পরবর্তী বিশ্বকাপ যত এগিয়ে আসছে, নানান স্বপ্ন একে একে জনসমক্ষে আসছে। অবশ্য় ক্রিকেটার হিসেবে সবাই বিশ্বকাপ খেলার স্বপ্ন দেখেন। বাংলার উইকেটকিপার ঋদ্ধিমান সাহাও সেই একইরকম স্বপ্ন নিজের ভেতরে লালন-পালন করেন। তবে, আশ্চর্যের বিষয় হলো, টেকনিক্য়াল দিক থেকে ঋদ্ধি ভালো হয়েও এতদিন সুযোগ পাননি। মহেন্দ্র সিং ধোনি টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর বিরাট কোহলি নেতা হন। আর তারপর থেকেই ভারতীয় দলে নিজের একটা জায়গা পেয়েছেন ঋদ্ধি। তবে, মনে রাখতে হবে তা কিন্তু টেস্টের আসরে। একদিনের ক্রিকেট তিনি এখনও ধরতব্য়ের মধ্য়ে আসনেনি। ভারতের দু’বারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অধিয়াকত্ব ছাড়লেও টেস্টের মতো অবসর নেননি। এখনও চুটিয়ে খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন। আবার এই বয়সে বিশ্ব রেকর্ড গড়েও চলেছেন কিপার হিসেবে। অনেক লেজেন্ড বলছেন, ধোনি অনায়াসে ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলে দেবেন। ব্য়াটিং না হোক, উইকেটকিপার হিসেবে এই মুহূর্তে ধোনির বিকল্প কেউ নেই। আর এনিয়ে কোনও সন্দেহ নেই, যাঁরা ধোনিকে ভারতীয় দল থেকে তাড়াতে চাইছেন, তাঁরাও বিকল্প হিসেবে ভারতীয় দলে ঋদ্ধিকে দেখতে চান – এমনটাও নয়। ধোনি খেলা ছাড়লে লোকেশ রাহুল, না হলে ঋষভ পন্তকে দিয়ে অধিনায়ক বিরাট কোহলি ও কোচ রবি শাস্ত্রী উইকেটকিপিং করানোর জন্য় তৈরি। এজন্য় এখন থেকেই নানান পরিকল্পনা করা হচ্ছে। অতএব, টেস্ট ক্রিকেট ছাড়া ভারতীয় দলে বাংলার উইকেটকিপারের কোনও সম্ভাবনা নেই বলা চলে।
আগামী চব্বিশে অক্টোবর তেত্রিশ বছরে পা দেবেন ঋদ্ধি। বয়স তাঁর পক্ষে একেবারেই নেই। আর বড়োজোর তিন-চার বছর হয়ত তিনি খেলা চালিয়ে যাবেন। ভালো একজন তরুণ উইকেটকিপার ব্য়াটসম্য়ান পেয়ে গেলে তাঁকে জাতীয় দলে কতদিন সুযোগ দেবেন কোহলি-শাস্ত্রী, তা নিয়েও প্রশ্ন আছে। ওদিকে, বিরাটের বারবার না করে দেওয়া সত্ত্বেও শ্রীলঙ্কা থেকে দেশে ফিরেই কুম্বলে বিতর্কে নিজের মত রেখেছিলেন তিনি। এই অবস্থায় কোনদিকে মোড় নেবে ঋদ্ধির ভবিষ্য়ৎ, তা বলা মুশকিল। তবে, ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়ার স্বপ্ন বত্রিশ বছর বয়সেও দেখে চলেছেন তিনি। শুধু তিনি নন, তাঁর স্ত্রীরও ইচ্ছে, তাঁকে ২০১৯ বিশ্বকাপ খেলতে দেখার। একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্য়মকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ঋদ্ধি বলেছেন, ”আমার স্ত্রীর খুব ইচ্ছে, আমাকে বিশ্বকাপে ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে খেলতে দেখার। ও আমাকে সবসময় এই জন্য় উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছে, যাতে আমি আরও বেশি করে খাটি নিজের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য়। আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে, সবকিছুই নির্বাচকদের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে। আমি সবমসয় একটা লক্ষ্য় নিয়ে চলি, পারফরমেন্স কি করে আরও ভালো করা যায়। এরপর নির্বাচকরা যা করবেন। তবে, শুধুমাত্র ওয়ান-ডে ক্রিকেট খেলার জন্য় আমি পারফর্ম করি এটা ভাববেন না।” বাংলার উইকেটকিপার ব্য়াটসম্য়ানটি এরপর বলেন, ”যাঁরা আমার কিপিং নিয়ে প্রশংসা করেন, তাঁরা জানেন, আমি যা শিখেছি, মাঠে সেটাই করে দেখানোর চেষ্টা করি।”
আগামী রবিবার (সতেরো সেপ্টেম্বর) ভারত-অস্ট্রেলিয়া একদিনের সিরিজ শুরু হতে চলেছে। ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানো খুব শক্ত বলছেন ঋদ্ধি। এই সিরিজেও নির্বাচকরা রোটেশন পলিসি মেনে দল নির্বাচন করেছেন এবং করবেন। সে বিষয়ে ঋদ্ধি বলেন, ”ভারতে এসে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে হারানো খুব কঠিন কাজ। এবারেও আমি ভারতকে এগিয়ে রাখব সিরিজে। ভারতের রিজার্ভ বেঞ্চ খুব শক্তিশালী এখন। ২০১৯ বিশ্বকাপকে লক্ষ্য় করে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। রোটেশন পলিসি মেনে যাকে যাকে খেলানো হচ্ছে, সবাই ভালো পারফর্ম করছে সুযোগ পেলেই। অক্ষর প্য়াটেল, যুজবেন্দ্র চহল ও কুলদীপ যাদবকে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজাকে বিশ্রাম দিয়ে। রিজার্ভ বেঞ্চ শক্তি বাড়ানোই মূল উদ্দেশ্য়। ভবিষ্য়তে এর উপকারীতা পাবে ভারতীয় দল।”
এই ক্রিকেটারের স্ত্রী, ধোনির পরিবর্তে ২০১৯ বিশ্বকাপে, তার স্বামীকে ভারতীয় দলে চান!
