World Cup 2023: বেজে গিয়েছে বিশ্বকাপের দামামা। ভারতের মাটিতে বসবে ক্রিকেট দুনিয়ার ‘গ্রেটেস্ট শো।’ এর মধ্যেই সম্পূর্ণ ক্রীড়াসূচী প্রকাশ করেছে আইসিসি। আগামী ৫ অক্টোবর ইংল্যান্ড বনাম নিউজিল্যান্ড ম্যাচ দিয়ে সূচনা হবে বিশ্বকাপের (ICC World Cup 2023)। প্রতিযোগিতা চলবে ১৯ নভেম্বর অবধি। মোট ৪৮ দিনে ৪৬টি ম্যাচ খেলা হবে এবারের বিশ্বকাপে। টুর্নামেন্টের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে ১০টি শহরকে। তালিকায় রয়েছে আহমেদাবাদ, কলকাতা, মুম্বই, দিল্লী, বেঙ্গালুরু, পুণে, হায়দ্রাবাদ এবং লক্ষ্ণৌ। বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ এবং ফাইনাল হবে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে। ভারত বনাম পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়ার মত হাইভোল্টেজ ম্যাচও আয়োজনের দায়িত্ব পেয়েছে আহমেদাবাদই। এছাড়াও দুটি সেমিফাইনাল আয়োজিত হবে কলকাতা এবং মুম্বইতে। আয়োজক ভেন্যুগুলির মধ্যে কেবল হায়দ্রাবাদ ভারতীয় দলের কোনো ম্যাচ পায় নি।
এবারের বিশ্বকাপে (ICC World Cup) অংশ নেবে দশটি দল। এর মধ্যে আটটি দল ইতিমধ্যেই যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছে বিশ্বসেরা হওয়ার দৌড়ে নামার। ভারতের মাটিতে টিম ইন্ডিয়া ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান এবং পাকিস্তানের আসা মোটামুটি নিশ্চিত। বাকি দুই দল কারা হয় তা ঠিক হবে যোগ্যতা অর্জনকারী টুর্নামেন্টের মাধ্যমে। জিম্বাবুয়ের মাঠে বর্তমানে চলছে সেই প্রতিযোগিতা। লাগাতার খারাপ পারফর্ম্যান্স করে ছিটকে গিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দুইবারের বিশ্বকাপ জয়ী দল প্রথমবার একদিনের বিশ্বকাপে অংশ নিতে পারবে না। ২০২২ সালের টি-২০ বিশ্বকাপেও যোগ্যতা অর্জন পর্ব থেকে ছিটকে গিয়েছিলো তারা। এবার আরও লজ্জার অন্ধকারে ঢাকলেন নিকোলাস পুরান (Nicholas Pooran), জেসন হোল্ডাররা (Jason Holder)। উইন্ডিজের পাশাপাশি আরেক প্রাক্তন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কার ভাগ্যও ঝুলে রয়েছে সূক্ষ্ম সুতোয়। পারফর্ম্যান্সে কিছু ভুলচুক হলেই বাদ পড়তে হবে তাদেরও।
Read More: ‘ভাগ বেহেন&%##…’ কোহলির সঙ্গে শত্রুতা ভুলতে রাজি নন নবীন-উল-হক, বিরাটকে গালি দেওয়ার ভিডিও ভাইরাল !!
বিশ্বকাপের জায়গা হলো না উইন্ডিজের-
সত্তর-আশির দশকে উইন্ডিজ ক্রিকেটাররা প্রতিপক্ষের মনে ত্রাসের সঞ্চার করতে পারতেন। ভিভিয়ান রিচার্ডস (Sir Vivian Richards), জোয়েল গার্নার, ম্যালকম মার্শালদের (Malcolm Marshall) মত তারদের নিয়ে গড়া দল বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে গিয়ে জয় ছিনিয়ে নিয়ে আসার ক্ষমতা রাখতেই। বর্তমান উইন্ডিজ দল যেন কয়েক দশক আগের দলের ছায়ামাত্র। ২০২২-এর টি-২০ বিশ্বকাপের (ICC World Cup) যোগ্যতা অর্জন করতে পারে নি তারা। ২০২৩-এর একদিনের বিশ্বকাপের মূলপর্বেও ঠাঁই হলো না তাদের। জিম্বাবুয়ের মাটিতে যোগ্যতা অর্জন পর্বের শুরুটা ভালোই করেছিলো তারা। প্রথম ম্যাচে তারা হারিয়েছিলো আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রকে। প্রথমে ব্যাট করে ২৯৭ রান করে তারা। জবাবে আমেরিকার ইনিংস শেষ হয় ২৫৮ রানে।
দ্বিতীয় ম্যাচেও অব্যাহত ছিলো জেসন হোল্ডারদের (Jason Holder) জয়যাত্রা। নেপালকে ১০১ রানে হারিয়েছিলো তারা। উইন্ডিজের তোলা ৩৩৯ রানের জবাবে নেপালের ইনিংস শেষ হয় ২৩৮ রানে। টানা দুই ম্যাচ জিতলেও ছন্দপতন হয় তৃতীয় ম্যাচে। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ৩৫ রানে হারে উইন্ডিজ। এরপর আর ছন্দে ফিরতে পারেন নি কাইল মেয়ার্স (Kyle Mayers), জেসন হোল্ডাররা (Jason Holder)। নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে সুপার ওভারে শোচনীয় পরাজয়ের পর ক্ষীণ আশা বেঁচেছিলো তাদের। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ৭ উইকেটে হেরে সেই আশার প্রদীপটুকুও নিভিয়ে ফেললেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটাররা। ১৯৭৫, ১৯৭৯ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা ফিরছে খালি হাতেই।
সমস্যায় পড়তে পারে শ্রীলঙ্কাও-
যোগ্যতা অর্জন পর্বের দশ দলকে দুটি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছিলো। A এবং B গ্রুপের শীর্ষ তিনটি করে দলে নিয়ে বর্তমানে খেলা হচ্ছে সুপার সিক্স পর্ব। শিখরে থাকা দুই দল সরাসরি জায়গা করে নেবে বিশ্বকাপের মূলপর্ব। সুপার সিক্সে প্রতিটি দল খেলবে পাঁচটি করে ম্যাচ। আপাতত ৩ ম্যাচের পর প্রথম দুই স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে। তিন ম্যাচের প্রতিটিতেই জিতেছে তারা। নেট রান রেটের হিসেবে এখনও অবধি এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা। তাদের নেট রান-রেট ১.৮৩২। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জিম্বাবুয়ের নেট রান-রেট বর্তমানে ০.৭৫২। আজ অর্থাৎ রবিবার রয়েছে জিম্বাবুয়ে বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচ। ঘরের মাঠে যদি আজ জয় পান শেভ্রন’রা তাহলে বিশ্বকাপের মূলপর্বে ওঠা মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে যাবে তাদের। তবে কপাল পুড়তে পারে শ্রীলঙ্কার।
শ্রীলঙ্কা যদি আজ জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে হারে তাহলে সমস্যা বাড়বে তাদের। শেষ ম্যাচে তাদের মুখোমুখি হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বিদায় নেওয়ার আগে মরিয়া নিকোলাস পুরান, কাইল মেয়ার্সরা যদি তাদের হারিয়ে দেয় তাহলে হাসারাঙ্গা (Wanindu Hasaranga), শানাকাদের (Dasun Shanaka) বিশ্বকাপ সম্ভাবনার সামনে উঠে যাবে প্রশ্নচিহ্ন। তৃতীয় স্থানে থাকা স্কটল্যান্ড ইতিমধ্যেই উইন্ডিজকে হারিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে যে ‘জায়ান্ট কিলার’ হয়ে ওঠার ক্ষমতা রয়েছে তাদের। বর্তমানে ৩ ম্যাচ খেলে তারা জিতেছে ২টি, হার একটিতে। যদি জিম্বাবুয়েকে বড় ব্যবধানে হারায় তারা, তাহলে বিদায় নিতে হবে শ্রীলঙ্কাকে।