প্রত্য়াশা মতোই নয় টিমকে নিয়ে টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপ ও তেরোটি দেশের ওয়ান-ডে ইন্টারন্য়াশনাল লিগ আয়োজন করতে অনুমোদন দিল ইন্টারন্য়াশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল বোর্ড। গত শুক্রবার (তেরো অক্টোবর) নিউজিল্য়ান্ডের অকল্য়ান্ডে বৈঠকে বসেছিল বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা। সেখানেই বৈঠক শেষে আইসিসি জানিয়ে দেয়, তারা টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপ এবং ওডিআই লিগ আয়োজনে রাজি। পয়েন্ট ব্য়বস্থা ও ক্রীড়াসূচি কিরমভাবে আয়োজন করা হবে, তা নিয়ে ফের আলোচনায় বসবে আইসিসির ক্রিকেট বিষয়ক বোর্ড। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপ শুরু হবে এবং ২০২০ সাল নাগাদ ওডিআই লিগ চালু হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

টি টেস্ট খেলিয়ে দেশ দুবছর ধরে ছটি সিরিজ খেলবে। এর মধ্য়ে তিনটি হোম ও বাকি তিনটি অ্য়াওয়ে সিরিজ। প্রত্য়েক সদস্য় দেশকে অন্তত পক্ষে দুটি টেস্ট খেলতেই হবে দ্বিপাক্ষিক সিরিজে। সবচেয়ে বেশি পাঁচটি টেস্ট খেলতে পারবে কোনও দেশ সংশ্লিষ্ট দেশের বিরুদ্ধে। পাঁচদিনের ফরম্য়াটেই টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপ করানো হবে। সেই সঙ্গে ফাইনাল ম্য়াচও হবে একটা, সবশেষে।

অন্য়দিকে, ওডিআই লিগে অংশগ্রহণ করে সরাসরি কোয়ালিফাই করা যাবে বিশ্বকাপের জন্য়। তখন বিশ্বকাপ তেরোটি দেশকে নিয়ে হবে। বারোটি পূর্ণ সদস্য় এবং ওয়ার্ল্ড ক্রিকেট লিগ চ্য়াম্পিয়নশিপের বিজেতা বিশ্বকাপে অংশ নেবে। এখনও পর্যন্ত যা ঠিক করা হয়েছে, তাতে প্রথম সংস্করণে প্রত্য়েকটি দল চারটি করে হোম ম্য়াচ ও চারটি করে অ্য়াওয়ে সিরিজ খেলবে বারোটি দেশের বিরুদ্ধে। প্রথম সাইকেলে প্রত্য়েকটি সিরিজে তিনটি করে ওয়ান-ডে ম্য়াচ খেলতে হবে। দ্বিতীয় সাইকেল সবকটি দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে খেলবে।

একটি বিবৃতিতে আইসিসির চেয়ারম্য়ান শশাঙ্ক মনোহর জানান, সব সদস্য়কে আমি ধন্য়বাদ জানাতে চাই একটা মতে আসার জন্য এবং এই খেলাকে আরও উন্নত করতে চাওয়ার জন্য়। এবার থেকে দ্বিপাক্ষিক ক্রিকেট নতুন চ্য়ালেঞ্জ নিয়ে আসছে। তবে, এবারই প্রথম একটা স্থির সিদ্ধান্তে আসা গেলো। অর্থাই পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তেই ক্রিকেট ম্য়াচ খেলা হোক না কেন, ক্রীড়াপ্রেমীরা নিশ্চিত হতে পারবেন, ওই ম্য়াচের পয়েন্ট গোনা হচ্ছে। কারণ, ওডিআই লিগে যা পয়েন্ট আসবে, তার ভিত্তিতেই আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপে সংশ্লিষ্ট দেশ কোয়ালিফাই করবে।

আইসিসির মুখ্য় কার্যনির্বাহী অধিকর্তা ডেভ রিচার্ডসন জানিয়েছেন, গত দুবছর ধরে আইসিসির সদস্য় এনিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছিল, যাতে সব ম্য়াচকেই গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা যায়। তিনি আরও বলেন, এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রত্য়েকটা সদস্য় দেশ আন্তর্জাতিক দ্বিপাক্ষিক সিরিজকে কি করে ভবিষ্য়তে আরও প্রানোবন্ত করা যায়, সে নিয়ে ভাবছে। আইসিসি বোর্ড সম্মতি দেওয়ার অর্থ হলো, আমরা এনিয়ে এগোতে পারব এবার। ক্রীড়াসূচি, পয়েন্ট সিস্টেম, আয়োজন করা, প্রতিযোগিতার শর্ত সব তৈরি করতে হবে।

আইসিসি তাদের বিবৃতিতে আরও জানিয়েছে,  ২০১৯ পর্যন্ত চারদিনের টেস্ট ম্য়াচ পরীক্ষামূলক পর্যায়ে খেলানো হবে। দ্বিপাক্ষিক সিরিজেও এধরনের টেস্ট ম্য়াচ খেলা হবে। খেলার ধরন শীঘ্রই চূড়ান্ত করা হবে।

টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপ অবশ্য়ই প্রথাগত নিয়ম মেনে পাঁচদিনেরই হবে। রিচার্ডসন বলছেন, আইসিসি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পরিকাঠামোকে একটা অর্থপূর্ণ রূপ দিতে চায়। বিশেষ করে টেস্ট ক্রিকেটে। সেই জন্য়ই টেস্ট চ্য়াম্পিয়নশিপ। আর ওই লিগ পাঁচদিনের টেস্ট ম্য়াচেই করানো হবে। তবে, টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্য়ত নিয়ে আমরা আগামী দিনেও ভাবনা-চিন্তা করে যাব। এর বিকল্প নিয়েও চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। যেমন দিন-রাতের টেস্ট ম্য়াচ করানো, নতুন প্রযুক্তি সংযোগ করা, ইত্য়াদি। চারদিনের টেস্ট ম্য়াচ সম্পর্কে আইসিসি আধিকর্তা বলেন, চারদিনের টেস্ট ম্য়াচ হলে নতুন টেস্ট খেলিয়ে দেশগুলি উপকৃত হবে। আরও বেশি করে টেস্ট ম্য়াচ খেলানো যাবে। নতুন দলগুলি অভিজ্ঞ টেস্ট খেলিয়ে দেশগুলির সঙ্গে খেলতে পারবে। তাতে, দক্ষতা ও খেলার মান, দুই বাড়বে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *