মহেন্দ্র সিং ধোনি, শচীন তেন্ডুলকর, মহম্মদ আজহারউদ্দিন-ভারতীয় ক্রিকেটারদের বায়োপিক আগেও হয়েছে। তালিকায় এবার যুক্ত হচ্ছে যুবরাজ সিং-এর (Yuvraj Singh) নাম’ও। তারকা অলরাউন্ডারের জীবন বরাবরই ঘাত-প্রতিঘাতে ভরা। মাত্র ১৩ বছর বয়সে পাঞ্জাবের অনুর্দ্ধ-১৬ দলে জায়গা করে নিয়েছিলেন তিনি। সিনিয়র জাতীয় দলের ডাক যখন আসে তখন বয়স মাত্র ১৮। ২০০০ সালে নাইরোবিতে ভয়ঙ্কর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে তরুণ যুবরাজের বুক চিতিয়ে লড়াই করাই বুঝিয়ে দিয়েছিলো যে এক সুপারস্টারকে পেতে চলেছে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। এরপর যত সময় এগিয়েছে, ম্যাচ উইনার হিসেবে ততই নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। যুবরাজের (Yuvraj Singh) কথা উঠলেই ক্রিকেট জনতার মনে ফিরে ফিরে আসবে ২০০২-এর ন্যাটওয়েস্ট ফাইনালের স্মৃতি।
লর্ডসের বাইশ গজে মহম্মদ কাইফের সাথে জুটি বেঁধে ভারতকে ট্রফি এনে দিয়েছিলেন যুবরাজ (Yuvraj Singh) । খেলার দুনিয়ায় যাকে ‘আইকনিক’ বলা যায়, তেমন মুহূর্ত আরও এসেছে যুবরাজের কেরিয়ারে। ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপে স্টুয়ার্ট ব্রডের বিরুদ্ধে তাঁর মারা ছয় ছক্কার স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল ভারতীয় সমর্থকদের মনে। ডারবানে সেদিন ইতিহাস তৈরি করেছিলেন ভারতের জার্সি নম্বর ১২। যুবরাজের (Yuvraj Singh) মানসিক দৃঢ়তা, দেশপ্রেম স্পষ্ট হয়েছিলো ২০১১-এর বিশ্বকাপে। শরীরে বাসা বাঁধা মারণরোগ ক্যান্সারকে তুচ্ছ করে দেশকে বিশ্বসেরা করেছিলেন তিনি। পেয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার। দীর্ঘ রোগভোগের পর মনের জোরে ফের ফিরেছিলেন মাঠে। বাইশ গজকে বিদায় জানান ২০১৯ সালে, মাথা উঁচু রেখেই। ঘাত-প্রতিঘাত, চড়াই-উতরাইয়ের মধ্যে দিয়ে তাঁর মহাতারকা হয়ে ওঠার গল্পই দেখা যাবে বায়োপিকে।
Read More: KKR-কে টেক্কা দিতে মোক্ষম চাল GT-LSG’র, এই বিশ্বজয়ী তারকাদের করছে দলে সামিল !!
‘উদ্বুদ্ধ’ করুক বায়োপিক, চান যুবরাজ-
ভ্যারাইটি’তে প্রকাশিত এক রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে যুবরাজ সিং-এর (Yuvraj Singh) জীবনের উপর তৈরি হতে চলেছে চলচ্চিত্র। এই বায়োপিকের জন্য জুটি বাঁধছেন টি-সিরিজের ভূষণ কুমার ও ২০০ নট আউট ফিল্মসের রবি ভাগচান্দকা (Ravi Bhagchandka)। এখনও পর্যন্ত প্রাথমিক স্তরের কথাবার্তাই হয়েছে। যুবরাজের ভূমিকায় কাকে দেখা যাবে, অন্যান্য চরিত্রে কারা অভিনয় করছেন অথবা পরিচালকই বা কে হচ্ছেন, তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি। এই চলচ্চিত্রটি নিয়ে আশাবাদী প্রয়োজক ভূষণ কুমার। টি-সিরিজের কর্ণধার জানিয়েছেন, “যুবরাজের জীবনটা অধ্যবসায়, সাফল্য ও প্যাশনের একটা দুর্দান্ত দলিল। একজন প্রতিভাবান তরুণ থেকে, একজন ক্রিকেটীয় নায়ক, সেখান থেকে বাস্তব জীবনের নায়ক হয়ে ওঠার যাত্রাপথটা অনুপ্রাণিত করে। ওর গল্পটা বড় পর্দায় বলতে পেরে আমি আপ্লুত।”
আরেক প্রযোজক রবি ভাগচান্দকা জানিয়েছেন, “ওর (যুবরাজ) সাথে বন্ধুত্ব অনেক দিনের। আমি সম্মানিত বোধ করছি যে ও ওর ক্রিকেটীয় যাত্রাপথটা চলচ্চিত্রের ভাষায় ফুটিয়ে তোলার ভার আমাদের উপর ন্যস্ত করেছে। যুবি কেবল একজন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নন। সব অর্থেই একজন প্রকৃত কিংবদন্তি।” খুশি যুবরাজ (Yuvraj Singh) স্বয়ং। প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমি সম্মানিত বোধ করছি যে আমার জীবনের গল্পটা বিশ্বব্যপী আমার লাখ লাখ অনুরাগী দেখতে পারেন ভূষণ জি ও রবি’র সৌজন্যে। জীবনের ওঠাপড়ায় ক্রিকেটই আমার শ্রেষ্ঠ প্রেম হয়ে থেকেছে। আমি আশা রাখছি যে এই চলচ্চিত্রটি অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে নিজেদের জীবনের চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা করার। প্যাশনকে জিইয়ে রেখে নিজের স্বপ্নগুলোকে তাড়া করার।”