WTC Final: আজ থেকে শুরু হয়েছে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনাল। দক্ষিণ লন্ডনের কেনিংটন ওভালে মুখোমুখি ভারত এবং অস্ট্রেলিয়া। লাল বলের বিশ্বখেতাব নিজেদের ঝুলিতে পুরতে মুখিয়ে দুই দলই। ভারতের টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আগে রয়েছে। ২০২১ সালে ইংল্যান্ডেরই সাউদাম্পটনের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলো ভারতীয় দল। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ‘টিম ইন্ডিয়া’কে হারিয়ে সেই যাত্রায় ট্রফি নিজেদের নামে করে নিয়েছিলো কিউইরা। দ্বিতীয় সুযোগে জয় ছাড়া কিছু ভাবনা নেই রোহিত শর্মাদের মাথায়। অন্যদিকে ক্রিকেটবিশ্বের সফলতম দল অস্ট্রেলিয়া প্রথম সুযোগেই বাজিমাত করার অপেক্ষায়। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আশায় সমর্থকেরা ভীড় জমিয়েছেন ওভালের গ্যালারিতে।
চোট-আঘাতের সমস্যার কারণে একাধিক তারকা ক্রিকেটারকে পায় নি ভারতীয় দল। তাও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ‘মেন ইন ব্লু’ শিবির। গত ফাইনালের মত দুই স্পিনার খেলানোর স্ট্র্যাটেজির পুনরাবৃত্তি করে নি তাঁর। রবিচন্দ্রণ অশ্বিনকে বাইরে রেখে চার জন পেসারকে সঙ্গী করে মাঠে নেমেছে আজ। মহম্মদ শামি, সিরাজ ও উমেশ যাদবের সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে ভারতীয় পেস আক্রমণে। টসে জিতে মেঘলা আবহাওয়াকে মাথায় রেখে বোলিং বেছে নিয়েছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। হিটম্যানের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে বিশেষ সময় নেন নি মহম্মদ সিরাজ। দুর্দান্ত আউটস্যুইং-এ ফিরিয়েছেন উসমান খোয়াজাকে। প্রথম শিকার সিরাজের ঝুলিতে জমা পড়ার পর যেভাবে উদযাপনে মাতলেন বিরাট কোহলি, ধারাভাষ্যের মাইক হাতে তাঁর মানসিকতার তারিফ করা থেকে বিরত থাকতে পারলেন না সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
Read More: WTC Final: টেস্টের বিশ্বযুদ্ধে হাতে কালো ব্যান্ড বেঁধে মাঠে দুই দল, কারণ জানলে দুই চোখ ভরবে জলে !!
আগ্রাসী কোহলিতে মুগ্ধ মহারাজ-
বিরাট কোহলি এবং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়-ভারতীয় ক্রিকেটের দুই সফল অধিনায়কের মধ্যে সম্পর্কের শৈত্য যে রয়েছে তা জানেন সকলেই। সৌরভ বোর্ড প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় বিরাট কোহলিকে। বিষয়টি মেনে নিতে পারেন নি তিনি। কোহলি সরাসরি প্রেস কনফারেন্স করে আঙুল তোলেন সৌরভের দিকেই। তারপর বেশ কিছু সময় কেটে গেলেও বরফ যে গলে নি তা বোঝা গিয়েছিলো এই বছরের আইপিএল চলাকালীন। দিল্লী ক্যাপিটালসের ‘ডায়রেক্টর অফ ক্রিকেট’ হিসেবে ডাগ-আউটে বসেছিলেন সৌরভ। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু তারকা বিরাটকে দেখা যায় তাঁর দিকে কড়া চোখে তাকাতে। এমনকি ম্যাচ শেষে দুজনে প্রথামাফিক হাতও মেলান নি। মনস্তাত্বিক যুদ্ধে একে অন্যকে সূচাগ্র মেদিনী যে তাঁরা ছাড়বেন না তা বুঝিয়েছিলেন দুই কিংবদন্তীই।
আইপিএলের পর জাতীয় দলের দায়িত্বে ফিরেছেন কোহলি। আর দিল্লী ক্যাপিটালস সংসার থেকে বিরতি নিয়ে ধারাভাষ্যকার হিসেবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের সাথে যুক্ত হয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বাংলার মহারাজ নিজে ক্রিকেটজীবনে বরাবর আগ্রাসী ছিলেন। ধারাভাষ্যের মাইক হাতেও আগ্রাসনের পক্ষেই সওয়াল করলেন তিনি। মহম্মদ সিরাজের বল উসমান খোয়াজার ব্যাটের কোণা ছুঁয়ে জমা পড়ে উইকেটরক্ষকের হাতে। আম্পায়ার সিরাজের আপিলের জবাবে আঙুল তুললেই স্লিপে দাঁড়ানো কোহলিকে দেখা যায় উৎসবে মাততে। তিনি সোজা ছুটে যান সিরাজের দিকে। আলিঙ্গনে আবদ্ধ করেন তাঁকে। বিরাটের শরীরী ভাষা থেকে আগ্রাসন ফুটে বেরোতে দেখে মাইক হাতে সৌরভ বলেন, ‘এটাই বিরাট কোহলি। অধিনায়ক থাকুন বা না থাকুন, একই মানসিকতা নিয়ে উনি মাঠে নামেন।” সম্পর্কের জটিলতার কথা মন থেকে মুছে ফেলে ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা তারকার প্রশংসায় মাতলেন সৌরভ।