়। ফলে শ্রীলঙ্কার মতো একটা নামজাদা দলের পারফরম্য়ান্স নিয়ে পোস্টমর্টেম হওয়া স্বাভাবিক। আর দলের পারফরম্য়ান্স গ্রাফ নিয়ে সমালোচনা ও প্রশ্ন ঝড় উঠলেই সবার আগে চলে আসে দলনায়কের নাম। নৈতিক দায় বর্তায় তাঁর ওপরেই। চলে ক্য়াপ্টেনের ক্য়াপ্টেন্সি নিয়ে ছেঁড়াকাটা।
চ্য়াম্পিয়ন্স ট্রফিতে চূড়ান্ত ভরাডুবির পর অত্য়ন্ত চাপ নিয়ে জিম্বাবোয়ে সিরিজে খেলতে নামে ম্য়াথিউজের দল। চ্য়াম্পিয়ন্স ট্রফিতে হারটা যে নিছক দলের একটা ব্য়াডপ্য়াচ ছিল, জিম্বাবোয়ে সফরে তা প্রমান করার একটা সুযোগ ছিল। কিন্তু, সেই চাপ সামলাতে না পেরে ভেঙে পড়ে গোটা শ্রীলঙ্কা দল। প্রচণ্ড চাপের মুখে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও শেষ রক্ষা হয়নি। ওয়ান-ডে সিরিজের প্রথম ম্য়াচে ৩১৫ জিম্বাবোয়ের মতো দলের বিরুদ্ধে গুটিয়ে যায় ১৯৯৬-এর বিশ্বচ্য়াম্পিয়নরা। সিরিজের প্রথম ম্য়াচে হেরে পরপর দু-টি ম্য়াচে জিতেও নিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কিন্তু, শেষ দু-টি ম্য়াচে দুর্দান্ত প্রত্য়াবর্তন করে সিরিজ ছিনিয়ে নেয় আফ্রিকার ওই ক্রিকেট খেলিয়ে দেশটি। গ্রান্ট ও অ্য়ান্ডি – ফ্লাওয়ার্স ব্রাদার্স, হিথ স্ট্রিক, অ্য়ালিস্টিয়ার ক্য়াম্পবেলদের জমানা এখন আর নেই। ওরকম জমানা থাকলে শ্রীলঙ্কার হার নিয়ে এতটা ছেঁড়াকাটা হতো না। কিন্তু, বর্তমান জিম্বাবোয়ে টিমের হাল বাংলাদেশের চেয়েও খারাপ। আর সেই টিমের কাছে কি না ২০১১ বিশ্বকোপের সেমিফাইনালিস্টরা হারল।
১০ জুলাই সিরিজ শেষ ম্য়াচটি খোয়ানোর পর অ্য়াঞ্জেলো সংবাদমাধ্য়মকে জানিয়েছিলেন, জাতীয় নির্বাচকদের সঙ্গে তাঁর ভবিষ্য়ৎ নিয়ে কথা বলতে চান। ১১ জুলাই সকোলেই জানিয়ে দেন যে তিনি আর অধিনায়ক থাকতে চান না। তিনি অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। শোনা যাচ্ছে, জিম্বাবোয়ো সিরিজে দলে না থাকা দিনেশ চান্দিমল ম্য়াথিউজের স্থলাভিষক্ত হতে চলেছেন।
মাহেলা জয়বর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারার মতো লেজেন্ডরা খেলো ছাড়ার পর দলে নামজাদা খেলোয়াড় বলতে অ্য়াঞ্জেলোর নামই আগে আসত। ২০১৩ সালে জয়বর্ধনের হাত থেকে মাত্র ২৫ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে শ্রীলঙ্কা দলের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ম্য়াথিউজের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কার উল্লেখযোগ্য় পারফরম্য়ান্স গতবছর ঘরের মাঠে ৩-০ ব্য়বধানে অস্ট্রেলিয়াকে হোয়াইট ওয়াশ করা। চলত বছরে শ্রীলঙ্কার পারফরম্য়ান্স গ্রাফ মোটেই ভালো নয়। চোটের জন্য় ম্য়াথিউজ দলের বাইরে ছিলেন। সেই সময় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক টি-২০ সিরিজ জেতা ছাড়া কোনও উল্লেখযোগ্য় জয় নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ৫-০ ফলে হোয়াইট ওয়াশও হতে হয়। বাংলাদেশের বিরুদ্ধেও টেস্ট, ওয়ান-ডে আর টি-২০ সিরিজেরও ফলাফল ড্র।