WPL 2024: উইমেন্স প্রিমিয়ার লীগের (WPL 2024) দিল্লী পর্বে আজ মুখোমুখি হয়েছিলো গুজরাত জায়ান্টস ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। চলতি টুর্নামেন্টে এর আগেও সম্মুখসমরে নেমেছিলো দুই শিবির। সেবার জয় পেয়েছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। চিন্নাস্বামীর ফলাফল বদলে গেলো দিল্লীর অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করে জয় ছিনিয়ে নিলো গুজরাত জায়ান্টস। এর আগে টুর্নামেন্টে ৪টি ম্যাচ খেলে একটিতেও জয় পায় নি বেথ মুনি’র দল। লীগ তালিকায় ঠাঁই হয়েছিলো সবার নীচে। আজ অবশেষে পয়েন্টের খাতা খুললো তারা। প্লে-অফের আশা বেশ ক্ষীণ গুজরাতের জন্য। তা সত্ত্বেও দ্বিতীয় মরসুমের প্রথম জয় বাকি ম্যাচগুলির আগে নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস যোগাবে তাদের।
Also Read: IPL 2024: আসন্ন মরসুমে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জন্য ‘ভিলেন’ হয়ে উঠতে পারেন এই তিন ক্রিকেটার !!
ওপেনিং জুটির দাপটে রানের পাহাড়ে গুজরাত-

চলতি মরসুমে বারবার ব্যাটিং ব্যর্থতা পরাজয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছিলো গুজরাত জায়ান্টসের জন্য। গোটা বেঙ্গালুরু পর্ব জুড়ে বড় রান তুলতে ব্যর্থ হয়েছিলো তারা। দিল্লীর মাঠে সেই সমস্যা কাটিয়ে ওঠার ইঙ্গিত দিলো বেথ মুনি’র দল। অস্ট্রেলীয় মুনি’র সাথে আজ ওপেন করতে মাঠে নেমেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকার লরা উলভার্ট। দুজনের জুটি ঝড়ের বেগে এগিয়ে নিয়ে যায় গুজরাত জায়ান্টস স্কোরবোর্ডকে। রেণুকা ঠাকুর সিং, এলিস পেরী, আশা শোভনা-উইকেট তুলতে হিমশিম খেতে হলো সকলকেই। প্রথম উইকেট খোয়ানোর আগেই ১৩ ওভারে ১৪০ রান তুলে ফেলেছিলো গুজরাত। যা আজ জয়ের ভিত গড়ে দিলো তাদের। ১৩টি চারের সাহায্যে ৪৫ বলে ৭৬ রান করে ফেরেন উলভার্ট। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে রান-আউটের শিকার হন তিনি।
ওপেনিং পার্টনারকে খোয়ানোর পরেও ইনিংসকে এগিয়ে নিয়ে যান অধিনায়ক মুনি। গত ম্যাচগুলির ব্যর্থতা কাটিয়ে আজ তাঁর ব্যাট থেকেও আসে চমৎকার ৫১ বলে ৮৫ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস। ১২টি চার ও ১ টি ছক্কা হাঁকান তিনি। দুই ওপেনার ফেরার পর অবশ্য বল হাতে ঘুরে দাঁড়ায় বেঙ্গালুরু। তিনে নামা ফিবি লিচফিল্ড ১৭ বলে করেন ১৮ রান। অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার অ্যাশলি গার্ডনার ০ রান করে ফিরে যান সাজঘরে। দয়ালন হেমলতা ও বেদা কৃষ্ণমূর্তি আউট হন ১ রান করে। ১ রানেই অপরাজিত থাকেন ক্যাথরিন ব্রাইস। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ১টি করে উইকেট নেন জর্জিয়া ওয়্যারহ্যাম ও সোফি মোলিনে। তিনটি রান-আউট দেখা যায় গুজরাত ইনিংসে। নির্ধারিত ২০ ওভারে তারা তোলে ৫ উইকেটের বিনিময়ে ১৯৯ রান।
মরসুমে তৃতীয় হারের সম্মুখীন বেঙ্গালুরু-

২০০ রানের বিরাট লক্ষ্য সামনে রেখে মাঠে নেমেছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। গত ম্যাচের ব্যাটিং পারফর্ম্যান্স আত্মবিশ্বাস যুগিয়েছিলো তাদের। প্রথম দুই ওভারে বিশেষ রান ওঠে নি। তবে এরপর মারমুখী হয়ে উঠেছিলেন স্মৃতি মন্ধানা। আশা জাগিয়েও ইনিংসকে আজ দীর্ঘায়িত অবশ্য করতে পারেন নি কমলা টুপি’র মালিক। ১৬ বলে ২৪ রান করেই ফিরতে হয় সাজঘরে। ওপেনিং করতে নামা সাব্বিনেনি মেঘনাও রান পান নি আজ। ১৩ বলে ৪ রানের মন্থর ইনিংস খেলে রান-আউট হন তিনি। বেঙ্গালুরুর দুই বিদেশী তারকা এলিস পেরী ও সোফি ডিভাইন খানিকক্ষণ ইনিংসের হাল ধরেন ঠিকই। কিন্তু পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে যথেষ্ট হয় নি তা। পেরী ২৪ ও সোফি ২৩ রানে ফেরেন সাজঘরে।
ঝোড়ো ইনিংস খেলার দায়িত্ব আজও চেপেছিলো বাংলার রিচা ঘোষের কাঁধে। চেষ্টাও চালান তিনি। কিন্তু একা কুম্ভ হয়ে দলকে জয় এনে দিতে সক্ষম হলেন না তিনি। ২১ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৩১ রান করেই থামতে হয় তাঁকে। রিচা ফেরার পরেই বেঙ্গালুরুর জয়ের আশা নিভে গিয়েছিলো একপ্রকার। এরপর ধুন্ধুমার ২২ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলেন জর্জিয়া ওয়্যারহ্যাম। কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গিয়েছে। শেষমেশ নির্ধারিত ২০ ওভারে বেঙ্গালুরুকে থামতে হয় ৮ উইকেটের বিনিময়ে ১৮০ রানে। ঘরের মাঠ চিন্নাস্বামীতে ৫ ম্যাচে তিন জয় ও দুই হারের পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের জায়গা হয়েছিলো লীগ তালিকার দ্বিতীয় স্থানে। আজ ১৯ রানের ব্যবধানে হারলেও আপাতত নিজেদের অবস্থান অপরিবর্তিত রাখতে পেরেছে তারা। ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে মুম্বই ও ইউ পি। চাপ বাড়লো স্মৃতি মন্ধানাদের জন্য।